স্পোর্টস ডেস্ক

০৬ জুন, ২০১৫ ১২:১৬

বার্সেলোনা না জুভেন্টাস- কে হচ্ছে ইউরোপ সেরা?

অপেক্ষার প্রহর শেষে আজ শনিবার বার্লিনে মাঠে নামছে বার্সেলোনা আর জুভেন্টাস। দুই দলের সামনেই ট্রেবল জয়ের হাতছানি। ত্রিমুকুট জয়ের লক্ষ্য নিয়েই ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনা আর ইতালীয়ান ফুটবলের পাওয়ারহাউজ জুভেন্টাস। বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ১২-৪৫মিনিটে শুরু হবে ম্যাচটি।

দীর্ঘ এক যুগ পর প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনাল খেলতে নামবে জুভেন্টাস। লক্ষ্য তৃতীয়বারের মত ইউরোপের অভিজাত শিরোপাটি ঘরে তোলা। তবে লিওনেল মেসির জাদুকরি নৈপুণ্যে উজ্জীবিত বার্সেলোনা এবার ফেভারিট হিসেবেই ৫ম বারের শিরোপা জয়ের মিশনে নামবে। আগের চারটি শিরোপাই তারা জয় করেছে বিগত এক দশকের মধ্যে।

এরই মধ্যে নিজ নিজ ক্লাবের অভিষেক মিশন দারুণভাবেই উপভোগ করেছে জুভেন্টাস কোচ ম্যাসিমিলয়ানো অ্যালেগ্রি ও তার প্রতিপক্ষ বার্সেলোনার কোচ লুইস এনরিক। দুইজনই নিজ নিজ দেশের ঘরোয়া ফুটবলের লীগ ও কাপ জয়ের মাধ্যমে সংগ্রহশালায় জমা করেছে এক মৌসুমের দু’টি করে শিরোপা। এখন দু’জনই তাকিয়ে আছে লোভনীয় শিরোপাটি জয়ের মাধ্যমে ট্রেবল শিরোপা জয়ীর কোচ হিসেবে নাম লেখাতে। যাতে করে তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের ব্যবধানটিও ফুটে উঠে।

বার্সেলোনার ক্ষেত্রে এটি হচ্ছে দ্বিতীয়বারের মত ট্রেবল শিরোপা জয়ের সুযোগ। এর আগে পেপ গার্দিওলার অসাধারণ নেতৃত্বে ২০০৮-০৯ মৌসুমে ট্রেবল শিরোপা জয় করেছিল কাতালানরা। তবে এবার সেটি অর্জিত হলে অনন্য এক উচ্চতায় পৌঁছে যাবে স্প্যানিশ ক্লাবটি। এদের বাইরে ইতোপূর্বে ছয়টি মাত্র ক্লাব একবার করে ঘরোয়া লীগ শিরোপা ও কাপ জয়ের পাশাপাশি একই মৌসুমে ইউরোপীয় কাপটি জয় করেছে। যাদের মধ্যে ১৯৬৭ সালে প্রথম ওই কৃতিত্বটা অর্জন করেছিল সেল্টিক লিসবন লায়ন্স। এরপর একে একে ওই সফলতা অর্জন করতে থাকে যথাক্রমে ১৯৭২ সালে আয়াক্স, ১৯৮৮ সালে পিএসভি আইন্দোভেন, ১৯৯৯ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ২০১০ সালে ইন্টার মিলান এবং ২০১৩ সালে বায়ার্ন মিউনিখ। এখন একমাত্র ক্লাব হিসেবে বার্সেলোনার সামনে দ্বিতীয়বারের মত ট্রেবল জয়ের হাতছানি। বর্তমান দলটিতে অবশ্য সেই সক্ষমতা রয়েছে। তাছাড়া ২০০৯ সালে অসাধারণ ওই ঘটনার সাক্ষী হিসেবে গার্দিওলার আমলের বেশ ক’জন খেলোয়াড়ই বর্তমান স্কোয়াডের অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।

বার্সা কোচ লুইস এনরিক বলেন, ‘আমাদের দলটি এখনো তারুন্য নির্ভর। যদিও গার্দিওলার আমলের বেশ ক’জন খেলোয়াড়ও আমাদের মধ্যে রয়েছেন। যা আমাদের টেনে নিয়ে এসেছে নতুন ইতিহাসের দ্বারপ্রান্তে।’

অপরদিকে জুভেন্টাসের সামনে রয়েছে অভিজাত ক্লাবগুলোর কাতারে আসন গ্রহণের সুযোগ। নতুবা ষষ্ঠ বারের মত ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়ে পূর্বের ইতিহাসের অতল গহ্বরে আরো তলিয়ে যাওয়া। তবে হাই ভোল্টেজ ম্যাচটিতে বার্সার আক্রমণভাগের ত্রিমুর্তি মেসি, নেইমার ও লুইস সুয়ারেজের ক্ষুরধার আক্রমণ সামাল দিতে দিতেই যে ইতালীয় চ্যাম্পিয়নদের বেশিরভাগ সময় কাটাতে হবে সেটি বলাই বাহুল্য। ল্যাতিন আমেরিকার এই তিন তারকা ইতোমধ্যে সমন্বিতভাবে প্রতিপক্ষের গোলপোস্টে বল পাঠিয়েছে ১২০ বার। বিপরীতে জুভেন্টাস ক্লাবের সবাই মিলে গোটা মৌসুম থেকে আদায় করেছে মাত্র ১০৩টা গোল।

তবে মেসির যাদুকরি ফুটবল বা তাকে ফাইনালে প্রথম গোলদাতা হতে না দেওয়া এসব কিছু নিয়ে ভাবছেনা জুভেন্টাস। তাদের ভাবনা জুড়ে কাজ করছে অন্য কিছু। আর সেটি হচ্ছে যে কোন মুল্যেই জয়।

গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফন বলেন, ‘এটি আমাদের বাঁচা-মরার ম্যাচ।’ কারণ চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে হারতে হারতে তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। সর্বশেষ ২০০৩ সালে এসি মিলানের কাছে হেরে যাওয়া দলটি এখন ওই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে বদ্ধপরিকর।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত