ক্রীড়া প্রতিবেদক

১৮ জুন, ২০১৫ ২৩:৫০

ভারতকে ৭৯ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপের ‘শোধ’ নিল বাংলাদেশ

ভারতকে ৭৯ রানে হারিয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। খেলার আগে ভদ্রতা বশত বিশ্বকাপের বিতর্কিত কোয়ার্টার ফাইনালের সেই ম্যাচের কথা এড়িয়ে গিয়েছিলেন দুই অধিনায়ক। কিন্তু দর্শক থেকে শুরু করে খেলোয়াড়দের শরীরি ভাষায় অস্ফুটভাবে বেরিয়ে এসেছে সেই ম্যাচ। অনেকটা যেন তাই 'শোধ' নিল বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ একাদশে ৪ পেসার দেখে চোখ কপালে তোলেছিলেন বিশ্বের ক্রিকেট বিশ্লেষকরা। কিন্তু ম্যাচ শেষে তারাই সেই পেস কোয়ার্ট্রেটের বন্দনায় মেতেছেন। বিশেষ করে অভিষিক্ত মোস্তাফিজুর রহমানের স্বপ্নিল স্পেল বাস্তবে হয়েছে কিনা বিশ্বাস করতে পারছেন না অনেকেই। সাতক্ষীরার মাত্র ১৯ বছরের কিশোর পেরোনো এই তরুণ ৫০ রানে ৫ উইকেট তোলে নিয়ে বিখ্যাত ভারতীয় ব্যাটিং ধ্বসিয়ে দিয়েছেন।

বাংলাদেশের দেয়া ৩০৮ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে কখনই ম্যাচে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি ভারত। মোস্তাফিজের সুয়িং আর তাসকিনের পেসে বারবার পরাস্ত হয়েছেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা।

তবে অনেকবার সুযোগ পেলেও  উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গতে ৯৫ রান পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় বাংলাদেশকে। ৯৫ রানে ধাওয়ান এবং ১০১ রানে কোহলিকে তোলে নিয়ে বাংলাদেশকে খেলায় ফেরান তাসকিন। এরপর মুস্তাফিজ রোহিত শর্মা এবং রাহানেকে ফিরিয়ে দেন। এরপর সাকিব ধোনীকে ফিরিয়ে নিলে ম্যাচের চাবি তোলে নেয় বাংলাদেশ।

এরপর সুরেশ রায়না এবং জাদেজা মিলে পঞ্চাধর্ধ্ব জুটি গড়ে লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তবে ফের বোলিংয়ে এসে পরপর দুই বলে রায়না ও অশ্বিনকে আউট করেন বিস্ময় বালক মুস্তাফিজ।  জাদেজাকে আউট করে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে অভিষেকেই ৫ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন মুস্তাফিজ।

খেলার বাকি অংশ কেবল অনুষ্টানিকতা। সাকিব আর মাশরাফি মিলে তা তোলে নিলে ৭৯ রানের বড় জয় পায় বাংলাদেশ।

এর আগে তামিম ইকবাল -সৌম্য সরকারের শুরুর তান্ডব বজায় রাখতে না পারলেও ভারতকে ৩০৮ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর ছুড়ে দেয় বাংলাদেশ। ৪৯.৪ ওভারে অলআউট হবার আগে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩০৭।  

টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে দুই ওপেনার তামিম ও সৌম্য যেভাবে ভারতীয় বোলাদের উপর চার ছয়ের ঝড় তোলেছিলেন এক পর্যায়ে মনে হয়েছিল ৩৫০ রানও কোন ব্যাপারই না। তবে উদ্বোধনী জুটিতে ১০২ রান তোলার উপর ভুল বুঝাবোঝিতে রান আউট হয়ে যান ৪০ বলে ৫৪ রানে দুরন্ত ইনিংস খেলা সৌম্য সরকার। এরপরই বৃষ্টির জন্য খেলা প্রায় এক ঘন্টা বন্ধ থাকে। পুনরায় খেলা শুরু হলো মনসংযোগের ব্যাঘাত ঘটে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। ৬০ রান করেই আউট হয়ে যান তামিম।

লিটন ফিরে যান ৮ রানে। অভিজ্ঞ মুশফিক রানের ইঙ্গিত দিলেও অশ্বিনকে অযতা তোলে মারতে গিয়ে আউট হয়ে ফিরে গেলে কঠিন বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।

তবে বাংলাদেশকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেন সাকিব ও সাব্বির। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ৮৩ রানের জুটি গড়ে ফিরে যান সাব্বির রহমান (৪১)। অর্ধশতকে পৌঁছে উমেশ যাদবের বলে রবিন্দ্র জাদেজারে হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সাকিব (৫২)। শেষের দিকে নাসির ২৭ বলে ৩৪ এবং মাশরাফি ১৮ বলে ২১ রান করলে ৩০০ পার হয় বাংলাদেশের।

ভারতের পক্ষে অশ্বিন সর্বোচ্চ ৩ উইকেট লাভ করেন। 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত