নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ মার্চ, ২০২১ ০১:২৩

সিলেটে হচ্ছে আরও দুটি পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর

পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হচ্ছে সিলেটের আরও দুটি শুল্ক স্টেশন। এরমধ্যে সিলেটের বিয়ানীবাজারের শেওলা শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। আর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ শুল্কস্টেশনকে স্থলবন্দরে উন্নীতের জন্য জমি অধিগ্রহণ কাজ শুরু কয়েছে।

চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ শুরু কলেও শেওলা শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হয় আরও প্রায় ৬ বছর আগে। ২০১৫ সালের ৩০ জুন। তবে এতোদিন ঘোষণার মধ্যেই আটকে ছিলো স্থলবন্দর। শুল্ক স্টেশনের অবকাঠামো, লোকবল নিয়েই চলছিলো শেওলার কার্যক্রম। সেবাও ছিলো শুল্ক স্টেশনের। অবশেষে ঘোষণার প্রায় ৬ বছর পর গত ১৩ ফেব্রুয়ারি শেওলাকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরে রূপ দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। ওইদিন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী শেওলা স্থলবন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এরপরদিন তিনি ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশনে গিয়ে ভোলাগঞ্জকে স্থলবন্দরে উন্নীতের আশ্বাস দেন।

শেওলা ও ভোলাগঞ্জের আগে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার তামাবিলে স্থল বন্দরের কার্যক্রম চালু হয়। তামাবিল শুল্ক স্টেশনকে ২০০১ সালে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর প্রায় ১৬ বছর পর ২০১৭ সালে তামাবিলে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, শেওলার অবস্থান ভারতের আসাম রাজ্যের বিপরীতে। ভারতের সাত রাজ্যের সাথে যোগাযোগ অপেক্ষাকৃত সহজতর হওয়ায় এখানে স্থল বন্দরের কার্যক্রম শুরু হলে আমদানি-রফতানি আরও বৃদ্ধি পাবে। ভোলাগঞ্জ দিয়ে আমদানি-রফতানি বৃদ্ধি পাবে বলে আশা তাদের।

তবে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে প্রায় অচল অবস্থায় রয়েছে শেওলা ও ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশন। কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে। ভোলাগঞ্জ দিয়ে কেবল পাথর ও শেওলা সামান্য ফল আমদানি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শুল্ক স্টেশন কর্মকর্তারা।

শেওলা স্টেশন দিয়ে ফল আমদানি করা আমদানিকারক আবুল কালাম বলেন, ভারত থেকে শেওলা শুল্ক স্টেশন দিয়েই আমদানি অপেক্ষাকৃত সহজ। কারন এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো।

স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ১২৪ কোটি টাকা ব্যায়ে শেওলা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ রুপ দেয়া হচ্ছে। নৌ পরিবহণ মন্ত্রনালয়ের অধীনে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেকটিভিটি প্রজেক্ট-১ এর আওতায় বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ২ বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমী মাহবুব বলেন, প্রায় ২৫ একর জায়গার উপর শেওলা স্থলবন্দর নির্মান করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় পূর্বের ১৫ একরের বাইরে নতুন করে ৯ একর জমি অধিগ্রহণসহ গোডাউন, ইয়ার্ড, নিরাপত্তা প্রাচীর, ওয়েব্রিজ স্কেল, ট্রাক পার্কিং, ডমেস্টিক ব্যারাক নির্মাণ করা হবে। আঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়াতে এই শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দরে উন্নীত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এদিকে, শেওলা স্থলবন্দরের উন্নয়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেরার ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশন পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি ভোলাগঞ্জকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরে উন্নীত করা হবে বলেও জানান।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আসলাম উদ্দিন জানান, ভোলাগঞ্জকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর করতে জমি অধিগ্রহণ কাজ শুরু হয়েছে। সেখানকার সরকারি খাস জমি ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের নামে প্রদানের জন্য আমরা ইতোমধ্যে প্রস্তাবনা প্রেরণ করেছি। অচীরেই এই শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হবে।

সিলেটের দুই শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দরে উন্নীতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়ের বলেন, কেবল স্থলবন্দরে উন্নীত করলেই চলবে না। ব্যবসায়ীরা যাতে স্থলবন্দরের পূর্ণাঙ্গ সুবিধা পান সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত