স্পোর্টস ডেস্ক

১৭ আগস্ট, ২০২০ ১০:৫৫

ম্যানইউকে হারিয়ে ইউরোপার ফাইনালে সেভিয়া

সম্প্রতি সময়ে ইউরোপা লিগকে যেন নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে নিয়েছে সেভিয়া। আবারও তার প্রমাণ দিল দলটি। এক লেগের সেমিফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ২-১ গোলে হারিয়ে উঠে গেল ফাইনালে। এই মৌসুমে আরও একবার সেমি থেকে বাদ পড়ল ইউনাইটেড, সেজন্য অবশ্য নিজেদেরই দায়ী করতে পারে তারা।

খেলার স্কোরলাইন বলছে ২-১ ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নিয়েছে সেভিয়া তবে গোল মিসের মহড়া না দিলে স্কোরলাইন যেতে পারত রেড ডেভিলদের পক্ষেই। আর এদিনই যেন অভেদ্য হয়ে উঠেছিলেন সেভিয়া গোলরক্ষক। রাশফোর্ড-মার্শিয়ালদের গোল মিসের খেসারত দিতে হয়েছে ইউনাইটেডকে।

ম্যাচের শুরুটা দুর্দান্ত করেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ম্যাচের মাত্র ৭ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পায় তারা। এটি ছিল ২০১৯/২০ মৌসুমে তাদের ২২তম পেনাল্টি। ডি বক্সের ভেতর মার্শিয়ালের বাড়ানো বল পেয়েছিলেন রাশফোর্ড, শটও নিয়েছিলেন যদিও সেটা চলে যায় বাইরে। তবে ফলো থ্রুতে ফাউল করা হয় রাশফোর্ডকে, পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। আর সেখান থেকে বল জালে জড়াতে একদমই ভুল করেননি ব্রুনো ফার্নান্দেজ। স্পট কিক থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন ১-০ ব্যবধানে। ২০১৫-১৬ মৌসুমে বার্সেলোনার পর ইউরোপের শীর্ষ লিগে এত পেনাল্টি পায়নি আর কোনো দলই।

এর ঠিক মিনিট সাতেক পর গোলের সুযোগ পেয়েছিল ইউনাইটেড। এবার ফার্নান্দজের পাস থেকে বক্সে বল পেয়েছিলেন ফ্রেড। কিন্তু কঠিন অ্যাঙ্গেল থেকে বল পোস্টে রাখতে পারেননি। মিনিটখানেক পরেই ম্যাচের প্রথম সুযোগ পায় সেভিয়া, তবে বক্সের বাঁ-দিক থেকে লুকাস ওকাম্পসের জোরালো শট ঠেকিয়ে দেন ডি গিয়া। এরপর নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে আক্রমণের ধার বাড়ায় স্প্যানিশ ক্লাবটি। আর গোল পরিশোধের জন্য তাদের অপেক্ষা ম্যাচের ২৬ মিনিট পর্যন্ত।

বাঁ-প্রান্ত থেকে দারুণ এক আক্রমণ করেন লেফটব্যাক সার্জিও রেগুলিয়ন। তার ক্রসে সুসো বাঁ পায়ের দুর্দান্ত এক ফিনিশিংয়ে বল পাঠিয়ে দেন ইউনাইটেডের জালে। সমতায় ফেরে সেভিয়া। তবে ইউনাইটেড নিজেদের দুর্ভাগা মনে করতে পারে, সেভিয়ার আক্রমণের উৎস ছিল একটা ফলস থ্রো ইন। ৩২ মিনিটে পগবার পাস থেকে ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন মার্শিয়াল, কিন্তু তার বাঁকানো শট একটুর জন্য পোস্টের ওপর দিয়ে চলে যায়।

প্রথমার্ধে দুর্দান্ত আক্রমণ আর প্রতি আক্রমণে শেষ হয়েছে ১-১ গোলের সময়তায়। শেষ দুই মিনিটে ব্রুনোর শট ঠেকিয়ে দিয়ে দলকে ম্যাচে ধরে রেখেছিলেন সেভিয়া গোলরক্ষক ব্রুনো, এরপর আবার পালটা আক্রমণ থেকে বক্সের ভেতর ঢুকেও সুযোগ হারিয়েছেন রাশফোর্ড।

ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোলের সুযোগ পান গ্রিনউড। ব্রুনো ফার্নান্দেজের থ্রু কাজে লাগাতে পারেননি গ্রিনউড। আর দুর্দন্ত সব সেভ করেই দলকে ম্যাচে ধরে রাখেন সেভিয়া গোলরক্ষক। এরপর তিন মিনিটে আরও তিনটি সেভ করেছেন, দুবার অন্তত নিশ্চিত গোল থেকে বাঁচিয়েছেন। একের পর আক্রমণ করেও গোল পায়নি ইউনাইটেড।

উল্টো ম্যাচের ৭৮ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে জেসুস নাভাসের ক্রসটা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলেন ইউনাইটেড ডিফেন্ডাররা। ফাঁকায় পেয়ে বল জালে জড়ান লুক ডি জয়ং। আর তাতেই ২-১ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে ইউরোপা লিগের রাজাদের।

শেষ দিকে সোলশায়ার দলে কিছু পরিবর্তন আনলেও তা কার্যকর হয়ে ওঠেনি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হয় সেভিয়ার ২-১ গোলের এগিয়ে থাকায়। আর তাতেই স্প্যানিশ ক্লাবটির ৬ষ্ঠ ইউরোপার লিগের সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত