ক্রীড়া প্রতিবেদক

১৩ মার্চ, ২০১৬ ২২:০২

বৃষ্টির শহরে তামিম ঝড়

ধর্মশালায় বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বৃষ্টি যেনো পিছুই ছাড়ছে না। প্রতিদিনই হানা দিচ্ছে বৃষ্টি। পন্ড হচ্ছে ম্যাচ। রোববার রাতে এই বৃষ্টির শহরে ঝড় হলো। এই ঝড়ের নাম তামিম ইকবাল। ওমানের বোলারদের ওপর রীতিমতো ঝড় বইয়ে টি২০তে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিলেন এই ড্যাশিং ওপেনার।


তামিম ইকবালকে নিয়ে সমালোচনার অন্ত নেই। তামিম এক ম্যাচ খারাপ করলেই সমালোচনার কাঁটায় বিদ্ধ হতে হয়। তিনি দায়িত্বশীল না, ধারাবাহিক না- এমন কত সমালোচনা। অথচ এই টুর্নামেন্টে দায়িত্বশীলতা আর ধারাবাহিকতা্রই অপর নাম তামিম ইকবাল। টানা তৃতীয় ম্যাচে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ স্কেরার তিনি। আজ তো একেবারেই শতক পূর্ণ করেই ছাড়লেন। ৬০ বলে অসাধারণ এক সেঞ্চুরিতে ইতিহাসে নাম লেখালেন এই বাঁহাতি।

এরআগে ওমানের বিপক্ষে নিজের ১১ রানেই আরেকটি ইতিহাস গড়েন তামিম। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে টি-২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করলেন এই তারকা ওপেনার। ম্যাচের পঞ্চম ওভারে অজয় লালচেতার বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে অনন্য এই কীর্তি গড়েন তিনি। দেশের পক্ষে টেস্ট এবং ওয়ানডেতেও সর্বোচ্চ রানের মালিক তামিম।

প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ৮৩, ২য় ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২৬ বলে ৪৭ আর আজ ওমানের বিপক্ষে অপরাজিত ১০৩। তামিম ছাড়া আর কাকে বলা হবে দেশের সেরা ব্যাটসম্যান।

রবিবার রাতে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান ওমানের অধিনায়ক সুলতান আহম্মেদ। এদিন যেন শুরু থেকে স্বস্তিতে ছিলেন না তিনি। শুরুতে কিছুটা অস্বস্থিতে ছিলেন দুই অপেনার। বিশেষত কিছুতেই যেন টাইমিং মেলতে পারছিলেন না সৌম্য। অবশেষে ৬.৫ ওভারে দলীয় ৪২ রানে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেন সৌম্য সরকার। ২২ বলে মাত্র ১২ রান করে লালচেতার বলে বোল্ড হন সৌম্য!

সৌম্য আউট হওয়ার পর যেনো নিজের ছন্দ ফিরে পেলেন তামিম। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে থাকেন ফর্মে থাকা সাব্বির। তামিম-সাব্বির ৯.১ ওভারে ৯৭ রনের পার্টনারশিপ গড়ে তুলেন। ষোলোতম ওভারের শেষ বলে দলীয় ১৩৯ রানে খওয়ার আলীর বলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে বোল্ড হন সাব্বির। আউট হওয়ার আগে ৫ চার ও ১ ছয়ে ২৬ বলে ৪৪ রান করেন ইনফর্ম এই ব্যাটসম্যান।

মাঝপথে সাব্বির ফিরে গেলেও তামিম এদিন দুর্দদমনীয়। ডাউন দ্যা উইকেটে এসে যেভাবে একের পর এক ওমানের বোলারদের সীমানা ছাড়া করছিলেন, তাতে কেবল ক্রিকেটের নবাগত এই দলটির বোলরারা কেনো, মূলপর্বে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হওয়া বোলারদের বুকেও কাঁপন লাগার কথা।

মূলে পর্বে যেতে হলে ওমানের বিরুদ্ধে ম্যাচটি জিততেই হবে- এমন কঠিন সমীকরণের মুখে টস হেরে ম্যাচ শুরু করে টাইগগারা। তবে যত সময় যাচ্ছিলো ততই বাংলাদেশের সাথে ওমানের ক্রিকেট শক্তির পার্থক্যটা বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন তামিম। বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন কেনো তিনি দলের সেরা ব্যাটসম্যান।

তামিমের ব্যাট হাসছে। বাংলাদেশ চাইবে এই হাসিটা যেনো পুরো বিশ্বকাপজুড়েই থাকে। তামিমের ব্যাটে হাসি মানে তো বাংলাদেশ দলের মুখেই হাসি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত