স্পোর্টস ডেস্ক

২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৭:২৮

হতাশায় আচ্ছন্ন জিনেদিন জিদান!

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে রিয়াল মাদ্রিদ কোচ জিনেদিন জিদান নিজের হতাশায় আচ্ছন্ন চেহারাটা গোপন করতে পারলেন না। চ্যাম্পিয়নস লিগে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে দুবার এগিয়ে গিয়েও ২-২ গোলে ড্রয়ের পর একটি কথা তিনি বললেন বেশ কয়েকবার, ‘হৃদয়বিদারক।’

কথাটার ব্যাখ্যাও দিলেন ফরাসি কোচ, ‘পুরো ব্যাপারটাই হৃদয়বিদারক। কারণ এই ম্যাচে আমরা ভালো খেলেছি। যা করতে চেয়েছি, সেটাই করেছি। রক্ষণ দারুণ খেলেছে। ভালো খেলেছে আক্রমণও। কিন্তু দিনের শেষে সেই একই ফল। গত তিনটি ম্যাচেই একই ফল। আমার হৃদয়টা ভেঙে গেছে, খেলোয়াড়দের কারণেই। ওদের প্রাপ্যটা ওরা পায়নি।’

মনটা খারাপ হয়ে গেলেও মাথা উঁচুই রাখছেন জিদান, ‘ম্যাচটা আমরা ভালো খেলেছি। দিনের শেষে ড্রটাও খুব মন্দ কিছু নয়। তবে ভালো খেলেও জয় না পাওয়ায় সবার মন খারাপ।’

টানা তিনটি ম্যাচে জিততে পারেনি রিয়াল। স্প্যানিশ লা লিগায় বার্সেলোনার টানা ১৬ জয়ের রেকর্ডে ভাগ বসালেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ছাপিয়ে যেতে পারেনি তারা; বরং বার্সেলোনাকে ছাপিয়ে যাওয়ার ম্যাচটি থেকেই ভাগ্য বিপর্যয়ের শুরু। লা লিগায় পরপর দুটো ম্যাচে ড্র করে লিগের পয়েন্ট টেবিলে পিছিয়ে পড়া বার্সেলোনাকে কাঁধে নিশ্বাস ফেলতে দেওয়ার দায়ও রিয়ালেরই। এবার চ্যাম্পিয়নস লিগে ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে জেতার অবস্থানে থেকেও ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়াটা রিয়াল–সমর্থকদের মন খারাপ করে দিচ্ছেই।

পুরো ব্যাপারটি খেলারই অংশ মনে করেন জিদান, ‘ফুটবল খেলাটিই মাঝেমধ্যে এমন হয়ে যায়।  খেলাটিই এমন যে মাঝেমধ্যে খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তবে আমরা মাথা নিচু করছি না। আমরা এগিয়ে যাব। যেভাবে এগোনো শুরু করেছি। আমরা অবশ্যই নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করব।’

নিজেদের মাঠে অবশ্য ভালোই খেলেছে ডর্টমুন্ড। ম্যাচের প্রথম থেকেই রিয়ালকে চেপে ধরে তৈরি করেছে একের পর এক সুযোগ। রিয়াল গোলকিপার কেইলর নাভাস যেন চীনের প্রাচীর হয়ে উঠেছিলেন ডর্টমুন্ড ফরোয়ার্ডদের সামনে। তবে খেলার ধারার বিপরীতে ১৭ মিনিটে গোল করে রিয়ালকে এগিয়ে নেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের এই গোলে অবদান ছিল রিয়াল ফরোয়ার্ডদের দারুণ বোঝাপড়া। শেষ পাসটি রোনালদোর দিকে বাড়িয়েছিলেন অবশ্য গ্যারেথ বেলই। এটি ছিল রোনালদোর ৯৫তম চ্যাম্পিয়নস লিগ গোল।

৪৩ মিনিটে গোলটি শোধ করে দেন পিয়েরে এমরিক আবেমেয়াং। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও রিয়ালের রক্ষণকে কাঁপিয়ে দেয় ডর্টমুন্ডের একের পর এক আক্রমণ।

৬৮ মিনিটে রিয়ালকে ২-১ গোলে এগিয়ে দেন রাফায়েল ভারানে। এটি অবশ্য হতে পারত করিম বেনজেমারই গোল। তাঁর শট বারে লেগে ফেরত এলে ফিরতি বলে গোল করেন ভারানে। ৮৭ মিনিটে আন্দ্রে শুরলের দুর্দান্ত এক শটে জয়বঞ্চিত হয় রিয়াল।

ভালো খেলেছে দল, জয়ও পেতে পারত। কিন্তু রিয়ালের কাছ থেকে ২ পয়েন্ট কেড়েও খুশি ডর্টমুন্ড কোচ টমাস টাচেল। দুবার পিছিয়ে পড়েও দলের খেলায় ফেরার ব্যাপারটিই তাঁকে আনন্দিত করছে সবচেয়ে বেশি, ‘দুবার পিছিয়ে পড়েও খেলায় ফেরার ব্যাপারটিই ভালো লাগছে। আমরা তো আর হারিনি! তবে যে খেলা খেলেছি ডর্টমুন্ড কিন্তু জিততেও পারত।’

টাচেলের মতে, দ্বিতীয়ার্ধে ডর্টমুন্ড খারাপ খেলেছে। তবে দলের মানসিক দৃঢ়তাই তাঁকে সবচেয়ে বেশি তৃপ্তি দিচ্ছে, ‘দ্বিতীয় গোলের পর আমরা মানসিকভাবে চাঙা ছিলাম। আমরা দৃঢ়তাপূর্ণ ফুটবল খেলেছি।’
সূত্র : এএফপি, রয়টার্স

আপনার মন্তব্য

আলোচিত