জগন্নাথপুর প্রতিনিধি

০৬ জুলাই, ২০১৬ ২২:৪৯

জগন্নাথপুরে রথযাত্রায় সংঘর্ষে পুলিশ-কাউন্সিলর-সাংবাদিকসহ আহত ২০

জগন্নাথপুরে একই স্থানে দুই পক্ষের লোকজন রথযাত্রা উৎসব পালনকে কেন্দ্র করে আয়োজনকারি দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ, সাংবাদিক ও কাউন্সিলরসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।

আহতরা হচ্ছেন, জগন্নাথপুর থানার ওসি মুরসালিন, এ এসআই শাহ জামাল, কনস্টেবল লায়েব আলী, জগন্নাথপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো.শাহজাহান মিয়া, সংবাদকর্মী বিপ্লব দেবনাথ, পৌর কাউন্সিলর সুহেল আহমদ,  ব্যবসায়ী দিবাকর পাল, ধীরেন দেব, সন্তোষ দেব, মিন্টু দেব, দিবারাজ আচার্য্য। অন্যান্য আহতদের নাম জানা যায়নি।

এর মধ্যে গুরুতর আহত দিবাকর পালকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্য আহতদের জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিসহ প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

জানা গেছে, প্রায় দুইশত বছর ধরে জগন্নাথপুর পৌর শহরের স্বরুপ চন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে (রথবাড়ি) স্থানীয় জগন্নাথ জিউর মন্দির ও বাসুদেব জিউর মন্দির কমিটির উদ্যোগে সার্বজনীন ভাবে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব পালিত হয়ে আসছে। প্রতি বছরের মতো এবারো এ দুই মন্দির কমিটির উদ্যোগে রথযাত্রা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে এবারই প্রথম বাসুদেব নাম হট্ট সংঘ নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে ব্যক্তিগত ভাবে হঠাৎ নতুন করে একই স্থানে আলাদাভাবে রথযাত্রা উৎসব পালনের ঘোষণা দেয়ায় সনাতন ধর্মালম্বীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান না হওয়ায় অবশেষে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নানের হস্তক্ষেপে শর্ত সাপেক্ষে নিস্পত্তি হয়। পুরনো মন্দির কমিটিগুলো সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত ও নতুন সংগঠন বিকেল ৪ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রথযাত্রা উৎসব পালন করবে। এ সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বুধবার সকাল ১০ থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত পুরনো মন্দির কমিটির লোকজন শান্তিপূর্ণভাবে রথযাত্রা উৎসব পালন করেন। তবে বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে স্থানীয় বাসুদেব বাড়ি থেকে নতুন সংগঠনের পৃথক রথযাত্রাটি অতিরিক্ত পুলিশি প্রহরায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে বের হয়। এ সময় রথযাত্রাটি স্থানীয় বড় দীঘির দক্ষিণ পাড় পয়েন্টে আসা মাত্র চারদিক থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হলে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

এ সময় পুলিশ লাটিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এতে পুলিশ, সাংবাদিক, কাউন্সিলরসহ উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হন। পরে রথযাত্রাটি জগন্নাথপুর বাজার এলাকা প্রদক্ষিণ করে।

এদিকে-সংঘর্ষের খবর পেয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে আহতদের খোঁজ-খবর নেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত হলেও উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আবারো বড় ধরণের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর থানার ওসি মো. মুরসালিন জানান, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে উভয় পক্ষের বিরুদ্ধে পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত