স্পোর্টস ডেস্ক

০১ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৪:২০

জার্মানি কোস্টারিকার বাঁচামরার লড়াই আজ

টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কায় মাঠে নামতে যাচ্ছে জার্মানি। বাঁচা-মরার ম্যাচে তাদের লড়তে হবে কোস্টারিকার বিপক্ষে। শেষ ষোলোয় খেলার সম্ভাবনা তৈরি করতে কোস্টারিকার বিপক্ষে জিততেই হবে জার্মানিকে। এমন সমীকরণ মাথায় নিয়ে কাতারের আল বাইত স্টেডিয়ামে ‘ই’ গ্রুপের ম্যাচে রাতে মুখোমুখি হবে তারা। বাংলাদেশ সময় রাত ১টা শুরু হবে ম্যাচটি।

এদিকে গ্রুপ তালিকায় ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে স্প্যানিশরা। ৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে জাপান। কোস্টারিকার পয়েন্টও ৩। তবে ১ পয়েন্ট নিয়ে ধুঁকছে জার্মানি। পয়েন্ট ১ ও কোনো জয় না থাকলেও জার্মানদের আশা হারায়নি। আশাকে সত্যিতে রূপান্তর করতে জয়হীন কোনো পথ নেই জার্মানদের সামনে। একই অবস্থা কোস্টারিকারও। তবে দুই দলকেই বিদায় করে দিতে পারে একটি ড্র। স্পেন-জাপান ড্র করলে স্পেনের ৫ আর জাপানের ৪ পয়েন্ট হবে। তখন কোস্টারিকাকে ১-০ গোলে হারিয়ে ৪ পয়েন্ট পেলে গোলগড় সমান হবে জার্মানি ও জাপানের। লাভ হবে না।

মুখোমুখি লড়াইয়ে জাপানের কাছে হেরে যাওয়ায় বিদায় নিতে হবে জার্মানিকে। তাই আজ স্পেন জার্মানির ‘বন্ধু’ হবে। জাপানকে হারালে আর জার্মানি কোস্টারিকাকে ২-০তে হারালে দুই ইউরোপিয়ান জায়ান্ট যাবে পরের রাউন্ডে। স্পেন হারলেও ক্ষতি নেই। অন্য দলের সঙ্গে পয়েন্ট সমান হলেও কোস্টারিকাকে ৭ গোল দেওয়ায় তাদের গোলগড় অনেক বেশি। আর কোস্টারিকা জার্মানিকে হারালে, ওদিকে স্পেন জাপানকে হারালে তারা পরের রাউন্ডে সঙ্গী হবে স্প্যানিশদের। এছাড়া নিজেদের ম্যাচ ড্র এবং স্পেন জাপানকে হারালেও চলবে কোস্টারিকার।

স্বাভাবিকভাবেই বড় দল হিসেবে জার্মানি জয় দিয়ে পরের রাউন্ডে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু কোস্টারিকা কোচ লুইস ফার্নান্দো বড় হুঙ্কার ছেড়ে রেখেছেন। ফর্মের সঙ্গে আড়ি থাকা চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের একটুও ভয় পায় না বলে ফার্নান্দো বলেন ‘আমরা এখানে কাতারের বিভিন্ন দৃশ্যের সঙ্গে ছবি তুলতে আসিনি। প্রথম ম্যাচ বাজেভাবে হারলেও মনে রাখতে হবে আমরা কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে জিতেছি। প্রতিপক্ষ জার্মানি বলেই আমাদের নিয়ে কেউ এখনই কিছু লিখে দিতে পারেন না। ওরা যে জাপানের কাছে হেরেছে, তাদের আমরা হারিয়েছি। তাহলে জার্মানি কেন নয়।

গত বিশ্বকাপেও শেষ ম্যাচের আগে এই অবস্থায় পড়েছিল জার্মানি। দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে হলে শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে জিততেই হতো। কিন্তু তখনকার চ্যাম্পিয়নরা ওই ম্যাচ হেরে যায় ২-০তে। এবারও একই অবস্থার সামনে দাঁড়িয়ে টমার মুলার সেই লজ্জার পুনরাবৃত্তি এড়াতে চাইছেন, ‘আমরা যথেষ্ট লজ্জিত হয়েছি, আর না। আমাদের অত উচ্চাভিলাষী হওয়ার সুযোগ নেই।’

কোস্টারিকার সঙ্গে জার্মানি মাত্র একবারই খেলেছে। ২০০৬ বিশ্বকাপে জিতেছে তারাই। শুধু কোস্টারিকা নয়, কনকাকাফ অঞ্চলের প্রতিপক্ষদের সঙ্গে আরও ৫ ম্যাচে জিতেছে জার্মানরা। তবুও কোস্টারিকানদের সঙ্গে জোড় গলায় কিছু বলতে পারছেন না মুলাররা। স্পেনের বিপক্ষে ড্র করা পারফরম না দেখালে শেষ ম্যাচের আগে আত্মবিশ্বাসও থাকত না দলটির। মুলার বলেন, ‘স্পেনের বিপক্ষে বিশ্বকে দেখিয়েছি আমরা কতটা শক্ত। ফুটবলবিশ্ব যখন জার্মানি-কোস্টারিকা ম্যাচে তাকায় তখন অবশ্যই আমাদের ফেভারিট হিসেবে ধরে নেয়। ফেভারিট মানে জিততেই হয়। আর আমরাও জানি এটাই আমাদের কাজ।’

এদিকে ড্র করলেও চলছে যে স্পেনের তারা জয়ের কথাই ভাবছে। কোচ লুইস এনরিকে সরাসরি জানলেন, ‘আপনারা অনেক হিসাব করতেই পারেন। এটা সবাই করবে। কিন্তু আমাদের জন্য বিষয়টা সহজ। যদি ধারাবাহিকতা রাখতে চাই তবে অবশ্যই জয় নিয়ে পরের রাউন্ডে যাওয়া এবং কোনো সন্দেহ নেই আমরা অবশ্যই নিজেদের ধারাবাহিক দেখতে চাই।’

স্পেন গ্রুপের শীর্ষ দল হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে গেলে এবং ওই পর্বে জিতলে শক্ত বাধা অপেক্ষা করছে। কারণ জি গ্রুপ থেকে সেরা হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের সামনে পড়তে পারে ব্রাজিল। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের নিয়ে কোনো ভয় আছে কিনা এই প্রশ্নে অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার কোকে বলেন, ‘অবশ্যই আমরা কোনো দলকেই ভয় পাই না। তবে আমরা এখনই কোয়ার্টার ফাইনাল নিয়ে ভাবছি না। এখন জাপানের বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচ এবং দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচ বাকি।’ এদিকে জার্মানিকে হারানো জাপান নিজেদের বিশ্বকাপ অভিযান ধরে রাখতে আরেকটি অঘটন দেখাতে চায়। দলের কোচ হাজিমে মোরিয়াসু বলেন, ‘স্পেন বিশ্বের অন্যতম সেরা দল। তারা এর প্রমাণ দিয়েছে দলগত পারফরম করে। আমরা ওদের এই বাধা টপকাতে চাই। আগে কী হয়েছে তা অতীত, কিন্তু অবশ্যই সেসব থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া যায়। আমরা আজো স্পেনকে হারিয়ে বড় পদক্ষেপ নিতে পারি।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত