নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:৪৭

আওয়ামী লীগ- বিএনপি, কেউ কারো সম্মেলনে যায় নি

ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেয়েও যোগ দেয় নি বিএনপি। এ বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত বিএনপির সম্মেলনেও আমন্ত্রণ পেয়েছিল আওয়ামী লীগ, কিন্তু সেখানে তারাও অংশ নেয় নি। তবে এবার বিএনপির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে অংশ নেওয়ার একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হলেও শেষ মুহূর্তে দলটি যোগ দেয় নি। এর বাইরে সম্মেলনে যাননি জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তবে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ সম্মেলনে না গেলেও আওয়ামী লীগকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শনিবার সম্মেলন চলাকালে সুইজারল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন রওশন।

বিএনপি আওয়ামী লীগের চলমান সম্মেলনে যোগ না দিলেও বিএনপির রাজনৈতিক মিত্র বলে পরিচিত বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (বি চৌধুরী) অংশ নিয়েছে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলটি মহাসচিব আব্দুল মান্নানও। বি. চৌধুরী বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক না হলেও আওয়ামী লীগের বিরোধী বলে পরিচিত।

আওয়ামী লীগের সম্মেলনের যোগদান প্রসঙ্গে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছিলেন, ‘আমাদের সম্মেলনে কিন্তু আপনারা আসেন নাই। সৌজন্যবোধ দেখিয়ে টেলিফোন করে দুঃখ প্রকাশও করে নাই। কিন্তু আমরা আপনাদের মতো হীনমন্য নই। বিএনপি যে একটা উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সেই প্রমাণ আপনারা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন পাবেন ইনশাল্লাহ। আমরা যাব।’

বিএনপির এ নেতা সম্মেলনে যোগদান বিষয়ে ইতিবাচক কথা বললেও শেষ মুহূর্তে বিএনপি অংশ নেয় নি।

জানা যায়, আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বিএনপির অংশগ্রহণ না করার নেপথ্যে অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে গত মার্চে বিএনপির সম্মেলনে তারা (আওয়ামী লীগ) যোগ দেয়নি। এ ছাড়া ওই সম্মেলনে ক্ষমতাসীনরা বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল বলে অভিযোগ নেতাদের। দেশের বর্তমান রাজনীতিতে বিএনপির বিরুদ্ধে সরকারের আচরণকেও সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার জন্য দায়ী করা হচ্ছে।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাসের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে দলটিকে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেয়। তারা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করে। পরে মৃণাল কান্তি দাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আমন্ত্রণ জানাতে এখানে এসেছি। দাওয়াত দিয়েছি। আশা করি তারা আমাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন, আমাদের সম্মেলনে যোগদান করবেন।’

এদিকে শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুরু হওয়া দুদিনের সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে মহাজোটের শরিকসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা যোগ দেন।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সভাপতি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, বাংলাদেশ জাতীয় জোটের প্রধান ও প্রাক্তন মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, মহাজোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, জাসদ (রব) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, জাতীয় পার্টি (জেপি) মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মনজুরুল আহসান খান।

এ ছাড়া সম্মেলনে চীন, ভারত, রাশিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, শ্রীলঙ্কা, নেপালসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক দলের নেতারা যোগ দেন।

উল্লেখ্য, গত ১৯ মার্চ রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও দলটির কোনো প্রতিনিধি সেখানে যাননি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত