সিলেটটুডে ডেস্ক

২৪ জুলাই, ২০১৭ ১৬:০১

সিদ্দিকুরের পাশে ওবায়দুল, প্রয়োজনে বিদেশ পাঠানোর ঘোষণা

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমানের চোখের চিকিৎসায় প্রয়োজনে তাকে বিদেশে পাঠানো হবে।

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সিদ্দিকুরকে দেখার পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি সোমবার (২৪ জুলাই) বেলা আড়াইটার দিকে ওই হাসপাতালে যান।

পরে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে সিদ্দিকুরের চিকিৎসার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সিদ্দিকুরের চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে প্রধানমন্ত্রী তাকে পাঠিয়েছেন।

সেতুমন্ত্রী বলেন, সিদ্দিকুরকে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানো হবে।

রুটিনসহ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার দাবিতে শাহবাগে অবস্থান নিতে গিয়ে পুলিশের ‘কাঁদানে গ্যাসের শেলে’ দুই চোখে আঘাত পান সিদ্দিকুর।

সোমবার দুপুরের দিকে চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ইফতেখার মো. মুনির জানান, বাঁ চোখের এক পাশ থেকে আলো দেখছেন সিদ্দিকুর রহমান। তবে তার ডান চোখের অবস্থা আগের মতোই আছে। এই চোখে তিনি কোনো আলো দেখছেন না। গত শনিবার একই হাসপাতালে সিদ্দিকুরের দুই চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়। আজ সকালে তার চোখের সবশেষ অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন চিকিৎসকেরা।

সিদ্দিকুর স্নাতক শেষে সরকারি চাকরির জন্য বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। রুটিনসহ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়া রাজধানীর সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছিলেন সিদ্দিকুর রহমান। পুলিশের ‘কাঁদানে গ্যাসের শেলের’ আঘাত লাগে তার দুই চোখে। একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, পুলিশের একজন সদস্য দৌড়ে এসে খুব কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ছেন। তার পরপরই মাটিতে পড়ে যান সিদ্দিকুর। রাস্তার ওই স্থানটি রক্তে লাল হয়ে যায়। চিকিৎসকেরা বলেছেন, ‘সিদ্দিকুরের দৃষ্টি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা কম।’

ময়মনসিংহের তারাকান্দার ঢাকেরকান্দা গ্রামে সিদ্দিকুর রহমানের বাড়ি। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছোট। বয়স যখন মাত্র তিন বছর, তখন বাবা মারা যান। মা সুলেমা খাতুন কিষানির কাজ করে লেখাপড়া করান সিদ্দিকুর ও আর তার বড় ভাইকে। মাধ্যমিক পাস করার পর পড়ালেখা ছেড়ে দেন বড় ভাই নায়েব আলী। হাল ধরেন সংসারের। রডমিস্ত্রির কাজ করে সিদ্দিকুরের পড়ালেখার খরচ জোগাতে থাকেন।

সিদ্দিকুর তিতুমীর কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। খিলক্ষেতের একটি মেসে থাকেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত