নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ মার্চ, ২০২১ ১৫:২৩

ধর্মঘট থেকে সরে দাঁড়ালেন সিলেটের পরিবহন শ্রমিকরা

সিলেটে শ্রমিকদের কর্মবিরতির নামে ডাকা পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে। শুক্রবার (১২ মার্চ) সমঝোতা বৈঠকে ধর্মঘট স্থগিতের কথা জানান পরিবহন শ্রমিকরা। সিলেট নগরের চৌহাট্টায় সিটি করপোরেশনের কর্মীদের সাথে সংঘর্ষের জেরে আগামীকাল রোববার (১৪ মার্চ) থেকে এইা ধর্মঘট ডেকেছিলেন শ্রমিক নেতারা।

স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে শ্রমিকদের কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবহণখাতের নেতারা।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির আহমদের উপস্থিতিতে আপোষ বৈঠকের কর্মাবিরতি স্থগিত করা হয় বলে জানান তারা।

শুক্রবার সকালে সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের কার্যালয়ে পরিবহণ শ্রমিক নেতৃবৃন্দদেরকে নিয়ে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল , মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির আহমদ এবং ঘটনার মধ্যস্থতাকারী সিলেট জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি চেয়ারম্যান শেখ মকন মিয়া, সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সভাপতি গোলাম হাদী ছয়ফুল, মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সভাপিত আব্দুর রহমান রিপন ও জেলা ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সহ সভাপতি আতিকুর রহমান উদ্যোগে বৈঠক অনুষ্টিত হয়।

শ্রমিক নেতারা জানান, বৈঠকে  মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্ম শত বার্ষিকী উপলক্ষে শ্রমিকদের ঘোষিত কর্মসূচি স্থগিত করার জন্য নেতৃবৃন্দ আহবান জানালে এবং শ্রমিকদের দাবী-ধাওয়া পুরনের আশ্বাস প্রদান করা হলে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ অনির্দিষ্টকালের পরিবহণ শ্রমিকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করেন।

বৈঠকে পরিবহণ শ্রমিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা বাস মিনিবাস-কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হাজী মইনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুহিম, সিলেট জেলা সিএনজি অটো রিক্সা শ্রমিক ইউনিনের (রেজিনং ২০৯৭) সভাপতি মতছির আলী, জেলা বাস মিনিবাস-কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক আলী আকবর রাজন, সহ সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহবুব মিয়া, নির্বাহী সদস্য মোঃ শাহেদ মিয়া প্রমূখ।

উল্লেখ্য, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি অবৈধ মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড উচ্ছেদে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ কাউন্সিলররা। পরে পরিবহ শ্রমিকদের সাথে সিটি করপোরেশনের কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এসময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় শ্রমিকদের উপর দুটি মামলা হয়। শ্রমিকরা মামলা প্রত্যাহার, আটককৃত গাড়ির ছেড়ে দেওয়া ও ভাংচুরকৃত গাড়ির ক্ষতিপুরণ এবং গাড়ি রাখার জায়গা প্রদানের দাবি জানান। শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও অধ্যাপক জাকির আহমদ সিটি করপোরেশনের কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সকল দাবি পুরনের আশ্বাস দেন।

এদিকে, ১৭ ফেব্রুয়ারির ঘটনার পরই ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ধর্মঘট আহ্বান করেন পরিবহন শ্রমিকরা। তবে সিটি করপোরেশন ও শ্রমিক নেতাদের মধ্যে বৈঠকের পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করে তিন দফা দাবি জানানো হয়।

এরপর গত ৬ মার্চ দাবি পুরণ না হওয়ার অভিযোগ এনে ১৪ মার্চ থেকে ফের কর্মবিরতিরর ডাক দিয়েছিলেন পরিবহন শ্রমিকত নেতারা।

ওইদিন এক মানববন্ধনে শ্রমিক নেতারা বলেন, ৩ মার্চের মধ্যে মামলা প্রত্যাহার, ভাংচুরকৃত গাড়ির ক্ষতিপূরণ ও আটককৃত গাড়ি ফেরত ও ট্রাফিক বিভাগের ডেপুটি কমিশনারের প্রত্যাহার না করলে ১৪ মার্চ থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট (কর্মবরতি) শুরু হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত