সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ আগস্ট, ২০২৫ ১৯:১৭

‘সেকেন্ড রিপাবলিকের’ জন্যে ২৪ দফা ইশতেহার দিল এনসিপি

সেকেন্ড রিপাবলিকের জন্য ২৪ দফার ইশতেহার ঘোষণা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

রোববার (৩ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে তিনি এ ইশতেহার ঘোষণা করেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা এমন একটা বন্দোবস্ত তৈরির ঘোষণা দিয়েছিলাম যেখানে আর স্বৈরাচার ফিরে আসবে না। আমরা পারিনি। আমরা আমাদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেই আবারও হাজির হয়েছি ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে।’

সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘২৪-এর অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এমন আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, এই প্রজন্ম দেশের বিপদ জীবন দিয়ে মোকাবিলা করবে। আমরা নিজেদের জবাবদিহির মধ্যে রাখতে বদ্ধপরিকর।’

উত্তরাঞ্চলের সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘৫৪ বছরে আমরা অধিকার পাইনি। আজ থেকে এক বছর আগে এই শহিদ মিনার থেকে খুনি হাসিনার পতনের ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমরা আর হতাশার কথা শুনতে চাই না। আমরা যুবলীগ-ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বিচার চাইতে এসেছি। শহিদ পরিবারের পুনর্বাসন চাইতে এসেছি। আহত ভাইদের চিকিৎসার অধিকার চাইতে এসেছি। মুজিববাদী সংবিধান আর থাকতে দিতে চাই না।’

দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের এখন কাজ করার সময়। কেউ যদি হুমকি দেয়, আপনারা পিছু হটবেন না। এনসিপির একটা নেতা-কর্মীর দিকে যদি মুখ তুলে তাকায়, তাহলে আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করব।’

মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা যদি লড়াই ধরে রাখতে পারি তাহলে যেভাবে এই শহিদ মিনার থেকে আমরা গণভবনে গিয়েছিলাম। আগামীতে পার্লামেন্টে গিয়ে সরকার গঠন করব।’

জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, ‘প্রতিটি জেলার অভ্যুত্থানের বাতাস গায়ে নিয়ে আমরা এখানে এসেছি। প্রতিটি জেলার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা এখানে হাজির হয়েছি। আওয়ামী লীগ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ধ্বংস করেছে। দেশের শিক্ষা হবে সর্বজনীন। আওয়ামী লীগ দেশের সংস্কৃতিকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। বাঙালি জাতীয়তাবাদের নামে এমন সংস্কৃতি গড়ে তোলা হয়েছে যেখানে মাইজভান্ডারি গান নেই। শেখ হাসিনার বিচার বাংলার মাটিতে হবে।’

যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব বলেন, ‘আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি, স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। কিন্তু এখনো ১৮ কোটি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। আমরা প্রতিটি শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই।’

যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা বলেন, ‘এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে ধনী-গরিব বৈষম্য থাকবে না। প্রত্যেক নাগরিক যেন সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করতে পারে।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির ইশতেহারগুলো হলো- নতুন সংবিধান ও সেকেন্ড রিপাবলিক; জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি ও বিচার; গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার; ন্যায়ভিত্তিক বিচারব্যবস্থা ও আইন সংস্কার; সেবামুখী প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন; জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী; গ্রাম পার্লামেন্ট ও স্থানীয় সরকার; স্বাধীন গণমাধ্যম ও শক্তিশালী নাগরিক সমাজ; সার্বজনীন স্বাস্থ্য; জাতিগঠনে শিক্ষানীতি; গবেষণা, উদ্ভাবন ও তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লব; ধর্ম, সম্প্রদায় ও জাতিসত্তার মর্যাদা; নারীর নিরাপত্তা, অধিকার ও ক্ষমতায়ন; মানবকেন্দ্রিক ও কল্যাণমুখী অর্থনীতি; তারুণ্য ও কর্মসংস্থান; বহুমুখী বাণিজ্য ও শিল্পায়ন নীতি; টেকসই কৃষি ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব; শ্রমিক-কৃষকের অধিকার; জাতীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনা; নগরায়ন, পরিবহন ও আবাসন পরিকল্পনা; জলবায়ু সহনশীলতা ও নদী-সমুদ্র রক্ষা; প্রবাসী বাংলাদেশির মর্যাদা ও অধিকার; বাংলাদেশপন্থি পররাষ্ট্রনীতি; জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত