নিজস্ব প্রতিবেদক

২৭ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:১৩

কাজী হাবিব খুন: ৮ দিনেও গ্রেফতার নেই, নিহতের পরিবারকে আপোষের প্রস্তাব

আট দিন পেরিয়ে গেলেও সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্রলীগ কর্মী কাজী হাবিব হত্যার ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ খোঁজে না পেলেও আসামীরা ঠিকই যোগাযোগ করছে নিহতের পরিবারের সাথে। আসামীরা যোগাযোগ করে আপোষের প্রস্তাব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাবিবের ভাই।

গত মঙ্গলবার ছাত্রলীগের আভ্যন্তরীণ বিরোধে খুন হন সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিবিএ ৪র্থ বর্ষের ছাত্র কাজি হাবিবুর রহমান হাবিব। এ ঘটনায় ১১ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়।হাবিবের উপর হামলার সিসিটিভি ফুটেজও রয়েছে পুলিশের কাছে। তবু এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

এদিকে হাবিবের খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে নিহতের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় বিশাল মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত হয়ে হাবিবের খনিদের গ্রেফতারের দাবি জানায়।

কাজী হাবিবের বড় ভাই কাজী হাফিজ মঙ্গলবার রাতে সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হত্যা মামলার আসামী নাহিদ ফোনে আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছিলো। সে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছে। আরো কয়েকজন ফোন করে সমঝোতার করার কথা বলছেন। কিন্তু আমরা সমঝোতা চাই না, বিচার চাই।

কাজী হাফিজ বলেন, আটদিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত আসামীরা গ্রেফতার না হওয়ার আমরা উদ্বেগের মধ্যে আছি। তবু আশা করছি পুলিশ খুনিদের গ্রেফতার করবে।

আসামীরা গ্রেফতার না হওয়া প্রসঙ্গে সিলেট কতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল আহমদ বলেন, আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আজকেও (মঙ্গলবার) সুনামগঞ্জে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। আরো বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে। তবে আমাদের কপাল খারাপ, তাদের খুঁজে পাচ্ছি না।

নিহতের পরিবারকে সমঝোতার প্রস্তাব সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান ওসি।

হাবিব খুন হওয়ার পরদিন সিলেটে গণমাধ্যমের কাছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন বলেছিলেন, হাবিব ছাত্রলীগ কর্মী। তাঁর হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও সুষ্ঠু বিচারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের এই আশ্বাসের পরও আসামীদের ধরতে পারেনি পুলিশ।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ কর্মী কাজি হাবিবুর রহমান হাবিবের উপর হামলা করে নিজ দলের নেতাকর্মীরা। গ্রুপ বদলের কারণেই ক্যাম্পাসের সামনে তার উপর হামলা করা হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ওই দিনই নগরীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় তাকে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাবিবের মৃত্যু হয়।

পরদিন বুধবার দুপুরে নিহত হাবিবের ভাই কাজি জাকির হোসেন বাদী হয়ে সিলেট কোতোয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ১১জনকে আসামি করা হয়।

মামলার আসামিরা হলেন- ছাত্রলীগ নেতা হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ইলিয়াছ আহমদ পুনম, ইমরান খান, সুবায়ের আহমদ সুহেল, ময়নুল ইসলাম রুমেল, তুহিন আহমদ, নাহিদ, আওয়াল আহমদ সোহান, আশিক, সায়মন ও নয়ন।

এদিকে, গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাজি হাবিবের উপর সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত সন্দেহে ১০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে। বহিষ্কৃতরা হলেন- হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ইলিয়াছ আহমদ পুনম, ইমরান খান, ময়নুল ইসলাম রুমেল, বশির আহমদ তুহিন, নাহিদ, আওয়াল আহমদ সোহান, আশিক, সায়মন ও নয়নকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত