স্পোর্টস ডেস্ক

০৮ মার্চ, ২০২৪ ২৩:০০

বিসিবির আয়োজনে এবার জাকের-শাকিলার প্রশ্নোত্তর

বাংলাদেশ দলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার জাকের আলি অনিকের দুরন্ত ইনিংসের কথা মনে আছে সকলের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৩৪ বলে ৬৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন সেদিন। ২০০ স্ট্রাইকরেটের ওই ইনিংসে ছিল ৪টি চার এবং ৬টি ছয়ের মার। ম্যাচ যদিও হেরেছিল বাংলাদেশ, তবে ওই ইনিংস মনে ধরেছে সকলের।

মাঠে জাকের আলি অনিকের বীরত্বের সঙ্গে মাঠের বাইরে ছিল তার বোন শাকিলা ববির উচ্ছ্বাস। ভাইয়ের দুর্দান্ত ইনিংসে বোনের উচ্ছ্বাস স্বাভাবিকই, তবে এই স্বাভাবিকতার সঙ্গে ওঠে এসেছে ভাইকে এই পর্যায়ে নিয়ে আসা বোনের অবদানের কথাও।

খেলা শেষে তাই গণমাধ্যম হুমড়ি খেয়ে পড়েছে বোন পেশাদার সাংবাদিক শাকিলা ববির প্রতিক্রিয়ায়। শাকিলা ববি অকপটে জানিয়েছেন সে কথা। সংবাদ সম্মেলনেও বোন সাংবাদিক শাকিলা ববি প্রশ্ন করেছেন ভাই ক্রিকেটার জাকের আলি অনিককে।

প্রথম ওয়ানডেতে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে জিতেছে বাংলাদেশ। জয় পাওয়া ম্যাচে ব্যাট করতে নামতে হয়নি অনিককে।

ভাই-বোনের প্রশ্নোত্তর থেমে থাকেনি ওখানে। এবার এখানে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিসিবি প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা গেছে, জাকের ও তার সাংবাদিক বোন শাকিলা ববি একে অপরকে প্রশ্ন করছেন। আর এই প্রশ্নোত্তরেই উঠে এসেছে ক্রিকেটার জাকেরের গল্প।

সাংবাদিক শাকিলা ববি প্রথমে জাকেরের জাতীয় দলে খেলার অনুভূতি জানতে চান। জাকের বলেন, ‘আসলে খুব ভালো একটা অনুভূতি। জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন সবার থাকে। ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল জাতীয় দলে খেলব, ম্যাচ জেতাব। আলহামদুলিল্লাহ, সবকিছু মিলিয়ে ভালো লাগছে।’

জাকের আলি অনিকের বাবা নেই। চার বছর আগে মারা গেছেন। তার বাবার স্বপ্ন ছিল, মাঠে বসে জাকেরের খেলা দেখবেন। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। পরিবার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে হাসিমুখে জাকের বলেছেন, ‘সবারই ভূমিকা ছিল। ভাইয়ের ভূমিকা ছিল। আপনারও ভূমিকা ছিল (বোনকে দেখিয়ে), আপনি অনেক কষ্ট করেছেন। আমাকে অনুশীলনে নিয়ে গিয়েছেন। সবারই স্বপ্ন ছিল, আমাকে এই জায়গাটায় দেখা। এখন আমার দায়িত্ব, কীভাবে আমি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি, দেশকে জেতাতে পারি। আমার মনে হয়, এখন কাজটা আরও বেড়েছে। প্রত্যাশামতো কাজটা করার চেষ্টা করব।’

হবিগঞ্জের ছেলে জাকের নিজ এলাকার মানুষ সম্পর্কে বলেছেন, ‘ছোটবেলা থেকেই হবিগঞ্জের সবাই আমার জন্য দোয়া করত। সবাই চাইত আমি যেন জাতীয় দলে খেলি। ঈদে যখনই যেতাম বলত, “তুই কবে খেলবি?” আমি শুধু বলতাম, সবাই ধৈর্য ধরে দোয়া করেন, আমার সময় এলে খেলব।’

এরপর জাকের তার বোনকে প্রশ্ন করেন। জানতে চান, ভাইকে জাতীয় দলে খেলতে দেখে তার কেমন লাগছে। শাকিলার উত্তর, ‘এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশের মতো না। অনেক দিন ধরে চেয়েছি, সেই ছোটবেলা থেকেই। এটা অনেক ভালো লাগার মুহূর্ত। আপনি ভালো বুঝবেন, আপনি জানেন আমাদের ইচ্ছা কতটা ছিল। প্রেসবক্সে বসে চোখে পানি আসছিল, বারবার মুছছিলাম। বাসায় সবাই টিভিতে খেলতে দেখে কান্না করছিল। আমি মাঠে অমনই বসে ছিলাম।’

শাকিলা ববি দৈনিক খবরের কাগজ পত্রিকার সিলেট প্রতিনিধি এবং সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর অনলাইনের প্রথমে হবিগঞ্জ প্রতিনিধি এবং পরে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করছেন। শাকিলা ববির স্বামী মামুন হোসেন দৈনিক খবরের কাগজ পত্রিকার ফটোসাংবাদিক।

শাকিলা ববি হবিগঞ্জ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়কও। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে চারজন খেলাধুলা করেছেন। জাকেরের প্রয়াত বাবা বাংলাদেশ আর্মির অ্যাথলেট ছিলেন। এ ছাড়া জাকেরের স্ত্রী নাফিসা তাবাসসুম জাতীয় পর্যায়ের শুটার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত