স্পোর্টস ডেস্ক

২৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৬:০৯

টাইগারদের কোচ হয়ে ফিরতে পারেন হাথুরুসিংহে

গত অক্টোবরে সিডনিতে গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে কোচ হয়ে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। বিসিবি থেকে প্রস্তাব পাওয়ার কথা স্বীকার করে জানিয়েছিলেন, উপযুক্ত সময়ের অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি। অবশেষে সেই 'উপযুক্ত সময়' বোধহয় চলে এসেছে। ফের সাকিবদের প্রধান কোচ হয়েই ফিরতে পারেন সাবেক এই লঙ্কান কোচ। যদিও হাথুরুসিংহে ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার মাইক হাসি ও দক্ষিণ আফ্রিকার ল্যান্স ক্লুজনারের নাম রয়েছে সম্ভাব্য তালিকায়। টেস্টের জন্য খণ্ড কালীন হিসেবে ইংল্যান্ড দলের ব্যাটিং কোচ মাইক হাসিকেও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

তবে বিসিবি সূত্রের খবর, সম্ভাবনা হাথুরুসিংহেরই বেশি। নতুন বছরেই তাঁর সঙ্গে চুক্তি হতে পারে বিসিবির। সে ক্ষেত্রে ওয়ানডে আর টেস্টের জন্য প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করবেন হাথুরু।

তবে একটি ব্যাপার এরই মধ্যে পরিস্কার হয়ে গেছে, রাসেল ডমিঙ্গোকে জাতীয় দলের সঙ্গে আর রাখবে না বিসিবি। যদিও চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত চাকরি রয়েছে ডমিঙ্গোর। কিন্তু সেই চুক্তিতে এটাও রয়েছে, এক বছর আগে দুই পক্ষের সমঝোতায় চুক্তি বাতিল হতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিসিবি পরিচালক নিশ্চিত করেছেন, ডমিঙ্গোকে এইচপি দলের দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যদি তিনি তাতে রাজি হয়ে যান, তাহলে আগামী এক বছর এইচপিতে থাকবেন ডমিঙ্গো। আর তাতে রাজি না হলে আর্থিক ব্যাপারগুলো মিটিয়ে ফেলা হবে তাঁর সঙ্গে।

গেল টি২০ বিশ্বকাপের আগে থেকেই ডমিঙ্গোকে বিশ্রামে রেখে শ্রীধরন শ্রীরামকে টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। পদবি যাই হোক, আপাতত শ্রীরামই যে বাংলাদেশ টি২০ দলের প্রধান কোচ, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে সবার কাছেই। বিসিবি সূত্রের খবর, শ্রীরামের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট হয়ে বোর্ড আগামী ২০২৪ টি২০ বিশ্বকাপ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে ডমিঙ্গোকে সরিয়ে ওয়ানডে এবং টেস্ট দলের কোচিং স্টাফেও ব্যাপক পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে বিসিবি।

এরই মধ্যে নাকি এ ব্যাপরে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনও সবুজ-সংকেত দিয়েছেন। মূলত কোচিং স্টাফে একজন সক্রিয় কোচকেই চাইছে বিসিবি, যে কিনা তাঁর যুক্তি দিয়ে পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করতে পারেন। সমালোচনার ভয়ে পিছিয়ে না গিয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন গেম প্ল্যানিংয়ে। ডমিঙ্গোর মধ্যে এসব কিছু ব্যাপার অনুপস্থিতি ছিল বলে মনে করেন বিসিবির অনেক নীতিনির্ধারক। সিনিয়রদের না চটিয়ে, তাদের ভুলগুলো না ধরিয়ে সবকিছুতে এক ধরনের 'মেনে নেওয়া' পথে চলতেন ডমিঙ্গো। যার প্রভাব দলের পারফরম্যান্সেও পড়েছিল। এ জন্যই বিসিবি কোচ হিসেবে এমন একজন ব্যক্তিত্বকে চাইছিলেন, যে কিনা ড্রেসিংরুমে তাঁর ক্রিকেটীয় পরিকল্পনাগুলো সফলভাবে কার্যকর করতে পারেন। যদিও নাজমুল হাসান পাপন সোমবার এক অনুষ্ঠান শেষে মিডিয়ার সামনে বলেছেন, হাথুরু আমাদের দেশের মাটিতে জিততে শিখিয়েছেন। আর ডমিঙ্গো শিখিয়েছেন বিদেশের মাটিতে জিততে।

ডমিঙ্গোকে নিয়ে এটুকু সৌজন্য দেখাতেই পারেন বিসিবিপ্রধান। তবে ভেতরের খবর হলো- হাথুরুর মতো কঠোর ব্যক্তিত্বের কোচই খুঁজছে বিসিবি। ২০১৪ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত সফলভাবে বাংলাদেশের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেছিলেন হাথুরু। ওই সময়ে ঘরের মাঠে ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারায় বাংলাদেশ। ৫১ ওয়ানডের মধ্যে ২৫টিতে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। ২৯ টি২০'র ১০টিতে আর টেস্টে ২১ ম্যাচের ৬টিতে জয় ছিল বাংলাদেশের। এর পর নিজের দেশের দায়িত্ব নিতে বিসিবির চাকরি ছেড়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশ-পরবর্তী তাঁর সেই কোচিং ক্যারিয়ার খুব একটা সফল ছিল না।

অস্ট্রেলিয়ায় বর্তমানে একটি একাডেমির দায়িত্ব পালন করছেন হাথুরু। সমকালের সঙ্গেই খোলামেলা আড্ডায় হাথুরু জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে ফিরতে তাঁরও খুব ইচ্ছা করে। তিনি মিস করেন মিরপুরের গ্যালারি, মিস করেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের। চুক্তি হয়ে গেলে সবকিছুই আবার ফিরে পাবেন হাথুরু।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত