নিজস্ব প্রতিবেদক

০৫ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১৫:০৭

নেশাজাতীয় দ্রব্য খেয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলো বদরুল: আইনজীবী

কলেজ ছাত্রী খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলার একমাত্র আসামী ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমের আইনজীবী সাজ্জাদুর রহমান জানিয়েছেন, '৩ অক্টোবর বদরুলকে কেউ নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে দিয়েছিলো। ফলে ৩ থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত সে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলো।'

সোমবার চাঞ্চল্যকর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণকালে আদালতে এমনটি দাবি করেন বদরুলের আইনজীবী। সোমবার সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথমদিনে ১৭ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। এদের মধ্যে এমসি কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, আহত অবস্থায় খাদিজাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কলেজ শিক্ষার্থী ইমরান ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়েছেন।

আগামী ১১ ডিসেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেছেন সিলেট মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতের বিচারক সাইফুজ্জামান হিরো। এই দিন মামলার বাকী ১৯ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।

সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য বেলা বেলা ১১ টার দিকে বদরুল আলমকে আদালতে তোলা হয়। সাড়ে ১১ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে টানা সাক্ষ্যগ্রহণ।

সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, আমরা বদরুলের অপরাধ প্রমাণ করতে পেরেছি। আশা করছি তার সর্বোচ্চ শাস্তি হবে।

গত ২৯ নভেম্বর বদরুল আলমকে (২৯) একমাত্র অভিযুক্ত করে এই মামলার অভিযোগপত্র গঠন করা হয়।

এ মামলায় সাক্ষী মোট ৩৭ জন। এর বাইরে মামলার বাদীও সাক্ষ্য দেবেন। মামলার চার্জশিটে দ্বিতীয় সাক্ষী হচ্ছেন খাদিজা বেগম নার্গিস।

আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খাদিজার ওপর হামলার পর মামলা হওয়ার এক মাস পাঁচ দিনের মাথায় শাহপরান থানার উপ-পরিদর্শক হারুনুর রশিদ গত ৮ নভেম্বর অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আদালতে দাখিল করেন। ১৫ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্রের শুনানি শেষে তা গৃহীত হয়।

উল্লেখ্য, গত ৩ অক্টোবর সিলেট এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলমের চাপাতির কোপে গুরুতর আহত হন খাদিজা। প্রথমে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর সেখান থেকে ৪ অক্টোবর তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে এনে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়। স্কয়ার হাসপাতালে প্রথম দফায় নার্গিসের মাথায় ও পরে হাতে অস্ত্রোপচার করা হয়। তার অবস্থার একটু উন্নতি হলে লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়। এরপর আইসিইউ থেকে এইসডিইউ-তে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে ২৬ অক্টোবর তাকে কেবিনে নেওয়া হয়। এরপর আবারো মাথায় ও হাতে অস্ত্রোপচার করা হয়। বর্তমানে অনেকটা ভালো অবস্থায় রয়েছেন খাদিজা।

হামলার দিন ঘটনাস্থল থেকে বদরুল আলম আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে জনতা। আদালতে হামলার দায় স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছেন বদরুল। হামলার দায়ে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত