সিলেটটুডে ডেস্ক

১৪ মার্চ, ২০১৬ ০০:৪৪

জঙ্গিবাদকে সহযোগিতা করতেই দল ত্যাগ, বললেন ইনু

জঙ্গিবাদের সহযোগিতা করার জন্যই দলের কয়েকজন কাউন্সিল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু।

রোববার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টন জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘রহস্যজনক কারণে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বহির্ভূত তারা কাউন্সিল থেকে বের হয়ে রাস্তায় বসে নিজেদের মতো একটি কমিটি ঘোষণা করেছে। কাউন্সিল অধিবেশনের বাইরে রাস্তাঘাটে বসে কমিটি গঠন সম্পূর্ণ গঠনতন্ত্রবিরোধী।’

বিদ্রোহীদের দলে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে ইনু বলেন, ‘বাদল-আম্বিয়ারা চক্রান্তকারীদের পক্ষ নিয়েছেন। আমরা কাউন্সিল অনুযায়ী নতুন কমিটি গঠন করেছি। সেখানে তাদেরকেও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রাখা হয়েছে। আশা করবো তারা সাময়িক উত্তেজনা প্রশমিত হলে বিভ্রান্তি ত্যাগ করে স্ব-সম্মানে দলে ফিরে এসে নীতি-নির্ধারণীমূলক ভূমিকা পালন করবেন। কারণ তারা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সঙ্গে আছেন। দলের রাজনীতি ও নীতিনির্ধারণে তারা আগের মতোই সুযোগ পাবেন।

ইনু বলেন, ‘ডা. মুশতাক দলের সম্মেলনের রাজনৈতিক অধিবেশনে সরকার ও জোট থেকে বেরিয়ে আসার একটি লিখিত প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। মঈনুদ্দিন খান বাদল ও শরীফ নুরুল আম্বিয়া ওই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে। কাউন্সিলরা আলোচনা করে প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছে। আমার পক্ষ থেকে কোনো রকম হঠকারিতা, স্বেচ্ছাচারিতা করা হয়নি। তাদের আলোচনার সুযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা রহস্যজনকভাবে দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। যা জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করবে। কারণ, আমরা জঙ্গিবাদ বিরোধী চূড়ান্ত লড়াইয়ে রয়েছি। তাই এ মুহূর্তে সরকার ও জোট থেকে বেরিয়ে আসলে জঙ্গিবাদ বিরোধী লড়াই দুর্বল হয়ে পড়বে। জাসদ ১৪ দলে আছে এবং থাকবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘আজ পর্যন্ত সরকার, গণমাধ্যম বা জাসদের নেতাকর্মীসহ কোনো পর্যায় থেকে আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও আর্থিক অস্বচ্ছতার কোনো অভিযোগ তোলা হয়নি। তাই এই অভিযোগও সম্পূর্ণ মিথ্যা। জঙ্গিবাদ ও জঙ্গিবাদের পাহারাদারদের দমন এবং উন্নয়নের সহযোগী হিসেবে জাসদ বরাবরের মতোই এগিয়ে যাবে। জঙ্গিবাদ বিরোধী শেষ মুহূর্তের লড়াইয়েও জাসদ অংশ নেবে।

দলের একাংশের বক্তব্যের জবাবে ইনু বলেন, ‘আমার পক্ষ থেকে স্বৈরাচারী ও হঠকারী কোনো কাজ করা হয়নি। বরং তারা দলের ভেতর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। মহাজোট সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে চেয়েছিল। জঙ্গিবাদের সঙ্গে আপস করতে চেয়েছিল।’

আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ইনু বলেন, ‘আমি সরকারে রয়েছি, দলে রয়েছি। দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছি। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে এ পযন্ত কোন আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠেনি। আর গত ৬ বছরে তারা দলীয় ফোরামে এ প্রশ্ন তুলেননি কেন?’

জোটে থাকার ব্যাপারে বিরোধীদের প্রস্তাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবটি কাউন্সিলররা প্রত্যাখান করেছেন। আর সরকারে থাকবো না, দলে থাকবো- এটি আংশিক ও অবাস্তব প্রস্তাব। পারিপার্শ্বিক চাপে পড়ে এরা এখন এমন কথা বলছে।’

কাউন্সিল থেকে বের হয়ে যাওয়ার পরও কেন তাদের কমিটিতে রাখা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জঙ্গিবাদের প্রশ্নে আমরা এরশাদের সঙ্গেও আলোচনায় বসেছি, তাদের সঙ্গেও বসতে পারি। আর দলের সভাপতি হিসেবে আমার দায়িত্ব তাদের সময় দেয়া, পরিস্থিতি সামাল দেয়া। তারা তাদের ভুল শুধরে আবারো যাতে দলে ফিরে আসতে পারে সেই আশা থেকে তাদের নতুন কমিটিতে রাখা হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, কার্যকরী সভাপতি হাবিবুর রহমান, দলের প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুর রহমান শওকত, সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চুন্নু ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর হোসাইন আখতারসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত