১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ১২:১৪
ঈদের আগে সকল সেক্টরের শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ ও মাসিক বেতনের সমপরিমান ঈদ বোনাস প্রদান এবং গ্যাস-বিদ্যুৎসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানোর দাবিতে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার বিকেলে মৌলভীবাজারে মিছিল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির উদ্যোগে নেতাকর্মীরা শহরের চৌমুহনাস্থ কার্যালয়ে জমায়েত হয়ে মিছিল শুরু করে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কুসুমবাগ এলাকায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশা করেন।
জেলা ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সহ-সভাপতি মোঃ মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনষ্ঠিত সমাবেশে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস, হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহিন মিয়া, রিকশা শ্রমিক সংঘের সভাপতি সোহেল আহমেদ। সমাবেশে বক্তারা বলেন শ্রমিকের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমে সৃষ্ট মুনাফায় মালিকরা মহাধুমধামে ঈদ উৎযাপন করলেও শ্রমিকদের সামান্যতম উৎসব বোনাস প্রদান করেন না, এমন কি অনেক শ্রমিককে বকেয়া বেতনও পরিশোধ করা হয় না।
সম্প্রতি ঘোষিত শ্রম আইনের বিধিমালায় প্রত্যেক শ্রমিককে উৎসব বোনাস প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তাই আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সকল শ্রমিককে বকেয়া বেতন ও মাসিক বেতনের সমপরিমান বোনাস প্রদান করার দাবি জানান। বক্তারা আও বলেন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতির এই সময়ে সরকারের গ্যাস-বিদ্যুৎ-সিএনজি’র মূল্যবৃদ্ধি শ্রমজীবী জনগণের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে। গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে বাড়িভাড়া, গাড়িভাড়াসহ সর্বক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধি শুরু হয়েছে। অন্যদিকে সরকারি কর্মচারীদের সর্বোচ্চ ও সর্বনি¤œ বেতনে ব্যাপক বৈষম্যের সৃস্টির সাথে বেতন প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধির ফলশ্রুতিতে মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাস্ফীতি ঘটবে। অথচ সরকার শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধিও কোন উদ্যোগ নেননি। দীর্ঘদিন হতে চা-শ্রমিকরা দৈনিক মাত্র ৬৯ টাকা মজুরিতে অনাহার-অর্ধাহারে জীবন নির্বাহ করছেন। তার উপর বে-আইনীভাবে চা-শ্রমিকদের ছুটির দিনের মজুরি হতে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এমতবস্থায় চা-শ্রমিকসহ শ্রমিক-কর্মচারীদের আন্দোলন-সংগ্রাম ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই।
সমাবেশ থেকে বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণভাবে শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য ন্যূনতম মূল মজুরি ১০ হাজার টাকা ঘোষণা, আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী শ্রম আইন প্রণয়ন, ৮ ঘন্টা কাজ, শ্রম আইন কার্যকর, সমকাজে সমমজুরি, চা-শ্রমিকদের দৈনিক ৪০০ টাকা মজুরিসহ সাপ্তাহিক ছুটির দিনের মজুরি প্রদান, হোটেল ও স’মিলসহ বিভিন্ন সেক্টরে সরকার ঘোষিত নি¤œতম কার্যকর, মহাসড়কে বিকল্প লেন না করা পর্যন্ত তিন চাকার পরিবহণ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, সুনামগঞ্জের ধোপাজান ও যাদুকাটা নদী থেকে বালু পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং অবৈধ বোমা মেশিন ও ড্রেজার বন্ধ করে হাজার হাজার বারকি শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা বিধানের দাবি করা হয়।
আপনার মন্তব্য