সিলেটটুডে ডেস্ক

১০ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ০০:১৪

কেউ ‘বাড়াবাড়ি’ মনে করলেও মুজিববর্ষ উদযাপন দরকার ছিল: জাফর ইকবাল

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনকে অনেকে ‘বাড়াবাড়ি’ মনে করলেও এই উদযাপন খুব দরকার ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রিয় লেখক ও শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

মুজিববর্ষে শিল্পী, সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা নিয়ে রোববার বিকালে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

সভায় জাফর ইকবাল বলেন, আমরা এখন মুজিববর্ষ পালন করছি। বিভিন্ন মানুষজনের সাথে কথা বললে অনেক সময় হাল্কাভাবে বোঝা যায়, যেভাবে এই মুজিববর্ষ পালন করা হচ্ছে অনেকের কাছে যেন মনে হয়, সেটা অনেক বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে- এটা আমি টের পাই অনেকের কথা-বার্তা দেখলে। কিন্তু আমি মনে করি যে, এটার খুব প্রয়োজন ছিল। আমরা যেভাবে পালন করছি তার থেকে আরও বেশি করে পালন করতে হবে।

অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে ছিয়ানব্বই পর্যন্ত টেলিভিশনে কোনো দিন বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারিত হয়নি। কাজেই বাংলাদেশের মাটিতে যদি এইটা হতে পারে। যে মানুষটা আমাদের জাতির পিতা, আমাদের বাংলাদেশটা উপহার দিয়েছে, সেই মানুষটাকে পুরোপুরি সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে এবং মানুষ বঙ্গবন্ধুকে চিনতে পারে না। সেই দেশে এই ধরনের ঘটনার ভবিষ্যতে যেন কখনও পুনরাবৃত্তি ঘটতে না পারে সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদের।

তিনি বলেন, সেজন্য বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যদি আমরা মুজিববর্ষ পালন করি এবং সেখানে যদি আমরা নানাভাবে আমাদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করি, নানাভাবে যদি বাড়াবাড়ি করি আমি মনে করি কোনো ত্রুটি হবে না, কোনো ভুল হবে না। আমাদের এটা করতেই হবে।

বক্তব্যে জাতীয় সংগীতের বিকৃতি নিয়ে খেদ প্রকাশ করে অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, আমার সোনার বাংলা গানটি বঙ্গবন্ধুর খুব প্রিয় ছিল, যেটা আমাদের জাতীয় সঙ্গীত। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে এখন যখন গানটা শুনি তখন আতঙ্কে থাকি যে, গানের লিরিক ঠিকভাবে গাওয়া হবে কি না। প্রায়ই এই গানের পেছনে বা সামনে একটা বাড়তি জিনিস জুড়ে দেওয়া হয়। জাতীয় সংগীতের লিরিক ঠিকভাবে গাওয়া হবে না, এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের বুদ্ধিজীবী ও শিল্পীরা মুজিব বর্ষে জাতীয় সঙ্গীত যাতে ঠিকভাবে গাওয়া হয় সেটা নিশ্চিতে কাজ করতে পারে।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই সংস্কৃতিকর্মীদের রাজনৈতিক আন্দোলনের পাশাপাশি বিপুল পরিসরে কাজের কথা উল্লেখ করেন। সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। আলোচনায় অংশ নেন ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর সেক্যুলার বাংলাদেশ, ফিনল্যান্ডের আহ্বায়ক মুজিবুর দফতরি, টুয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি ফোরাম ফর হিউম্যানিজম, তুরস্কের সাধারণ সম্পাদক শাকিল রেজা ইফতি। স্মারক বক্তৃতা রাখেন নাট্য নির্দেশক ও গ্রাম থিয়েটারের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ। সভাপতিত্ব করেন নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত