সিলেটটুডে ডেস্ক

১৮ নভেম্বর, ২০১৬ ১৯:১৬

সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে নতুন ইসি চায় বিএনপি

নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। একই সঙ্গে সব দলের ঐক্যের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের খুঁজে বের করতে পাঁচ সদস্যের বাছাই কমিটি গঠনেরও কথা বলেছেন তিনি।

শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের  প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালীকরণ এবং নির্বাচনের সময় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে বিএনপির পক্ষ থেকে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন খালেদা জিয়া।

বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেছেন, গত বছর স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। এ জন্য এবার সব রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।

খালেদা জিয়া বলেন, জাতীয় নির্বাচনের জন্য একটি স্থায়ী ব্যবস্থা প্রণয়ন বাঞ্ছনীয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সৎ, দক্ষ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের বিকল্প নেই। এ জন্য নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনকৃত রাজনৈতিক দল বা বিভিন্ন সময়ে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট বাছাই কমিটি করতে হবে। এ কমিটিতে বিতর্কিত নন এমন সাবেক প্রধান বিচারপতি, আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি, অবসরপ্রাপ্ত সচিব, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক, দক্ষ যোগ্য নারীকে রাখতে হবে। দুই রাজনৈতিক জোটের দুই মূল প্রতিনিধি, সহায়তাকারী আরো দুজন প্রতিনিধি বৈঠকে থাকবেন।

খালেদা জিয়া বলেন, বাছাই কমিটি সব রাজনৈতিক দলের অভিন্ন প্রস্তাবের ভিত্তিতে জেলা জজের মর্যাদাসম্পন্ন, নুন্যতম ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদমর্যাদাসম্পন্ন সাবেক সেনা কর্মকর্তা, সিনিয়র আইনজীবী, বিশিষ্ট নাগরিকদের মধ্য থেকে আটজনকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে মনোনীত করবে। অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কাজ করেছেন এমন কাউকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে মনোনীত করা যাবে না। বাছাই কমিটির প্রস্তাবিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে দুজনের মধ্যে একজন এবং নির্বাচন কমিশনার পদে আটজন থেকে চারজনকে রাষ্ট্রপতি চূড়ান্ত করবেন।

খালেদা জিয়া বলেন, তফসিল ঘোষণার পর মাঠ প্রশাসনে বদলির এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের। বিগত পাঁচ বছরে যে যে কর্মকর্তা জেলা ও উপজেলায় কাজ করেছেন তাদের নতুন এলাকায় বদলি করতে হবে। নির্বাচন কমিশন একটি কমিটি গঠন করবে, যারা ২০০৮ ও ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছে সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করতে পারবে।

খালেদা জিয়া বলেন, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী কিংবা দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশকারী ব্যক্তি নির্বাচন পর্যবেক্ষক হতে পারবেন না। নির্বাচনী আইন ভঙ্গের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নির্বাচন কমিশন পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ প্রদান করবে। নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন প্রতিরক্ষা বাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা প্রদান করবে। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তাদের বিচারিক ক্ষমতা দিতে হবে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের আর্থিক স্বাধীনতা থাকতে হবে, নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। ভোটগ্রহণের সময় ব্যালট বাক্স পরিপূর্ণ হয়ে গেলে তা পোলিং বুথেই রাখতে হবে। ভোট গ্রহণের পর খালি ব্যালট বাক্স যদি থাকে তা নিরাপদে রাখতে হবে।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, নির্বাচন কমিশনকে অধিকতর শক্তিশালীকরণের জন্য বিধিবিধান ও আরপিও সংস্কার করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের রূপরেখা অবশ্যই জাতির সামনে প্রকাশ করা হবে। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করতে হবে। নির্বাচনের সময় কয়েকটি মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কাজ করবে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক ছাড়াও সুশীলসমাজের প্রতিনিধি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত