১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১৭:২০
মোঃ কবীর আহমদ। ছবি: সংগৃহীত ।
‘ঘুষ’ না পেয়ে মামলা দিয়ে ব্যবসায়ীকে হয়রানির অভিযোগ ওঠেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) আবাসিক প্রকৌশলী (সহকারী প্রকৌশলী) মোঃ কবীর আহমদের বিরুদ্ধে। কবির আহমদ মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার দায়িত্বে রয়েছেন। স্থানীয় দক্ষিণ সাগরনাল গ্রামের ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক প্রকৌশলী কবির আহমদের সীমাহীন দুর্নীতি, ঘুষ দাবি ও হয়রানিমূলক মামলার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ এনেছেন।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে লিখিত বক্তব্যে আব্দুর রাজ্জাক অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রকৌশলী কবীর আহমদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ আদায়, মিটার লক করে হয়রানি ও মনগড়া বিল তৈরি করে মামলা দিয়ে আমাকে চরম হয়রানি করে বিপাকে ফেলছেন। তিনি (রাজ্জাক) কোথাও ন্যায় বিচার পাচ্ছি না।
আব্দুর রাজ্জাক জানান, তিনি ২০১৭ সালে ফুলতলা বাজারে একটি স-মিল ও ১৯.২৫ শতক জমি ক্রয় করেন। পূর্ব মালিকের নামে থাকা পোস্টপেইড মিটার (নং-৫৯৪১৪৯২৬) তাঁর নামে করতে ২০২২ সালে আবেদন করেন। সে সময় তৎকালীন আবাসিক প্রকৌশলী মো. আনছার আলী ৩৬ হাজার টাকা ‘ঘুষ’ নিয়ে কাজ না করে চলে যান। পরে বর্তমান প্রকৌশলী কবীর আহমদ নতুন করে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন। রাজ্জাক অগ্রিম ১৫ হাজার টাকা দেন, কিন্তু প্রকৌশলী কবীর আহমদও বিভিন্ন অজুহাতে কাজ সম্পন্ন না করে হয়রানি চালিয়ে যান।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নিয়মিত বিল পরিশোধ ও জিরো ইউনিটের বিল পাওয়ার পরও হঠাৎ এপ্রিল ২০২৪-এ পুরোনো মিটারের নামে ৩ লাখ ৯২ হাজার টাকার বিল চাপিয়ে দেওয়া হয়। অনলাইনে বকেয়া না থাকার প্রমাণ সংগ্রহ করে বিষয়টি জানাতে গেলে প্রকৌশলী কবীর তাঁকে ‘খুশি না করলে বড় বিপদ হবে’ বলে হুমকি দেন। পরে ওই প্রকৌশলী তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ আদালতে মামলা (নং-৫৪১/২৪) দায়ের করেন। মামলার পর কবীর আহমদ প্রি-পেমেন্ট মিটার লক করে ঘুষ আদায় চক্র আরও জোরদার করেন; অভিযোগ আব্দুর রাজ্জাকের।
আব্দুর রাজ্জাক দাবি করেন, প্রকৌশলী কবীর আহমদের বিরুদ্ধে অতীতে বিভাগীয় মামলা (নং-৬৭/২০১১-২০১২ ও ৫৭/২০১৩-২০১৪) প্রমাণিত হওয়ায় তাঁর শাস্তিও হয়েছিল বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছি। বদলির পর তিনি জুড়ীতে থেকে দুর্নীতির সিন্ডিকেট পরিচালনা করছেন। মামলা চলাকালে বিচারক উভয় পক্ষকে সমঝোতার পরামর্শ দিলেও প্রকৌশলী কবীর আমার নিকট ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুর রাজ্জাক দুর্নীতি দমন কমিশন, বিদ্যুৎ বিভাগের উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চার দফা দাবি জানান—দুর্নীতির তদন্ত, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ভোক্তা অধিকার নিশ্চিতকরণ ও ভবিষ্যতে কর্মকর্তা কর্তৃক হয়রানি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) জুড়ী উপজেলার আবাসিক প্রকৌশলী (সহকারী প্রকৌশলী) মোঃ কবীর আহমদের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। তিনি ফোন রিসিভ না করায় এ সংক্রান্তে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আপনার মন্তব্য