সিলেটটুডে ডেস্ক

৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ২১:১৪

ফারাক্কা বাঁধের লকগেট খুলে দিল ভারত

পুরনো ছবি

ভারতের উত্তর প্রদেশ ও বিহার রাজ্যে প্রবল বর্ষণের ফলে গঙ্গা নদীতে পানি প্রবাহ বেড়ে গেছে। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে বিহারের রাজধানী পাটনাসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে রাজ্যে কমপক্ষে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ফারাক্কা বাঁধের সবক’টি লকগেট একসঙ্গে খুলে দিয়েছে ভারত। খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজের।

সংবাদমাধ্যমটিতে জানানো হয়, সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ফারাক্কা বাঁধের ১১৯টি লকগেট খুলে দিয়েছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ। গেট খুলে দেয়ায় নদীর ভাটিতে প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ ও লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদ জেলায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

উল্লেখ্য গত ক’দিনের টানা তীব্র বর্ষণে গঙ্গা ছাড়াও পানি বেড়েছে মালদহ জেলার ফুলহর, মহানন্দা ও কালিন্দী নদীতে। গঙ্গা ও ফুলহর নদী চরম বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। একাধিক জায়গার বাঁধ ভেঙে দেশটির বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বর্ষণের ফলে সৃষ্ট বন্যায় দেশটির বিহার ও উত্তর প্রদেশের ১৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইতিমধ্যে সেখানে সব স্কুল বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়েছে।

জেলার বহু এলাকা বুকসমান পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। উদ্ধারকারী নৌকা দিয়ে পানিবন্দি লোকজনকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। তাদের উদ্ধারে পৌরসভার ক্রেনও ব্যবহার করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানিবিহীন অবস্থায় অনেক লোক তাদের বাড়িঘরে আটকা পড়ে আছে।

রোববার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, মনে হচ্ছে আবহাওয়া বিভাগও খেই হারিয়ে ফেলেছে। একেক সময় একেক পূর্বাভাস দিচ্ছে। বিহারের প্রতিবেশী রাজ্য উত্তরপ্রদেশে টানা প্রবল বর্ষণে দেখা দেয়া বন্যা ও অন্যান্য ঘটনায় গত কয়েক দিনে অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে, ফারাক্কা বাঁধের সবকটি লকগেট খুলে দেওয়ায় পর বাংলাদেশের রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকার পদ্মা নদীতে হুট করে পানি প্রবাহ বেড়ে গেছে। এর ফলে নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। তবে এ ঘটনায় আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নাই বলে জানিয়েছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার।

একটি অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে আলাপকালে সচিব এমন মন্তব্য করেন।

কবির বিন আনোয়ার জানান, প্রতিবছরই জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়কালে ফারাক্কার স্লুইসগেটগুলো খুলে দেয় ভারত। এটি নতুন কিছু নয়। একইভাবে বাংলাদেশও এই সময় তিস্তা ব্যারেজের সব গেট খুলে রাখে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে আবার গেটগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, যে পানি আসছে তা সেখানে অতিবৃষ্টির ফলে নেমে আসা অতিরিক্ত পানি। এ পানি ধারণ করার সক্ষমতা বাংলাদেশের রয়েছে। তাই এতে বন্যার কোনও সম্ভাবনা নাই। এতে আতঙ্কিত হওয়ারও কিছু নাই। কাজেই এ কারণে কোনও বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের মতো কোনও পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি বলেও জানান তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত