নিজস্ব প্রতিবেদক

২৭ জুলাই, ২০২১ ১৫:৫৭

টিকার চেয়ে গ্রহীতা বেশি, সকালেই বন্ধ ওসমানীর টিকা কেন্দ্র

দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতির মধ্যে টিকা নিতে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। একদিকে যেমন টিকার জন্য নিবন্ধন বাড়ছে, তেমনি কেন্দ্রে বাড়ছে ভিড়। তাই এমন অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন হতে পারে এ আশঙ্কা থেকে সকালেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ (সিওমেকে) হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্র।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সকাল ১১টার সিওমেক হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় টিকাদান কর্মসূচি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। প্রতিদিনের মতো এদিন সকাল আটটায় শুরু হওয়া গণ টিকাদান, তবে তিনঘণ্টা যেতে না যেতেই ফুঁড়িয়ে যায় ১ হাজার দুইশত টিকা। যদিও এদিন টিকা গ্রহণের জন্য ৬০০ জনকে বার্তা প্রদান করে কর্তৃপক্ষ।

এদিন সরেজমিনে দেখা গেছে, বিগত দিনের তুলনায় টিকা নিতে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। মানুষকে টিকা নিতে লাইনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। সকালে টিকা কার্যক্রম শুরু করার আগেই জড়ো হতে থাকেন হাজারো মানুষ। সকাল ৮ টায় টিকা দেওয়া শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গেই ধারণ ক্ষমতার অধিক মানুষ হাসপাতালে জড়ো হয়। এদিকে মানুষের চাপ বাড়ায় টিকা দিতে হিমশিম খান স্বাস্থ্যকর্মীরা।

নির্ধারিত সময়ের সাড়ে তিনঘণ্টা আগে বেলা ১১টার সময় ১ হাজার দুইশত জনকে টিকা প্রদান করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তখনও হাসপাতালের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রায় হাজার খানেক টিকা গ্রহীতা। এমন সময় ঘোষণা আসে হাসপাতালে প্রতিদিনের নির্ধারিত টিকার স্টক শেষ হয়ে গেছে। ফলে বন্ধ করে দেয়া হয় হাসপাতালটির টিকাদান কেন্দ্র। এদিকে অনেকেই টিকা না দিতে পেরে আক্ষেপ নিয়ে ফিরে যান বাড়ি।

কর্তৃপক্ষ বলেছে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মানুষের উপস্থিতিতে মানা সম্ভব হয়ে উঠছে না সামাজিক দূরত্ব। ভঙ্গ হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। এমতাবস্থায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে টিকা দান কর্মসূচি আজকের মতো বন্ধ করা হয়েছে। আগামীকাল নির্ধারিত সময়ে ফের শুরু হবে করোনা প্রতিরোধী টিকাদান। এদিকে টিকার পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে জানিয়ে তারা বলছেন, ভিড় করা থেকে বিরত থাকতে। শুধু নির্দিষ্ট তারিখের নিবন্ধনকারীদেরই টিকাকেন্দ্রে আসার আহ্বান জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টিকাদান কর্মসূচির সাথে জড়িত রেড ক্রিসেন্টের এক সদস্য বলেন, এখানে মানুষ টিকা নিতে এসেছে নাকি করোনাভাইরাস সঙ্গে করে বাসায় নিয়ে যেতে এসেছে বলা যাচ্ছে না। হাসপাতালে টিকাদান শুরুর আগে থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন তারা। হাজারো মানুষ, অথচ কোন প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না কেউ। অনেকের মুখে মাস্ক পর্যন্ত নেই। একজনের গা ঘেঁষে আরেকজন দাঁড়িয়ে আছেন।

এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, নিবন্ধন করে ম্যাসেজ নিয়ে নির্দিষ্ট দিনে টিকা কেন্দ্রে এলে ভিড় কম হবে। অনেক নিবন্ধনকারী ম্যাসেজ না পেয়েও কেন্দ্রে ভিড় করছেন। এছাড়া অনেকে নির্দিষ্ট দিনে না এসে পরে আসছেন। প্রতিদিন ৬০০ জনকে ম্যাসেজ দেওয়া হলেও কেন্দ্রে টিকা গ্রহীতার সংখ্যা থাকছে দুই হাজারের উপরে। এভাবে কেন্দ্রে ভিড় না করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় করোনা প্রতিরোধী টিকার পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ৩০ বছরের বেশি সকল নাগরিক করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা নিতে পারবেন। সকলে যদি নির্দিষ্ট দিনে এসে টিকা গ্রহণ করেন তাহলে এতটা ভিড় হবার কথা না। তাই সকলকে একদিনে ভিড় না করে নির্দিষ্ট সময়েই আসার আহবান জানান তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত