নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০২

এবার আমরণ অনশনের ঘোষণা শাবি শিক্ষার্থীদের

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের জন্য বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময়ের মধ্যে দাবি না মানা হলে আমরণ অনশনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

আন্দোলনকারি শিক্ষার্থীদের পক্ষে মোহাইমিনুল বাশার মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘ভিসি পদত্যাগ না করলে আমরা বুধবার দুপুর ১২টা থেকে আমরণ অনশনে বসব। এর আগ পর্যন্ত আমরা এই অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব। আমাদের এই আন্দোলন বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়েছে... আমরা আশা করছি শিক্ষার্থীদের এই ক্ষোভ আঁচ করতে পেরে উপাচার্য দ্রুত পদত্যাগ করবেন।’

এই আন্দোলন নিয়ে বিভিন্ন গুজব ছড়ানো হচ্ছে জানিয়ে বাশার বলেন, ‘গুজবে যেন কেউ বিভ্রান্ত না হয় এই আহ্বান জানাই।’

এর আগে শিক্ষার্থীদের আলোচনার প্রস্তাব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতারা। তবে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন তারা।

শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের আন্দোলনে যারা সংহতি প্রকাশ করবেন কেবল তাদের সঙ্গেই আলোচনা করা হবে।


তিন দফা দাবিতে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রোববার সন্ধ্যায় পুলিশের সংঘর্ষ হয়। অবরুদ্ধ উপাচার্যকে মুক্ত করতে গিয়ে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করলে এই সংঘাত বাধে। এতে পুলিশ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন।

এ ঘটনার পর তিন দফা দাবির একটি অর্থ্যাৎ বেগম সিরাজুন্নেসা হলের প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবি মেনে নেয়া হয়। রোববার রাতেই প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজা পদত্যাগ করেন।

এরপর শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে ফের বিক্ষোভ শুরু করেন।

তাদের অভিযোগ, উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের নির্দেশে পুলিশ তাদের ওপর হামলা ও গুলি করে।

তবে পুলিশের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, রোববার আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ২০০ থেকে ৩০০ ‘উচ্ছৃঙ্খল’ শিক্ষার্থী পুলিশের কাজে বাধা দেয়।

সরকারি আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ ছাড়া পুলিশকে লক্ষ্য করে শিক্ষার্থীরা গুলি ছোড়ে ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।

তবে এই মামলায় কাউকে হয়রানি করা হবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল।

মঙ্গলবার দুপুরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেবে না। এ ছাড়া একটি মামলা হলেও কাউকে হয়রানি করা হবে না।’

আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করতে গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে যাতে সমাধানে পৌঁছা যায় সেই পথ খোলা রাখার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান নাদেলেরও।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার আজবাহার আলী শেখও জানিয়েছেন, ‘কোনো ঘটনা ঘটলে মামলা করাটা আমাদের রুটিন কাজ। এ জন্য কোনো শিক্ষার্থীকে হয়রানি করা হবে না।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত