সিলেটটুডে ডেস্ক

১৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১৮:১৪

শততম টেস্টে সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে মুশফিক

৯০তম ওভারের পঞ্চম বলে সিঙ্গেল নিয়ে মুশফিকুর রহিম যখন নন-স্ট্রাইক প্রান্তে গেলেন, তখনই নিশ্চিত হয়ে গেল অপেক্ষার পালা দীর্ঘ হচ্ছে। বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলতে নামা অভিজ্ঞ ব্যাটার দিন শেষে অপরাজিত থেকে গেলেন ৯৯ রানে। স্মরণীয় এই উপলক্ষ সেঞ্চুরি দিয়ে রাঙিয়ে রাখতে তার চাই আর মাত্র ১ রান।

বুধবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে টস জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ প্রথম দিনে তুলেছে ৪ উইকেটে ২৯২ রান। মুশফিকের সঙ্গে ৯০ রানের অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেট জুটি গড়া লিটন দাস খেলছেন ৪৭ রানে। আগামীকাল আর ১ রান করতে পারলেই ইতিহাসের ১১তম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০তম টেস্টে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়বেন মুশফিক।

টেস্ট ম্যাচে সাধারণত গ্যালারি ফাঁকা থাকলেও মুশফিকের সেঞ্চুরি মাঠে বসে দেখতে পড়ন্ত বিকালে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে হাজির হন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দর্শক। মুশফিক নব্বইয়ের ঘরে যাওয়ার পর প্রতিটি রানের সঙ্গে সঙ্গে তারা তুলতে থাকেন আওয়াজ। দিনের শেষ ওভারগুলোতে তীব্র কৌতূহল ছিল তিনি এদিনই সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে পারেন কিনা। তবে নিজের পাশাপাশি গোটা বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের অপেক্ষায় রাখলেন মুশফিক।

৯০ ওভার পূর্ণ হওয়ার পর মাঠে দুই দলের খেলোয়াড় ও আম্পায়ারদের অঙ্গভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছিল, হয়তো আরেকটি ওভার খেলা হতে পারে। কিন্তু তা হয়নি। সাবলীল ব্যাটিংয়ে ১০৯ বলে ফিফটি ছোঁয়া মুশফিক খেলেছেন ১৮৭ বল। তার ইনিংসে চার পাঁচটি। ৮৬ বল খেলা লিটনের ব্যাট থেকে এসেছে দুটি চার।

প্রথম সেশনে ৩১ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১০০ রান করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনেও খেলা হয় ৩১ ওভার। কোনো উইকেট না হারিয়ে তারা যোগ করে ৯২ রান। এরপর তৃতীয় সেশনে ২৮ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে আরও ১০০ রান যোগ হয় স্বাগতিকদের স্কোরবোর্ডে।

বাংলাদেশের প্রথম তিন ব্যাটার ভালো শুরু পেলেও ফিফটি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেন শুধু মুমিনুল হক। তিনি করেন ১২৮ বলে একটি চারের সাহায্যে ৬৩ রান। দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ৮৬ বলে ৩৪ ও সাদমান ইসলাম ৪৪ বলে ৩৫ রান করেন। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত অবশ্য সুবিধা করতে পারেননি। ১১ বলে মাত্র ৮ রান করে ফেরেন সাজঘরে। বাংলাদেশের পতন হওয়া সবগুলো উইকেট গেছে ৮২ রান খরচ করা আয়ারল্যান্ডের অফ স্পিনার অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের ঝুলিতে।

এর আগে ইতিহাস গড়ার উপলক্ষ উদযাপন করতে দিনের শুরুতে আবেগ-গৌরবমাখা সংবর্ধনা পান ৩৮ বছর বয়সী মুশফিক। সকাল সোয়া নয়টায় টস হওয়ার পর শুরু হয় আয়োজন। শুরুতেই মুশফিকের হাতে '১০০' খোদাই করে লেখা বিশেষ টেস্ট ক্যাপ তুলে দেন হাবিবুল বাশার সুমন, যিনি সেই ২০০৫ সালে লর্ডসে মুশফিকের অভিষেক টেস্টেও তার মাথায় পরিয়ে দিয়েছিলেন টেস্ট ক্যাপ।

এরপর মুশফিকের হাতে টেস্ট ক্যাপ ক্যাসকেট তুলে দেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ক্রিকেটার আকরাম খান। বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও নাজমুল আবেদিন তুলে দেন বিশেষ ক্রেস্ট। সবশেষে প্রথম টেস্টের অধিনায়ক বাশার ও শততম টেস্টের অধিনায়ক শান্ত মিলে তুলে দেন সতীর্থদের স্বাক্ষর করা জার্সি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত