নিজস্ব প্রতিবেদক:

০৮ জানুয়ারি, ২০২২ ২৩:৩৫

বিদ্রোহী হয়ে চেয়ারম্যান ‘বিমান প্রতিমন্ত্রীর ভাই’, নৌকার জামানত বাজেয়াপ্ত

বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী ও চাচাতো ভাই মো. মিজানুর রহমান মিজান। ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর ও চুনারুঘাট উপজেলায় নৌকার ফল বিপর্যয় হয়েছে। উপজেলা দুটির ২১টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৫টিতে হেরেছেন নৌকার প্রার্থী। এরমেধ্যে ৭টিতে বিএনপি (স্বতন্ত্র), একটিতে জামায়াত ও ৭টিতে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। বিপরীতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জয় পেয়েছেন ৬ ইউপিতে।

নৌকার ভরাডুবির কারণে সাধারণ নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। নেতিবাচক ফলাফলের কারণ সম্পর্কে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীর নিজ ইউনিয়ন বুল্লায় নৌকার প্রার্থীর শোচনীয় পরাজয় ও জামানত হারানোর বিষয়টি নিয়ে।

এই ইউপিতে মন্ত্রীর ঘরেই ছিলেন বিদ্রোহী প্রার্থী। তিনি প্রতিমন্ত্রীর আপন চাচাতো ভাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি মো. মিজানুর রহমান মিজান। ভোটে বিজয়ী হয়েছেন মিজান। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এখানে বিদ্রোহী চাচাতো ভাইকে মদদ দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে।

বুল্লা ইউনিয়নের ফলাফল অনুযায়ী, এখানে বৈধ ভোট পড়েছে ১১ হাজার ৯২৩টি। এরমধ্যে মন্ত্রীর চাচাতো ভাই মো. মিজানুর রহমান ৩ হাজার ৭২৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. শামছুল ইসলাম পেয়েছেন ৩ হাজার ৬৬৯ ভোট। ৩ হাজার ৪৫৪ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন মো. বশির মিয়া। আর ১ হাজার ৭৫ ভোট পেয়ে চতুর্থ হয়েছেন নৌকার প্রার্থী শামীম রহমান।

বুল্লা ইউনিয়নের বানেশ্বর গ্রামের প্রতিমন্ত্রীর নিজের বাড়ির দুই কেন্দ্রেও চরম লজ্জা পেতে হয়েছে নৌকার প্রার্থীকে। বানেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা পেয়েছে ২৫ ভোট। ওই কেন্দ্রে মন্ত্রীর ভাই মিজানুর রহমান মিজান (আনারস) পেয়েছেন ৯১৭ ভোট।

অপর একটি কেন্দ্র বানেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা পেয়েছে ২২ ভোট ওই কেন্দ্রে আনারস প্রতিক নিয়ে মিজানুর রহমান পেয়েছেন ১ হাজার ১৩৭ ভোট।

নির্বাচনে পরাজয়ের পর নৌকার প্রার্থীর শামীম রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘মন্ত্রীর ভাই নির্বাচনে বিদ্রোহী হওয়ায় তিনি তার ভাইয়ের প্রতি মৌন সমর্থন দিয়েছেন। তার ভাই বিভিন্ন ভাবে মন্ত্রীর প্রভাব দেখিয়েছেন। এছাড়াও নির্বাচনে তিনি কালোটাকা বিলিয়েছেন।’

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক নৌকার পরাজয়ের কারণ বলেন, ‘ওই ইউনিয়ন নেতা কর্মীদের মধ্যে হয়তো সমন্বয়হীনতার কারণও হতে পারে। এছাড়া মন্ত্রীর ভাই বিদ্রোহী হওয়ায় এরও কিছুটা প্রভাব পড়েছে বলে আমার মনে হয়।’

নিজের ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর লজ্জাজনক হার, জামানত বাজেয়াপ্ত ও বিদ্রোহী চাচাতো ভাইয়ের বিজয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ‘নৌকার পরাজয়ের কারণ আমি কি করে বলবো। আমি কি এলাকায় গিয়ে প্রচারণা করেছি নাকি?

এসময় তিনি রাগান্নিত হয়ে বলেন, ‘নির্বাচনে কেন নৌকার পরাজয় হয়েছে, তা যারা নির্বাচন পরিচালনা করেছেন তাদের জিজ্ঞেস করেন।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত