সিলেটটুডে ডেস্ক

০৭ মার্চ, ২০২০ ২১:৫৯

মুজিববর্ষে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী

মুজিববর্ষে বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন এবং ভূমিহীন থাকবেনা বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিটি গ্রামে কতজন মানুষ গৃহহীন বা ভূমিহীন আছেন দলের নেতাকর্মীদের তা খোঁজ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'তাদের সবাইকে আমরা ঘর দিয়ে যেতে চাই। আপনারা নিজেদের পক্ষ থেকে না দিতে পারলে আমি দেব।'

শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি, চিকিৎসা সেবা সবার দোরগোড়ায় নিয়ে গিয়েছি, শিক্ষা নিশ্চিত করেছি। মুজিব বর্ষে একটা মানুষও গৃহহীন থাকবে এটা হতে পারে না। গৃহহীনদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া গুচ্ছগ্রাম, আশ্রয়ণ, দূর্যোগপ্রবণ এলাকায় সহনশীল গৃহ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে।

গৃহহীন মানুষদের জন্য দলের প্রতিটি নেতাকর্মীরও দায়িত্ব আছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'ধরে নেন আপনাদের কাছে আমার একটাই দাবি। আপনারা আপনাদের সামর্থমতো মানুষের জন্য কাজ করুন। খোঁজ নেন গৃহহীনদের। আপনারা যদি তাদের জন্য ঘর করে দিতে না পারেন আমি সরকারের পক্ষ থেকে দেব, ট্রাস্টের পক্ষ থেকে দেব। তারপরও একটি মানুষকে গৃহহীন থাকতে দেব না।'

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান দেশের মানুষকে শুধু স্বাধীনতা উপহার দেননি, তাদের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে চেয়েছেন। স্বাধীনতার পর সংবিধানে মৌলিক অধিকারগুলো যুক্ত করে তা বাস্তবায়নে কাজ করেছেন। সাধারন মানুষকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন মুজিব বর্ষে বাস্তবায়ন করতে হবে।–বলেন প্রধানমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ভাষণের প্রতিটি লাইন একেকটি কোটেশনের মতো। এই ভাষণে বাংলাদেশের সব মানুষ ও দলের নীতিনির্ধারকদের নির্দেশনা দিয়ে গিয়েছেন। তার নির্দেশনার আলোকেই সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাষণে বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতার কথা বলেছেন, দেশকে শত্রুমুক্ত করার কথা বলেছেন, অর্থনৈতিক স্বাধীনতার কথা বলেছেন। 'কোনো মেজরের বাঁশিতে দেশ স্বাধীন হয়নি মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তাকে স্বাধীনতার ঘোষক বানানোর অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। ইতিহাস বিকৃতি কোনপর্যায়ে গেছে এ থেকে বোঝা যায়। কিন্তু সত্যকে কখনো চাপিয়ে রাখা যায় না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে ভাষণ বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ছিল সেটা এখন বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

যুদ্ধকালীন ৯ মাস সময়ে এই ভাষণ মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা দিয়েছে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের কোটেশনগুলো নিয়মিত বেজেছে। মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষ অনুপ্রাণিত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর অনুপ্রেরণায় যার যা ছিল তা নিয়ে মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১ মার্চ থেকে বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশ নামটা একাত্ম হয়ে গিয়েছিল। তখন দেশ চলেছে ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবন থেকে। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার অবস্থা থেকে মুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধুর লন্ডন সফরের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধের সব পরিকল্পনা তিনি করে রেখেছিলেন। লন্ডনে বসে তিনি প্রবাসীদের সংগঠিত করেন। কারণ তিনি জানতেন, পাকিস্তানিরা ক্ষমতা দেবে না, যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করতে হবে। সে কারণে অস্ত্র কোত্থেকে আসবে, শরণার্থীদের কী হবে, কীভাবে যুদ্ধ চলবে সব তিনি ঠিক করে রেখেছিলেন। 'সব কিছুরই আমি চাক্ষুষ স্বাক্ষী'-প্রধানমন্ত্রী যোগ করেন।

৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে নিষিদ্ধ করা হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণ সেভাবে শুনতে পারেনি। এ ভাষণ বাজাতে বাধা দেওয়া হয়েছে। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ার সরকারও বাধা দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যারাই বঙ্গবন্ধুর নামকে মুছে দিতে চেয়েছিল তাদের লজ্জা হ্ওয়া উচিত।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত