স্পোর্টস ডেস্ক

২৯ জুন, ২০২১ ১২:২১

ফ্রান্সকে কাঁদিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে সুইজারল্যান্ড

শ্বাসরুদ্ধকর আরেক লড়াইয়ের জন্ম দিল ফ্রান্স ও সুইজারল্যান্ড। শ্বাসরুদ্ধকর আরেক লড়াইয়ের জন্ম দিল ফ্রান্স ও সুইজারল্যান্ড। স্পেন-ক্রোয়েশিয়ার আট গোলের উত্তেজনায় ভরপুর ম্যাচের রেশ না কাটতেই আরেক উত্তেজনা। যেন ফুটবলীয় রোমাঞ্চে ভরা এক রাতে।

রোমেনিয়ার বুচারেস্টে নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে আসেনি কোনো ফলাফল। তবে দুই দল মিলিয়ে গোল করে ছয়টি। ম্যাচের প্রথমে সেফেরোভিচের গোলে পিছিয়ে পড়েও করিম বেনজেমার জোড়া গোলের সঙ্গে পল পগাবার দূরপাল্লার দুর্দান্ত এক গোলে ৭৫ মিনিটের মধ্যেই ৩-১ ব্যবধানে লিড নেয় ফ্রান্স। তবে ম্যাচের শেষ ১০ মিনিটে দুর্দান্ত পারফর্ম করে সেফেরোভিচ ৮৫ মিনিটে আর ৯০ মিনিটে গ্যাভ্রানোভিচের গোলে ম্যাচ পৌঁছে যায় অতিরিক্ত সময়ে। তবে অতিরিক্ত সময়েও ম্যাচের ফলাফল না আসায় টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। আর টাইব্রেকারে ৫-৪ ব্যবধানে ফ্রান্সকে হারিয়ে কোয়ার্টারের টিকিট নিশ্চিত করল সুইজারল্যান্ড।

নির্ধারিত ৯০ মিনিট ৩-৩ গোলে সমতায় শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত সময়ের ৩০ মিনিটে গোলের দেখা পায়নি কেউই। আর তাতেই ম্যাচ যায় টাইব্রেকারে। টাইব্রেকারে সুইসরা পাঁচটি শট জালে জড়ায় আর ফ্রান্সের প্রথম চারটি শট জালে জড়ালেও শেষ শটটি মিস করে বসেন কিলিয়ান এমবাপে। তাঁর শটটি রুখে দেন সুইস গোলরক্ষক ইয়ান সমার। আর তাতেই টাইব্রেকারে ৫-৪ ব্যবধানে জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয় সুইজারল্যান্ড।

অতিরিক্ত সময়ের ১১০তম মিনিটে দলকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ পান এমবাপে। কিন্তু ডি বক্সে জায়গা করে নিয়েও বল পাশের জালে মেরে ফ্রান্সের হতাশা বাড়ান তিনি। গোটা টুর্নামেন্ট জুড়েই দলকে হতাশ করেছেন এই তারকা। অতিরিক্ত সময়ের শেষ দিকে ফ্রান্সের সামনে আরও একটি সুযোগ আসে ম্যাচ নিজেদের করে নেওয়ার তবে এবারে ফ্রান্সকে হতাশায় ভাসান অলিভার জিরুড। আর তাতেই ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।

ম্যাচের ১৫তম মিনিটেই স্টিভেন জুবেরের দুর্দান্ত এক ক্রস থেকে ডি বক্সের ভেতর লাফিয়ে উঠে হেডে বল জালে পাঠান সেফেরোভিচ। এরপর প্রথমার্ধের বাকি সময়ট যেন নিজেদের ছায়া হয়েই ছিল ফ্রান্স। প্রথমার্ধের গোলের তেমন কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি বেনজেমা-গ্রিজম্যান-এমবাপেরা।

প্রথমার্ধে নিজেদের ছায়া হয়ে থাকা ফ্রান্স দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই কৌশলে পরিবর্তন আনে। ৪৭তম মিনিটে দূর থেকে গ্রিজম্যানের নেওয়া শট পোস্টের একটু বাইরে দিয়ে যায়। এর মিনিট পাঁচেক পরে ২-০ গোলের ব্যবধানে পিছিয়ে পড়তে পারত ফ্রান্স। তবে ত্রাতা হয়ে আসেন গোলরক্ষক হুগো লরিস।

ম্যাচের ৫২তম মিনিটে ডি বক্সের লাইনে জুবেরকে ডিফেন্ডার বেঞ্জামিন পাভার্ড ফাউল করলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে স্পট কিক থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন রিকার্দো রদ্রিগেজ। এরপরই জেগে ওঠে ফ্রান্সের আক্রমণভাগ। দুই মিনিটে বেনজেমার দুই গোলে লিড নেয় বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।

এমবাপে-বেনজেমার যুগলবন্দীতে ৫৭তম মিনিটে দুর্দান্ত এক গোল করে ফ্রান্সকে সমতায় ফেরান বেনজেমা। এমবাপের ডি বক্সের মুখে বাড়ানো বল সামনে ঝুঁকে থাকা বেনজেমার পেছনে ছিল। অসাধারণ দক্ষতায় বাঁ পায়ের ফ্লিকে বল সামনে টেনে নেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা, আর দ্বিতীয় টোকায় বল জালে জড়ান।

এর মিনিট দুই পরে ফ্রান্সের আক্রমণত্রয়ীর দারুণ বোঝাপড়ায় লিড নেয় তারা। এমবাপের কাছ থেকে বল পেয়ে গ্রিজম্যান ডি বক্সের ভেতর ক্রস করেন আর সেখান থেকে লাফিয়ে উঠে বল জালে জড়ান বেনজেমা। এরপর ম্যাচের ৭৫তম মিনিটে পল পগবার দূরপাল্লার দুর্দান্ত এক গোলে ব্যবধান ৩-১ করে ফ্রান্স।

এরপরে ম্যাচের চিত্র পাল্টে যায়। ৮১তম মিনিটে কেভিনের ক্রস থেকে সেফেরোভিচ গোল করে ব্যবধান ৩-২ করেন। এরপর ম্যাচের নির্ধারিত সময় শেষে যোগ করা অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে গ্যাভ্রানোভিচের গোলে ৩-৩ সমতায় ফেরে সুইজারল্যান্ড।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত