স্পোর্টস ডেস্ক

২৪ নভেম্বর, ২০২০ ২৩:২২

শেষ ওভারে চার ছক্কায় নায়ক আরিফুল

বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপ

ছবি: ফিরোজ আহমেদ, দ্য ডেইলি স্টার

৬ বলে দরকার ২২ রান। ক্রিকেট যতই অনিশ্চয়তার খেলা বলে প্রচার হোক না কেন ম্যাচ জয়ের পাল্লা যে বোলিংপক্ষের দিকে ঝুঁকবে সে বলাই বাহুল্য। উইকেটে আরিফুল হক আর শহীদুল। না, তারা ত আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কার্লোস ব্র্যাথওয়েট নন যে চার ছক্কা হাঁকিয়ে বিশ্বকাপ জিতে যাবেন! ব্র্যাথওয়েট ওই একবারই এমন কীর্তি গড়েছিলেন বিশ্বকাপে, আর এ যে ভিন্ন প্রেক্ষাপট; পুরো ম্যাচে ধুঁকতে থাকা ব্যাটসম্যান আরিফুল।

ওদিকে, বোলিং করতে আসছেন এই ম্যাচে তখন পর্যন্ত কিপটে বোলার মেহেদি হাসান মিরাজ। প্রথম ৩ ওভারে মাত্র ১২ রান দেওয়া মেহেদি হাসান মিরাজের হাতে শেষ ওভারে বল তুলে দেন ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক তামিম। ব্যাট হাতে আরিফুল প্রথম দুই বল লং অনের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠান। পরের বলে সিঙ্গেল নেওয়ার সুযোগ থাকলেও তিনি নেননি। চতুর্থ ও পঞ্চম বলে দুটি ছক্কা মারেন তিনি মিড উইকেট দিয়ে।

ওই ৪ ছক্কা মারার আগে ২৯ বলে আরিফুল করেছিলেন ২৪ রান। ম্যাচ শেষে তার নামের পাশে ৩৪ বলে অপরাজিত ৪৮। ৪ ছক্কা বাদ দিলে আগে আর কেবল ২ চার মেরেছিলেন তিনি। যারমধ্যে একটা আবার ব্যাটের কানায় লেগে।

মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৫২ রান করেছিল ফরচুন বরিশাল। ওই রান তাড়ায় শেষ ওভারে আরিফুল ঝলকের আগে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল না জেমকন খুলনার। তাসকিন আহমেদ, সুমন খানদের পেসে কাবু হয়ে হারের পথেই ছিল তারা। সেই ম্যাচে এক বল হাতে রেখে শেষ পর্যন্ত খুলনা জিতে গেল ৪ উইকেটে।

নিষেধাজ্ঞার পর ক্রিকেটে ফেরা সাকিব আল হাসান বল হাতে ছিলেন দুর্দান্ত। কিন্তু ব্যাটিংয়ে তাকে দেখা গেল ঠিকই জড়সড়। থিতু হতে সময় নিচ্ছিলেন। কিন্তু ফল এলো না। সুমনের বলে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন মিড উইকেটে। ১৩ বলে ২ চারে ১৫ রান করেন সাকিব।

৩৬ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে খুলনা। আরিফুলকে নিয়ে জহুরুল ইসলাম অমি বিপর্যয় কাটানোর চেষ্টায় ছিলেন। প্রাথমিক পরিস্থিতি সামালও দেন তারা। কিন্তু রান রেটের চাপ বেড়ে যাওয়ায় বাড়ে বিপদও। জহুরুল সেই চাপ মেটাতে গিয়ে ৩১ রান করে দেন ইস্তফা।

খুলনার আশা তখন প্রায় নিভু নিভু। সাতে নেমে তখনই আশার জোগান দেন তরুণ শামীম পাটোয়ারি। চার-ছয়ে তুলেন ঝড়। কিন্তু আরেক প্রান্তে আরিফুল মেটাতে পারছিলেন না সে দাবি। বরং ডট বলে তিনি বাড়িয়েছেন চাপ। সুমনের শেষ স্পেলে শামীম আউট হন ২৬ রান করে। এরপর খলনায়কের মঞ্চ থেকে আচমকা নায়ক বনে যান আরিফুলই।

এর আগে বরিশালের ইনিংসের একমাত্র হাইলাইট বলা যায় পারভেজ হোসেন ইমনের ব্যাটিং। বাকিদের ব্যর্থতার মাঝে উজ্জ্বল ছিল তার ব্যাট। ৪২ বলে তার ৫১ রানে ভর করেই দেড়শ ছাড়িয়ে যাওয়ার ভিত পায় বরিশাল। এই রান নিয়েও জেতার পথে থাকা তামিম ইকবালের দল হারে মিরাজের শেষ ওভারের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৫২/৯ (মিরাজ ০, তামিম ১৫, পারভেজ ৫১, আফিফ ২, হৃদয় ২৭, ইরফান ১১, মাহিদুল ২১, আমিনুল ৫, সুমন ০, তাসকিন ১২*, কামরুল ২*; শফিউল ২/২৭, আল-আমিন ০/৩২, হাসান ২/৪৫, শহিদুল ৪/১৭, সাকিব ১/১৮, মাহমুদউল্লাহ ০/৮)

জেমকন খুলনা: ১৯.৫ ওভারে ১৫৫/৬ (এনামুল ৪, ইমরুল ০, সাকিব ১৫, মাহমুদউল্লাহ ১৭, জহুরুল ৩১, আরিফুল ৪৮*, শামীম ২৬, শহীদুল ৮*; তাসকিন ২/৩৩, সুমন ২/২২ , মিরাজ ১/৩৬, আমিনুল ০/২০, কামরুল ১/৩২, আফিফ ০/১২)।

ফল: জেমকন খুলনা ৪ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আরিফুল হক।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত