ক্রীড়া প্রতিবেদক

০৫ ডিসেম্বর, ২০১৫ ১৫:০৮

বিপিএলের ৬ আইকন, কে খেললেন কেমন

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) ত্রৃতীয় আসরে ঢাকা পর্বের প্রথম পর্ব ও চট্টগ্রাম পর্ব শেষ হয়ে যাওয়ার পর কেমন খেললেন ছয় ফ্রাঞ্চাইজির আইকন খেলোয়াড়েরা। তারা কি পেরেছেন প্রতিদান দিতে, কিংবা পেরেছেন কি নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে?

এমন অবস্থায় দেখে নেওয়া যাক আইকন খেলোয়াড়েরা এ পর্যন্ত কেমন খেললেন:

সাকিব আল হাসান (রংপুর রাইডার্স)
রংপুর রাইডার্সের সাকিব আল হাসান বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার, এবারের বিপিলে খেলছেন রংপুরের হয়ে। মাঠে রংপুরের আস্থার প্রতিদান অন্তত বোলিংয়ে ভালোভাবেই দিচ্ছেন সাকিব। ছয় ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে বিপিএলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় যুগ্মভাবে শীর্ষে এই বাঁহাতি স্পিনার।

প্রথম ম্যাচে উইকেটশূন্য অবস্থায় ম্যাচ শেষ করা সাকিব পরের পাঁচ ম্যাচেই ফিরিছেন স্বমূর্তিতে। ঢাকা ডিনামাইটস (৪/১৬) ও সিলেট সুপারস্টারসের (৩/৩১) তো দলের জয়ে সাকিবই ম্যান অব দ্য ম্যাচ।

বোলিংয়ে অনন্য সাকিব হলেও ব্যাট হাতে সাকিবকে চেনার উপায় নেই। ছয় ম্যাচে ১৬.৫০ গড়ে ৬৬ রানের পরিসংখ্যান বলছে সে কথাই। সর্বোচ্চ রান ৩৩। আর এক ম্যাচে আম্পায়ারের সঙ্গে অশোভন আচরণের দায়ে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়ে দুর্নাম কুড়িয়েছেন তিনি।

তামিম ইকবাল (চিটাগাং ভাইকিংস)
চিটাগং ভাইকিংসের আইকন তামিম ইকবালের তাঁর আট খেলায় ৪১.৪২ গড়ে ২৯০ রান, এবারের বিপিএলে যা সর্বোচ্চ। কিন্তু এমন ফর্মের পরও স্বস্তিতে নেই তিনি! আট ম্যাচের মধ্যে ছয়টিতেই যে হেরেছে দল! অধিনায়ক হিসেবে এর বড় দায় তিনি এড়াবেন কিভাবে!

মুশফিকুর রহিম (সিলেট সুপারস্টারস)
সিলেট সুপারস্টারসের আইকন মুশফিকুর রহিম ছয় ম্যাচে ৩৬.২৫ গড়ে ১৪৫ রান করেছেন। তবু দু-দুটো ম্যাচে দলের পরাজয়ের দায়ভার এসে যাচ্ছে অধিনায়কের কাঁধে। চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে শেষ বলে প্রয়োজন ছিল তিন রান। কিন্তু এক রানের বেশি নিতে পারেননি মুশফিক। দল হেরে যায় এক রানে।

এর বাইরে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ১৯তম ওভারের শেষ বলে কেন যে এক রান নিয়ে স্ট্রাইক ছাড়লেন, তিনিই জানেন! শেষ ওভারে আট রানের প্রয়োজনীয়তা নইলে হয়তো মেটাতে পারতেন মুশফিক। কিন্তু অজান্তা মেন্ডিসকে স্ট্রাইক দেওয়ায় শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট ওই লঙ্কান। সিলেট সুপারস্টারস হেরে যায় ছয় রানে। এই দুটো ম্যাচের ফল পক্ষে এলে সিলেটের বিপিএল-অভিযান অন্য রকম হতেই পারত-এই বিশ্বাসের পক্ষে পাল্লা বেশ ভারী।

মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ (বরিশাল বুলস)
বরিশাল বুলসের আইকন মাহমুদ উল্লাহ ছয় ম্যাচে ১৪১ রান করেন ৩৫.২৫ গড়ে। দুই খেলায় ফিফটি পেরিয়েছেন। উইকেট পেয়েছেন ২টি।

নাসির হোসেন (ঢাকা ডায়নামাইটস)
নাসির হোসেন ঢাকা ডায়নামাইটসের আইকন খেলোয়াড়। দলের এ অলরাউন্ডারের জন্য তো যথার্থ এই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট হলেও বিপিএলে একেবারে গড়পড়তা পারফরমার বনে গেছেন নাসির। চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে তিন উইকেট নেওয়া ম্যাচটিই যা একটু ব্যতিক্রম। তবু সব মিলিয়ে ছয় ম্যাচে ৪ উইকেট এবং ৯২ রান খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার মত কিছু কি?

মাশরাফি বিন মর্তুজা (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স)
মাশরাফি বিন মর্তুজা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের আইকন। ইনজুরির সঙ্গে তাঁর চিরন্তন যুদ্ধ চলছে বিপিএলে। যে কারণে সর্বশেষ ম্যাচে বোলিং পর্যন্ত করতে পারেননি। সব মিলিয়ে সাত খেলায় ৪৪.৬৬ গড়ে মাত্র তিন শিকারের পারফরমেন্সেও রয়েছে সেই ইনজুরির ছাপ।

এর বাইরে ব্যাটিংয়ে আবার চার ইনিংসের মধ্যেই ৪৬.৫০ গড়ে ৯৩ রান মাশরাফির। এর মধ্যে চিটাগংয়ের বিপক্ষে পাঁচ নম্বরে নেমে অপরাজিত ৫৬ রানের ইনিংসও রয়েছে।

পারফরমেন্সে সেভাবে না হলেও নেতৃত্বগুণে ঠিকই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসকে শীর্ষে তুলে এনেছেন মাশরাফি। ফ্রাঞ্চাইজি তাঁর নেতৃত্বগুণের ওপর কতখানি আস্থাশীল তার প্রমাণ ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে ম্যাচে বোলিং না করে কেবল অধিনায়কত্বের জন্যে ম্যাচে রেখেছিল। এটা হতে পারে বিপিএল ইতিহাসের এখন পর্যন্ত একমাত্র নজির।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত