সিলেটটুডে ডেস্ক

৩০ এপ্রিল, ২০২১ ১২:৪৮

পরিবেশ দূষণ: বন্ধই থাকছে হবিগঞ্জের মার লিমিটেডের কার্যক্রম

হবিগঞ্জের মাধবপুরের মার লিমিটেড নামের ড্রাই স্টার্চ পাউডার উৎপাদনকারী কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রয়েছে। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে কোম্পানিটির করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

উৎপাদনের জন্য শিল্প এলাকায় যেতেই হবে এ কারখানাকে।

পরিবেশ দূষণ করায় প্রতিষ্ঠানটির স্থানান্তর প্রসঙ্গে হাইকোর্ট যে রুল জারি করেছিল তা বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতিসহ ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।

আদালতে রিটকারি প্রতিষ্ঠান বেলা’র পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী। অন্যদিকে মার-লি’র পক্ষে শুনানি করেন এমকে রহমান।

পরে আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী বলেন, পরিবেশ দুষণকারী প্রতিষ্ঠান মার-লির কার্যক্রম প্রতিরোধে বিবাদীদের ব্যর্থতাকে কেন অবৈধ, আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভুত ও জনস্বার্থ বিরোধী ঘোষণা করা হবে না। প্রতিষ্ঠানটিকে বর্তমান স্থান থেকে ঘোষিত কোনো শিল্প এলাকায় স্থানান্তরের নির্দেশ দেয়া হবে না এবং ওই প্রতিষ্ঠানের দূষণ থেকে এখতিয়ারপুর খাল রক্ষার কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে গত ১৫ মার্চ হাইকোর্ট রুল জারি করে।

হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে প্রতিষ্ঠানটি। তাদের আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ২০ এপ্রিল নো অর্ডার দিয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠায়।

আপিল বিভাগ শুনানি শেষে হাইকোর্টের ওই আদেশ বহাল রাখে।

তিনি বলেন, ‘এর আগে হাইকোর্ট রুল জারির পাশাপাশি মামলাটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির সব কার্যক্রম পরিচালনা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ফলে এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থার ক্ষতি নিরূপণ সাপেক্ষে প্রতিবেদন প্রস্তুত করে দুই মাসের মধ্যে আদালতে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়।’

পরিবেশ দূষণের বিষয়টি উল্লেখ করে বেলার এই আইনজীবী বলেন, ‘মার-লি’ নামক কোম্পানিটি মূলত ড্রাই স্টার্চ পাউডার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে দীর্ঘদিন থেকে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

কারখানার প্রচুর পরিমাণে তরল বর্জ্য উৎপন্ন হয়। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে কারখানায় সৃষ্ট এসব তরল বর্জ্য কোনো ধরনের শোধন ছাড়াই পাশ্ববর্তী এখতিয়ারপুর খালে ফেলা হয়। এতে খালের পুরো পানি দূষিত হয়ে পড়ে।’

তিনি বলেন, কারখানার দূষিত পানি ও অপরিশোধিত বর্জ্যের দুর্গন্ধে ছাতিয়াইন ইউনিয়নের শ্রমিতপুর, দাসপাড়া, ছাতিয়াইন উত্তর, ছাতিয়াইন দক্ষিণ, সাকুচাইল, পিয়াইম, শিমুলঘর গ্রামসহ আশেপাশে অবস্থিত অন্য উপজেলার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

প্রতিবাদে এলাকাবাসী বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ সভা, সমাবেশ, মানববন্ধন, রাস্তা অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করেও কাজ না হওয়ায় আদালতে রিট করা হয়।

রিটে পরিবেশ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট), পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট অঞ্চলের পরিচালক, মাধবপুর উপজেলার চেয়ারম্যান, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানটির মালিককে বিবাদী করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত