নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:৩৮

সিলেটে জমকালো আয়োজনে শ্রেষ্ঠ প্রতিবন্ধী কণ্ঠশিল্পী প্রতিযোগিতা সম্পন্ন

সিলেট নগরীর রিকাবীবাজার কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রথম বারের মত সিলেটে অনুষ্ঠিত হলো শ্রেষ্ঠ প্রতিবন্ধী কণ্ঠশিল্পী প্রতিযোগিতায়-২০১৮।

শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় হল ভর্তি দর্শকদের উপস্থিতিতে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই শুরু হয়। অনুষ্ঠানে লাল ও সবুজ দুইটি বিভাগের সেরা ২০ প্রতিযোগীর মধ্যে লাল দলের হয়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিযোগির পুরস্কার গ্রহণ করে ইসরাস জাহান শোভা, সিলেট। সবুজ দলে সেরাদের সেরা হয় সুজিত বৈষ্ণব সুনামগঞ্জের প্রতিযোগী।
টান টান উত্তেজনায়, প্রথমবারের মত ব্যতিক্রমে আয়োজনে সেরাদের হাতে গ্র্যান্ড ফাইনালের পুরস্কার তুলে দেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম।  

সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী পর্বে নৃত্য পরিবেশন করে বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের সংগঠন সিলেট বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয় এবং বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের সংগঠন রাগীব-রাবেয়া ইনস্টিটিউট।

উদ্বোধনী পর্বে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রতিবন্ধী সংগঠনের হাতে স্মারক তুলে দিয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্যে আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করে ভবিষ্যতে তার পক্ষে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে সবরকম সহযোগিতার কথা ব্যক্ত করেন।

গ্রীন ডিজএ্যাবলড ফাউন্ডেশন (জিডিএফ) এর আয়োজনে, বেঙ্গল এ্যাডভাটিজিং এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠানে বিশেষ সহযোগিতায় ছিল সিলেটের সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট।

শ্রেষ্ঠ প্রতিবন্ধী কণ্ঠশিল্পী প্রতিযোগিতা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব সংস্কৃতিকর্মী রজত কান্তি গুপ্তের সঞ্চালনায় প্রতিযোগিতায় প্রধান বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা তিমির নন্দি, সংগীত শিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস, রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী অনিমেষ বিজয় চৌধুরী, কণ্ঠশিল্পী রাজিয়া সুলতানা লাভলী লস্কর।

চূড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগিতায় সেরা ২০ এর মধ্যে দুইটি বিভাগের ছয়জন প্রতিযোগী কণ্ঠ যুদ্ধে অংশ নেয়। দর্শকের মুহুমুহু করতালিতে অডিটোরিয়াম হল ছিল প্রাণবন্ত।

গ্র্যান্ড ফাইনালে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সহকারী ভারতীয় হাই কমিশনার সিলেট এর সেকেন্ড সেক্রেটারি মি. গিরিষ চন্দ্র পূজারী, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার মো. আজবাহার আলী শেখ, সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ে প্রতিযোগীদের উপহারদাতা মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম, সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ পরিচালক নিবাস রঞ্জন দাস, বেঙ্গল এডভাইটাইজিং এর সিইও মাহমুদুর রহমান, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট এর সভাপতি ও প্রতিযোগিতার উপদেষ্টা মিসফাক আহমদ চৌধুরী মিশু, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সহ-সভাপতি মোকাদ্দেস বাবুল, জিডিএফ’র চেয়ারম্যান কবির আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রধান শিক্ষক এ.এইচ. ইসরাইল আহমদ, বেঙ্গল এডভাইটাইজিং এর হেড অব অপারেশন রাশেদ খান, জিডিএফ’র কোষাধ্যক্ষ মাছুম আহমদ চৌধুরী, সদস্য প্রমেশ দত্ত, ম্যানেজার স্বপন মাহমুদ, রহমানিয়া প্রতিবন্ধী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি আতাউর রহমান খান সামছু।

অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ প্রতিবন্ধী কণ্ঠশিল্পী প্রতিযোগিতা বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক বায়েজিদ খান ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বিচারক তিমির নন্দি দর্শকের বিশেষ অনুরোধে দুটি গান পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে সেরা ২০ প্রতিযোগির প্রত্যেককে মেডেল ও সনদপত্র দেওয়া হয়। রাত সাড়ে ৯টায় গ্র্যান্ড ফাইনাল অনুষ্ঠান শেষ হয়।

পুরো অনুষ্ঠান ইশরারা ভাষায় সঞ্চালনা করেন জেমিমা আক্তার। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন, খালেদা আক্তার, নমিতা রাণী দেব, আল-আমিন আহমদ নাঈম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, প্রতিবন্ধীদের মধ্যেও সুস্থ সবল মানুষের মত প্রতিভা রয়েছে। আজকের এই অনুষ্ঠানে তাদের মেধা দেখে আমি সহ উপস্থিত দর্শকবৃন্দ মুগ্ধ হয়েছেন। প্রতিবন্ধীরা বোঝা নয়, তারা এই দেশের সম্পদ। তাদেরকে মূলস্রোতধারায় আনতে সরকারের পাশাপাশি সবাইকে কাজ করতে হবে। সরকার কর্তৃক প্রদত্ত গ্রীন ডিজএ্যাবলড ফাউন্ডেশন (জিডিএফ) অফিস ভবন তৈরি সহ সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত