সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

১৯ জানুয়ারি, ২০২০ ২০:১৪

জিয়াউর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে জেলা বিএনপির আলোচনা সভা ও দোয়া

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এম এ হক বলেছেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বলে আজকের স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ দেশে রাজনীতি করার অধিকার পেয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতার মোহে তারা ইতিহাস ভুলে মানুষের ভোট চুরি করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছে। গণতন্ত্র ধ্বংস করে তারা ষড়যন্ত্রমুলক মামলায় ফরমায়েশি রায়ে সাজা দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রেখেছে।

রোববার (১৯ জানুয়ারি) শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৪তম জন্মদিন উপলক্ষে সিলেট জেলা বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

তিনি আরও বলেন, জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে আদর্শিক মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করতে একের পর এক মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছে। সর্বশেষ ৩০ ডিসেম্বর ভোট ডাকাতির মাধ্যমে তারা ধ্বংসপ্রায় গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। শহীদ জিয়া প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য জিয়ার আদর্শের সৈনিকদের দৃঢ় শপথ নিতে হবে।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের সভাপতিত্বে ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহবুবুর রব চৌধুরী ফয়সলের পরিচালনায় নগরীর দরগাহ গেইটস্থ কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের শহীদ সুলেমান হলে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় জেলা বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে এক দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

মাহফিলে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও আশু সুস্থতা কামনা, প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর রুহের মাগফেরাত কামনা, তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু, নিখোঁজ এম. ইলিয়াস আলী, ছাত্রদল নেতা ইফতেখার আহমদ দিনার, জুনেদ আহমদ ও গাড়ী চালক আনসার আলীসহ গুমকৃত সকল নেতাকর্মীদের সন্ধান কামনা এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা ছদরুল আলম চৌধুরী।

সভায় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ক্ষুদ্র ঋণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা আহ্বায়ক কমিটির ১নং সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক এডভোকেট নুরুল হক, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ সিলেটের সভাপতি ডা. শামীমুর রহমান শামীম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আশিক উদ্দিন চৌধুরী, আলী আহমদ, অধ্যাপক সামিয়া বেগম চৌধুরী, ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মাজহারুল ইসলাম ডালিম, আব্দুল আহাদ খান জামাল, মাহবুবুল হক চৌধুরী, আবুল কাশেম, শামীম আহমদ ও আহমেদুর রহমান চৌধুরী মিলু, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কাওসার ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হক আরিফ।

বিএনপি নেতা আব্দুল মালেকের পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সূচিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি সুরমান আলী, মহানগর শ্রমিক দলের সভাপতি ইউনুস মিয়া, জেলা মহিলা দলের সভাপতি সালেহা কবির শেপী, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহিদ সুহেল, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী আহসান, জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন নাদিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মোতাকাব্বির চৌধুরী সাকি, মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল ইসলাম প্রমুখ।

অতিথির বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্র ঋণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্ম না হলে বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাস ভিন্ন হতো। তার নেতৃত্বে ও ঘোষণায় আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম।

সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, শহীদ জিয়া শুধু দেশ স্বাধীনই করেননি। এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন করেছেন। শহীদ জিয়ার আদর্শ ও মূলনীতি আঁকড়ে ধরেই গণতন্ত্রকামী জনতার বিজয় আসবে।

বিএনপি নেতা আবুল কাহের চৌধুরী শামীম বলেন, শহীদ জিয়া প্রবর্তিত গণতন্ত্র আজ বিপন্ন হতে চলেছে। মহান স্বাধীনতার ঘোষকের স্ত্রী আজ কারান্তরীণ। এমতাবস্থায় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শাসকের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

ডা. শামীমুর রহমান শামীম বলেন, শহীদ জিয়া শুধু একটা নাম নয়। বরং একটা ইতিহাস। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, লাল সবুজের পতাকা থাকবে ততদিন বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে শহীদ জিয়া বেঁচে থাকবেন। শহীদ জিয়ার রাজনৈতিক দর্শন তরুণ প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি যতটা কাজ করেছেন, শাসক হিসেবে এর চেয়েও বেশী কাজ করে জনতার হৃদয়ে ঠাই করে নিয়েছেন। আদর্শকে আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করা উচিত রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে নয়। দেশনেত্রীর কোন অপরাধ নেই। তবুও তিনি সাজা পেয়ে কারান্তরীন। তার মুক্তিও এমনি এমনি হবে না। একটা কার্যকর আন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশনেত্রীর মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। আজ বাংলাদেশের মানুষ জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতি তাকিয়ে রয়েছে। তাদেরকে ফ্যাসিবাদের হাত থেকে মুক্ত করতেই বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে কামরুল হুদা জায়গীরদার বলেন, শহীদ জিয়া আমাদের আদর্শ, জিয়া আমাদের প্রেরণা। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের মা। তারেক রহমান আমাদের নেতা। দেশের গণতন্ত্রের জন্য এবং গণতন্ত্রের স্বার্থে জিয়া পরিবারকে রক্ষা করতে হবে। জিয়া পরিবার ও গণতন্ত্র একে অপরের পরিপূরক। মহান নেতার জন্মদিনে আমাদের শপথ নিতে হবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত