স্পোর্টস ডেস্ক

০৫ জুলাই, ২০১৭ ১২:৫১

নিজেকে আন্ডারগ্রাউন্ড প্রতিযোগী মনে করেন কেভিতোভা

কে হবেন এবারের উইম্বলডনে মেয়েদের চ্যাম্পিয়ন? সম্ভাব্য দুটি নামের একটি তাঁর হবে বেশির ভাগ উত্তরে। অথচ স্বয়ং পেত্রা কেভিতোভাই ফেবারিট মনে করেন না নিজেকে!

গত ডিসেম্বরে বাসায় ঢুকে পড়া চোরের ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছিলেন কেভিতোভা। যে বাঁ হাতে টেনিস খেলেন, সেই বাঁ হাতটাতেই পড়েছিল ছুরির পোঁচ। ভয় ঢুকে গিয়েছিল মনের মধ্যে-আর হয়তো টেনিস খেলাই হবে না! বিশ্রাম আর পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার পর মে মাসে কোর্টে ফিরেছেন কেভিতোভা। সেই ঘটনার পর এই উইম্বলডন তাঁর তৃতীয় টুর্নামেন্ট। প্রথম রাউন্ডে ৬-৩, ৬-৪ গেমে সুইডেনের ইউহানা লারসেনকে হারিয়ে দেওয়া কেভিতোভা বাজির দরেও ফেবারিট।

সেরেনা-শারাপোভার অনুপস্থিতিতে এই উইম্বলডনের শিরোপার লড়াই অনেকটাই উন্মুক্ত। মহিলা বিভাগে ক্যারোলিনা প্লিসকোভা, দর্শকপ্রিয় স্বাগতিক জোহানা কন্তা, গারবিনিয়ে মুগুরুজা এবং ফ্রেঞ্চ ওপেনের বিস্ময় চ্যাম্পিয়ন ইয়েলেনা অস্তাপেঙ্কোরা থাকলেও টেনিস-বোদ্ধাদের অনেকের চোখেও কেভিতোভাই সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন।

কেভিতোভা নিজে অবশ্য এখনই এত দূরের কথা ভাবছেন না। লন্ডনের বিখ্যাত পাতাল রেলের উপমা টেনে নিজেকে তিনি বলছেন ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ প্রতিযোগী। স্বপ্নের গন্তব্য এখনো ছয় স্টেশন দূরে।

এখনই তাই ‘শেষ স্টেশনের’ দিকে না তাকিয়ে ম্যাচ ধরে ধরেই এগোতে চাইছেন টুর্নামেন্টের একাদশতম বাছাই কেভিতোভা। দ্বিতীয় রাউন্ডে আজ তাঁর প্রতিপক্ষ যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাডিসন ব্রেঙ্গল। আপাতত সব মনোযোগ এটির ওপরই, ‘বুধবারের ম্যাচটি যাতে আমি আমার মতো খেলতে পারি, আপাতত এটাই চাওয়া। এখনই নিজেকে এত দূরে দেখছি না আমি। ম্যাচ ধরে ধরেই এগোতে চাই। আমি সত্যিই নিজেকে টুর্নামেন্টের ফেবারিট হিসেবে ভাবছি না নিজেকে।’

ডিসেম্বরে তাঁর ছুরিকাহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে চেক পুলিশ এখনো তদন্ত করছে বলে এ বিষয়ে সরাসরি কিছু বলতে রাজি নন কেভিতোভা। তবে একেবারে এড়িয়েও যেতে পারেননি, ‘মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে ফেলে, এমন পরিস্থিতি সব সময়ই কঠিন। মেয়েদের জন্য আরও কঠিন। কারণ আমরা মেয়েরা বেশি সংবেদনশীল এবং আবেগপ্রবণ।’ ছুরিকাহত হওয়ার পর কোর্টে এখনো ‘স্বাভাবিক’ হতে পারেননি কোভিতোভা। র‍্যাকেট শক্তভাবে ধরে রাখার জন্য প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে হাতে ক্রিম ব্যবহার করেছেন।

১১ বছরের ক্যারিয়ারে উইম্বলডনের বাইরে কোনো গ্র্যান্ড স্লাম টুর্নামেন্টে ফাইনালে খেলা হয়নি কেভিতোভার, তবে অল ইংল্যান্ড ক্লাবেই শিরোপা জিতেছেন ২০১১ ও ২০১৪ সালে। ম্যাচ জিতছেন, মুঠোবন্দী হাত শূন্যে ছুড়ছেন-উইম্বলডনের দর্শকদের কাছে এটাই কেভিতোভার উদ্‌যাপনের চিরচেনা ভঙ্গি। অথচ এবার প্রথম রাউন্ডের ম্যাচটা জয়ের পর সেভাবে তাঁকে উদ্‌যাপন করতে দেখা যায়নি। ঝুঁকি থাকায় সংযতই থাকছেন। তবে সময় এলেই হয়তো করবেন-শেষ স্টেশনে স্বপ্ন-গাড়ি থামার পর!

কিন্তু সে চিন্তা এখন নয়। আপাতত উইম্বলডনে ফিরে আসতে পারায় খুশি কেভিতোভা, ‘দর্শকদের কাছ থেকে আমি শক্তি পাই। উইম্বলডনের সুন্দর এই সেন্টার কোর্টে আবার ফিরে আসতে পারাটা অসাধারণ। এটাই আমার প্রিয় কোর্ট। ফিরে এসে উইম্বলডনে খেলব-এটাই ছিল আমার অনুপ্রেরণা। আমি খুব খুশি যে স্বপ্নটা সত্যি হয়েছে।’
সূত্র: এএফপি

আপনার মন্তব্য

আলোচিত