স্পোর্টস ডেস্ক

২৩ জুলাই, ২০২০ ১০:৫৪

৩০ বছর পর লিভারপুলের শিরোপা

অ্যানফিল্ডে আজ ৩০ বছর পর এসেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা। আরও ছয় ম্যাচ আগে শিরোপা নির্ধারিত হয়ে গেলেও লিভারপুলের হাতে প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা তুলে দেওয়া হলো বুধবার (২২ জুলাই)। চেলসির বিপক্ষে রোমাঞ্চকর আট গোলের ম্যাচটি ৫-৩ গোলের ব্যবধানে জিতে শিরোপা ছুঁয়ে দেখল লিভারপুল।

'রাত গাঢ় হচ্ছে হাজার বছরের পুরনো সেই রাত।'-লিভারপুল সমর্থকদের কাছে ঠিক "হাজার বছর ধরে" গল্পের মতো মহাকাব্যই এই রাত। আজ ২০১৯/২০২০ মৌসুমে অ্যানফিল্ডের শেষ ম্যাচ খেলতে নামে লিভারপুল। আর এই ম্যাচ শেষেই অল রেডদের হাতে তুলে দেওয়া হয় প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা। অপেক্ষা দীর্ঘ ৩০ বছরেরো (১১ হাজার দিনেরও বেশি) বেশি সময়ের। আর তাই তো সমর্থকদের বাধ ভাঙা উল্লাস।

উল্লাস বেড়ে আরও দ্বিগুণ হয়েছে চেলসির বিপক্ষে রোমাঞ্চকর এক ম্যাচের মাধ্যমে। এই ম্যাচে লিভারপুলের জন্য হারানোর কিছু না থাকলেও এই মৌসুমে নিজেদের ডেরায় অপরাজিত থাকার রেকর্ড ধরে রাখার বাসনা ছিল। আর অন্যদিকে চ্যাম্পিয়নস লিগে নিজেদের জায়গা ধরে রাখতে এই ম্যাচে জয় ছাড়া কিছুই ভাবছিল না চেলসি। যদিও লিভারপুলের ডেরায় এসে জয় ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভবের কাছাকাছি। সেটিই যেন প্রমাণ আরও একবার প্রমাণ করল অলরেডরা।

ঘরের মাঠে চেলসিকে ডেকে গুনে গুনে পাঁচবার বল পাঠিয়েছে কেপা আরিজাবালাগার গোলপোস্টে। অবশ্য চেলসিও কম যায়নি! তিনবার বল জালে জড়িয়েছে রেডদের জালেও। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। অলরেডদের হয়ে গোলবন্যার শুরুটা করেছিলেন মিডফিল্ডার নাবি কেইটা। ম্যাচের ২৩ মিনিটের মাথায় দূরপাল্লার দুর্দান্ত এক শটে গোল করে গোলবন্যার শুরু করেন কেইটা। এর ঠিক মিনিট পনেরো পরে ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার আর্নল্ডের দুর্দান্ত গোলে ২-০'তে এগিয়ে যায় চ্যাম্পিয়নরা। তবে এইখানেই ক্ষান্ত হয়নি ক্লপের শিষ্যরা। গোলক্ষুধায় যেন হন্যে হয়ে পড়েছিল তারা।

গোলক্ষুধায় হন্যে হয়ে ম্যাচের তৃতীয় গোল লিভারপুল পেয়ে যায় ৪৩ মিনিটে। এবার গোল আসে জর্জিনিও ওয়ানাল্ডমের কাছ থেকে। তবে খেলা সেখানেই শেষ হয়ে যায়নি। তিন গোলে পিছিয়ে পড়লেও হাল ছাড়েনি অল ব্লুজরা। প্রথমার্ধের যোগ করা অতিরিক্ত সময়ের তিন মিনিটের মাথায় অলিভার জিরুডের গোলে ব্যবধান ৩-১ করেই বিরতিতে যায় চেলসি। বিরতি থেকে ফিরে ৫৫ মিনিটে রবার্তো ফিরমিনোর গোলে ৪-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় লিভারপুল।

অনেকে হয়ত ভেবে বসেছিল এখানেই হয়ত ম্যাচের সমাপ্তি। তবে অ্যানফিল্ডের রোমাঞ্চের তখনও বাকি অনেক। চতুর্থ গোল হজমের ঠিক মিনিট ছয় পরে টামি আব্রাহামের গোলে ব্যবধান কমে আসে ৪-২'এ। এরপর ম্যাচের ৭৩তম মিনিটে ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচের দুর্দান্ত এক গোলে ব্যবধান কমে আসে ৪-৩'এ। তখনই ম্যাচে ফেরার হুমকি লিভারপুলের দিকে ছুঁড়ে দিচ্ছিল চেলসি।

তবে অ্যানফিল্ডে নিজেদের দ্বৈরথ ধরে রাখতে মরিয়া অলরেডরাও। ম্যাচের ৮৪ মিনিটে অ্যালেক্স অক্স চেম্বারলেইনের আরও এক গোলে জয় নিশ্চিত হয় লিভারপুলের। শেষ পর্যন্ত ৫-৩ গোলের ব্যবধানে জিতেই মাঠ ছাড়ে ইয়্যুর্গেন ক্লপের দল। এই ম্যাচে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলাটা শঙ্কায় না পড়লেও ঝুলে পড়েছে চেলসির। প্রিমিয়ার লিগের ৩৭ ম্যাচ শেষে সমান ৬৩ পয়েন্ট থাকলেও গোল ব্যবধানে চেলসির থেকে এগিয়ে থাকায় তিন নম্বরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। আর চেলসি অবস্থান করছে লেস্টার সিটি থেকে এক পয়েন্ট বেশি নিয়ে চারে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত