নিজস্ব প্রতিবেদক:

০৮ জানুয়ারি, ২০২২ ০১:৩৮

দুই ভাই ভাগবাটোয়ারা করে ‘২৭ বছর’ চেয়ারম্যান

দুই ভাইয়ের একজন করেন আওয়ামী লীগ অপরজন বিএনপি। তাদের মধ্যে নির্বাচনী ভোটযুদ্ধ চলছে প্রায় তিন যুগ ধরে। এ যুদ্ধে কখনও বিজয়ী হয়েছেন ছোট ভাই, আবার কখনও বড় ভাই। ২৭ বছর ধরে দুই ভাইয়ের নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় ইউনিয়নে পাল্টাপাল্টি জয়-পরাজয়ে রয়েছে অগ্রজ এবং অনুজ।

তারা হলেন- মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের ইসলামপুর ইউনিয়নের আব্দুল হান্নান ও সুলেমান মিয়া।

বড় ভাই আব্দুল হান্নান বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত আর ছোট ভাই সুলেমান মিয়া আওয়ামী লীগের।

সদ্য সমাপ্ত পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইসলামপুর ইউনিয়নের দুই সহোদরের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হয়েছেন ছোট ভাই আওয়ামী লীগ নেতা সুলেমান মিয়া।

বড় ভাইকে হারিয়ে ছোট ভাই আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিজয়ী হওয়ায় তার বলয়ে চলছে উৎসব আমেজ। অন্যদিকে বড় ভাইয়ের অনুসারীদের মাঝে বইছে বিষাদের ঢেউ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ইসলামপুর ইউনিয়নে দুই মেয়াদে ১৫ বছর বিএনপি নেতা আব্দুল হান্নান চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালের নির্বাচনে তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমে ছোট ভাই আওয়ামী লীগ সুলেমান মিয়া বিজয়ী হন। ২০১৬ সালে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে বড় ভাই হান্নান মনোনয়ন পান। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয় ছোট ভাই সুলেমানকে। ধানের শীষ ও নৌকা প্রতীকে দুই ভাইয়ের নির্বাচনী লড়াইয়ে ওই বছর বিজয়ী হন বড় ভাই।

২০২১ সালের নির্বাচনে ফের দু'জন মুখোমুখি হন নৌকা ও আনারস প্রতীক নিয়ে। জন রায়ে সুলেমান মিয়া নৌকা প্রতীকে ৭ হাজার ৭৩৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বড় ভাই আব্দুল হান্নান পেয়েছেন ৬ হাজার ৬২৩ ভোট।

এবার তাদের বাইরে ব্যতিক্রম হিসেবে মোস্তফা মিয়া নামে এক ব্যক্তি মোটরসাইকেল নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তার অবস্থান তিন প্রার্থীর মাঝে তিন নম্বরে।

ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা ধীরেন সিংহ বলেন, যোগ্যতা ও জনপ্রিয়তায় দুই ভাই এগিয়ে থাকায় বছরের পর বছর ধরে তারাই চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হচ্ছেন।’

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, ‘মূলত দুই ভাই ভাগবাটোয়ারা করে ২৭ বছর চেয়ারম্যান। পাশ যে করুক চেয়ারম্যান তো একই ঘরে।’

বিজয়ী ছোট ভাই সুলেমান মিয়া জানান, সব বিজয়ই আনন্দের। জনসেবার মধ্যেই জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কাটিয়ে যেতে চাই।

এদিকে পরাজিত বড় ভাই আব্দুল হান্নানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত