বড়লেখা প্রতিনিধি

১৩ ফেব্রুয়ারি , ২০১৯ ২১:২৭

বড়লেখা থেকে চুরি হওয়া অটোরিকশা ছাতকে উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৩

মৌলভীবাজারের বড়লেখা থেকে চুরি হওয়া সিএনজি চালিত অটোরিকশা সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে উদ্ধার করেছে বড়লেখা থানা পুলিশ। এসময় অটোরিকশাটি চুরির সাথে জড়িত চোর চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের ২দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

এর আগে সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ভোররাতে বড়লেখা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিন্টু চৌধুরী ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) তরুণ মজুমদার প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার ও অটোরিকশা উদ্ধার করেন বলে বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমকে জানান বড়লেখা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিন্টু।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের তারাদরম গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে বাবুল আহমদ (৩৫), পূর্ব চন্ডিনগর গ্রামের মৃত আজই মিয়ার ছেলে আব্দুল হান্নান (৩৪) ও সিলেট জেলার জালালাবাদ থানার মৃত উস্তার আলীর ছেলে মাছুম আহমদ (৩৫)। গত ২৬ জানুয়ারি অটোরিকশাটি চুরি করা হয়েছিল।

থানা পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ জানুয়ারি রাতে মামলার এজাহার নামীয় পলাতক আসামি মুহিবুর রহমানসহ কয়েকজন চোর বড়লেখা পৌর শহরের উত্তর চৌমুহনী এলাকা থেকে যাত্রী বেশে শ্রমিক নেতা রফিক উদ্দিনের সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠেন। উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের তারাদরম এলাকায় চালককে মারধর করে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান।

পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে চালককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। চালক মুহিবুর রহমানকে চেনে ফেলায় সে তার নাম গাড়ির মালিককে বলে। স্থানীয়ভাবে সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হলেও উদ্ধার হয়নি। এরপর অনেক ৪ ফেব্রুয়ারি শ্রমিক নেতা রফিক উদ্দিন বাদী হয়ে উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের তারাদরম গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে বাবুল আহমদ (৩৫), তার ভাই মুহিবুর রহমান (২২), মুড়াইল গ্রামের আব্দুস শুক্কুরের ছেলে সোহেল আহমদ (২২) ও তারাদরম এলাকার বেলাল আহমদের (২৬) নাম এবং কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা রেখে থানায় মামলা করেন। মামলা তদন্তের দায়িত্ব পান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিন্টু চৌধুরী।

মামলার দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি অটোরিকশাটি উদ্ধার ও চোর চক্রকে গ্রেপ্তারে নামেন। তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে চোরদের অবস্থান সনাক্ত করেন। অবস্থান সনাক্ত হওয়ার পর গত সোমবার ১১ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে প্রথমে সিলেট থেকে স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় বাবুল আহমদ গ্রেপ্তার করেন। বাবুলের দেওয়া তথ্যমতে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলা থেকে মাছুম আহমদ ও আব্দুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে মাছুম ও হান্নানের দেওয়া তথ্যমতে ছাতকের ফেরিঘাট এলাকা থেকে অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়। পরদিন ১২ ফেব্রুয়ারি ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদনসহ এই তিনজনকে বড়লেখা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে সোপর্দ করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হরিদাস কুমার শুনানি শেষে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামিদের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বৃহস্পতিবার এদের রিমান্ড শেষ হবে।

বড়লেখা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিন্টু চৌধুরী বলেন, "চুরি হওয়ার পর অটোরিকশার মালিক বিষয়টি পুলিশকে জানান। ৪ জনের নামে মামলা করেন। প্রযুক্তির সহায়তায় চোরদের অবস্থান সনাক্ত করি। পরে অভিযান চালিয়ে ৩জনকে গ্রেপ্তার করা করেছি। তাদের দেওয়া তথ্যমতে অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা সকলেই আন্ত:জেলা চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। তাদের রিমান্ডে আনা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জিজ্ঞাসাবাদে চুরি যাওয়া আরো কিছু সিএনজি চালিত অটোরিকশার তথ্য দিয়েছে। সেগুলো উদ্ধার ও ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য চোরদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।"

আপনার মন্তব্য

আলোচিত