সিলেটটুডে ডেস্ক

০৫ এপ্রিল, ২০২০ ০০:২৯

লন্ডন-ঢাকা-সিলেট ফ্লাইট চালু রাখতে যুক্তরাজ্য পিড়াপিড়ি করছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, নিজ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে নিয়মিত ফ্লাইট চালুর বিষয়ে বাংলাদেশকে পিড়াপিড়ি করছে দি অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) দেশগুলো।

তিনি বলেন, বিশেষ করে যুক্তরাজ্য আমাদের বেশ পিড়াপিড়ি করছে লন্ডন-ঢাকা-সিলেট-ম্যানচেস্টার এ রুটগুলো খোলা রাখতে। তারা আমাদের বলেছেন এবং বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করছেন যাতে আমরা এ রুটগুলো তাড়াতাড়ি খুলে দেই। তাদের বক্তব্য হলো, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আমাদের দেশে অনেক ডাক্তার, নার্স ও মেডিক্যাল স্টাফ দরকার হবে। ইউরোপিয়ান ও আমাদের উন্নয়ন অংশীদাররা আমাদের দেশে তাদের (ডাক্তার, নার্স ও মেডিক্যাল স্টাফ) সহযোগিতা পাঠাবেন। বিমানবন্দর বন্ধ থাকলে তারা আসতে পারবেন না। দ্বিতীয়ত, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় অন্যান্য সামগ্রী তারা দিতে পারবেন।

শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন। পরে তার বক্তব্যের ভিডিওবার্তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, আমার যে এলাকা, সিলেট, সেখানকার অনেক লোকজন যুক্তরাজ্যে থা্কেন। আমার এলাকার লোকজন এবং আমাদের প্রবাসীরা অনুরোধ করছেন, এখন যাতে ফ্লাইট চালু না করি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে মজার বিষয় হলো যারা পিড়াপিড়ি করছে, তারাও নিজেদের ফ্লাইট বন্ধ রেখেছে। এটার পেছনে কী উদ্দেশ্য তা জানেন না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। এছাড়া তাদের কারণেই দেশে ফ্লাইট বন্ধে বিলম্ব হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের জানিয়েছি যে, আপনারা আমাদের উন্নয়ন অংশীদার। আপনারা সহযোগিতা করলে আমরা খুবই খুশি হবো। তবে যারা আমাদের অনুরোধ করেছেন, যেমন অস্ট্রেলিয়া। তাদের দেশে সব ধরনের ফ্লাইট স্থগিত। কেউ ঢুকতে পারবে না, কেউ বের হতে পারবে না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওইসিডি দেশগুলো, বিশেষ করে যুক্তরাজ্য আমাদের বেশ পিড়াপিড়ি করছে লন্ডন-ঢাকা-সিলেট-ম্যানচেস্টার এ রুটগুলো খোলা রাখতে। তারা আমাদের বলেছেন এবং বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করছেন যাতে আমরা এ রুটগুলো তাড়াতাড়ি খুলে দেই। তাদের বক্তব্য হলো, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আমাদের দেশে অনেক ডাক্তার, নার্স ও মেডিক্যাল স্টাফ দরকার হবে। ইউরোপিয়ান ও আমাদের উন্নয়ন অংশীদাররা আমাদের দেশে তাদের (ডাক্তার, নার্স ও মেডিক্যাল স্টাফ) সহযোগিতা পাঠাবেন। বিমানবন্দর বন্ধ থাকলে তারা আসতে পারবেন না। দ্বিতীয়ত, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় অন্যান্য সামগ্রী তারা দিতে পারবেন।

ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, আমরা বন্ধ করেছি আমাদের দেশের জনগণের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে। কারণ আমাদের দেশে যারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, অধিকাংশই বিদেশ থেকে যারা এসেছিলেন, তাদের মাধ্যমে। আমরা আরো আগে বন্ধ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওদের পিড়াপিড়িতে একটু দেরি হয়েছে।

সম্প্রতি নিজ নাগরিকদের ফেরানো ও ফ্লাইট চালু নিয়ে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনারের ভিডিওবার্তা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, উনারা খুব চেষ্টা করছেন। বিভিন্ন ভাবে তাগাদা দিচ্ছেন। এটাতো সিদ্ধান্ত সরকার নেবে। আমাদের একটি কমিটি রয়েছে। আগে ৭ এপ্রিল আসুক, কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে ৭ না ১১ এপ্রিল ফ্লাইট খোলা হবে। আমরা বন্ধ করে রাখতে চাই না। তবে আমাদের দেশের জনগণের দাবি হলো, এ মুহূর্তে বন্ধ রাখেন।

আরেক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওইসিডি দেশগুলো সহায়তা দেবে বলেছে। কিন্তু কী কী মালপত্র পাঠাবে, সেগুলোর তালিকা কিছুই দেয়নি। কোন কোন ধরনের লোক আসবে সেটাও আমরা জানিনা। কিন্তু বলেছেন যে উনারা অনেক সাহায্য করবেন। তবে আমরা যেটা শুনেছি যে ইউরোপের বিভিন্ন যায়গা থেকে তারা অনেক লোক সংগ্রহ করে নিয়ে আসতে চান। আমি জানিনা এটার উদ্দেশ্য কী।

ভারত, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের লোক পৃথিবীর সব দেশে রয়েছে। বেশি প্রতিবেশী দেশে রয়েছে। আমাদের রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন প্রায় ২ হাজার ৫০০ বাংলাদেশী ভারতে রয়েছেন। এর মধ্যে অনেকেই ছাত্র, আর অনেকেই হয় চিকিৎসার জন্য গিয়েছেন কিংবা পর্যটক। তারা গিয়ে আটকে গেছেন। তারা আসতে চান। আমরা যখন ২০/২১ মার্চ তারিখে সব বন্ধ করে দিচ্ছি। তখনও অনেকে গিয়েছেন বেড়াতে। এটা খুব তাজ্জবের বিষয়! আমরা বলেছিলাম আপনারা এলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা সব বাংলাদেশীকে গ্রহণ করবো। তবে ভারত বলেছে, ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সব কিছু লকডাউন। তারা কোনোভাবেই খুলবে না। আর আমার বিমান যদি সেখানে যায়, তাহলে বিমানকে সেখানে ১৪ দিন বসে থাকতে হবে। আর কারো যদি ভাইরাস পজিটিভ পাওয়া যায়, তবে বড় অংকের জরিমানা দিতে হবে।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, তারা বাংলাদেশকে চিন্তা করতে মানা করেছেন। যখনই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তখন অতিরিক্ত লোক দিয়ে কাজ করিয়ে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নেয়া হবে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বাংলাদেশে ২০ থেকে ৫০ লাখ মানুষ মারা সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে এমন প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়ে ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক, একজন একটা হাইপোথিসিস করে বলেছে এটা হবে। যেই মডেলের ওপর ভিত্তি করে এই তথ্য দেয়া হয়েছে, সেই ইম্পিরিয়াল কলেজ পরপর ১০টি রিপোর্ট তৈরি করেছে। ভিন্ন অ্যাজামশন নিয়ে। কিন্তু যেটা সবচেয়ে খারাপ ওইটা নিয়ে তারা একটা রিপোর্ট করেছেন। এগুলো আমাদের কাছে মনে হয় একটু অতিরঞ্জিত।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত