হামিদুর রহমান, মাধবপুর

১৪ মার্চ, ২০২১ ০০:৫৫

মাধবপুরে অসহায় মানুষদের পাশে 'স্বচ্ছতা গ্রুপ'

আগুনে পুড়ে ‌দগ্ধ হন হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বহরা ইউনিয়নের দূলর্ভপুর গ্রামের তানিশা আক্তার। তার জরুরি চিকিৎসা দরকার। টাকা জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে তানিশার দারিদ্র পরিবার। এ খবর পেয়ে অনলাইন ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বচ্ছতা গ্রুপ'। তানিশার বাবা আলা উদ্দিনের হাতে ২২ হাজার টাকা পৌঁছে দেয় দেয় এই সংগঠনটি।

শনিবার (১৩ মার্চ) বিকালে অসুস্থ তানিশার বাড়িতে চিকিৎসা সহায়তা তুলে দেওয়ার জন্য ছুটে গেলেন স্বচ্ছতা গ্রুপের কয়েক জন সদস্য।

চিকিৎসা সহায়তা হস্তান্তরের সময় উপস্থিত থেকে সংক্ষিপ্ত সভায় বিশিষ্ট সমাজ সেবক সভাপতি মোঃ লিয়াকত আলী সর্দার এর সভাপতিত্ত্বে স্বচ্ছতার সদস্য মোঃ খাইরুল ইসলাম খান এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বচ্ছতার সদস্য মুফতি শফিকুল ইসলাম ডালিম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তরুণ সমাজ সেবক মোঃ রাসেল পাঠান, মোঃ দুধ মিয়া, মোঃ কুদ্দুছ মিয়া, স্বচ্ছতার সদস্য সাংবাদিক মোঃ হামিদুর রহমান,মোঃ সাইফুর রহমান টিটু,শেখ ইমন আহমেদ, মোঃ কাদির হোসেন জুয়েল, মোঃ সামছু উদ্দিন, মোঃ এনামুল ইসলাম, মোঃ আব্দুল মুমিন, মোঃ আব্বাছ উদ্দিন,মোঃ বাদল মিয়া,মোঃ ফয়সল মিয়া এবং অত্র এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ  ও জন সাধারণ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় বক্তারা স্বচ্ছতা গ্রূপের মানবিক কাজের প্রশংসা করেন। এবং স্বচ্ছতা গ্রূপের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করেন

এভাবেই বিপদ-আপদে এলাকার লোকজনের পাশে দাঁড়ায় অনলাইন ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বচ্ছতা গ্রুপ‘। এখানকার গরিবদের এখন আর বিভিন্ন প্রয়োজনে এদিক-ওদিক ছুটতে হয় না। বিভিন্ন সময় তাঁদের দুঃসময়ে এগিয়ে আসে মাধবপুর উপজেলার সে¦চ্ছাসেবী সংগঠন স্বচ্ছতা গ্রুপ ।শুধু চিকিৎসা নয়, শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ, করোনাকালে ত্রাণ সহায়তাসহ বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজ করে যাচ্ছেন ‘স্বচ্ছতা গ্রুপের‘ সদস্যরা। প্রায় ২ বছর ধরে নিজেদের কষ্টের টাকায় এলাকার লোকজনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন সংগঠনটির সদস্যরা। ২০১৯ সালের মার্চ মাস। উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামের করিমুল হকসহ কয়েক তরুণ কথা হচ্ছিল গরিব, অসহায়-দুস্থদের নিয়ে।

সংগঠনের উদ্যোক্তারা জানান, বিপদ-আপদে তারা বিত্তবান লোকজন বা জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরনা দেন। তবু পর্যাপ্ত সহায়তা মেলে না। তাই তারা ঠিক করলেন ফেইসবুক মেচেঞ্জারে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন করবেন। করলেনও তাই। ‘স্বচ্ছতা গ্রুপ‘ নাম দিয়ে শুরু করলেন নিজেদের ইচ্ছাপূরণের পথে যাত্রা। বর্তমানে প্রায় সদস্য সংখ্যা ১০০জন। সংগঠনে কারও নির্দিষ্ট কোনো পদ নেই। সবাই সমান। একজন সমন্বয়ক বা উদ্দ্যোক্তার নেতৃত্বে স্বচ্ছতার কার্য্যক্রম চলবে।

তারা সিদ্ধান্ত নেন, নিজেদের জমানো টাকা একজনের কাছে গচ্ছিত থাকবে। সংগঠনের প্রয়োজনে তার কাছ থেকে নিয়ে খরচ করা হবে। এভাবেই চলছে তাদের কার্যক্রম।

স্বচ্ছতা গ্রুপের উদ্দ্যোক্তা করিমুল হক বলেন এলাকার লোকজনের পাশে দাঁড়াতে পারছি এটা খুব আনন্দের। আর স্থানীয় সব দলের লোকজন আমাদের সহযোগিতা ও উৎসাহ দেন। এ কারণে সংগঠনটি টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছে।

স্বচ্ছতার সদস্য সুলতান আলম বলেন, আমি প্রবাসী কিছু টাকা সমাজের অসহায় মানুষদের দিতে পারছি স্বচ্ছতার মাধ্যমে এটার আনন্দ বলে বুঝানো যাবেনা। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শেখ শামছুল হক বলেন প্রতি মাসে ইনকাম থেকে কিছু টাকা রেখে দেই সেবার জন্য।

চৌমুহনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আপন মিয়া বলেন, স্বচ্ছতা গ্রুপের যুবকেরা এলাকায় যে সেবামূলক কাজ করছেন, তা প্রংসনীয় ও অনুকরণীয়। স্বচ্ছতার সদস্যদের মতো সমাজের অন্যরা এগিয়ে এলে গরিবের কষ্ট অনেক কমবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত