বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীর মরদেহ দেশে আসছে আজ। রাত সাড়ে ১০ টায় তার মরদেহ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছুবে। তবে মহসিন আলীর নিজ জেলা মৌলভীবাজারে মরদেহ আসবে বুধবার দুপুরে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম জানান, ‘আজ বেলা সাড়ে তিনটায় সিঙ্গাপুরে সৈয়দ মহসীন আলীর জানাজা হবে। রাত সাড়ে ১০টায় তার মরদেহ ঢাকা এসে পৌঁছুবে।’

তিনি আরো জানান, ‘সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মরদেহ আগামীকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে। সকাল ১০টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বেলা ১১টায় হেলিকপ্টার যোগে মরদেহ নেয়া হবে মৌলভীব বাজারে। সেখানে আরেকটি জানাজার পর বাদ আছর তাকে দাফন করা হবে।’

গতকাল সোমবার ভোরে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

নিউমোনিয়া, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের সমস্যা নিয়ে ৩ সেপ্টেম্বর ভোরে বারডেম হাসপাতালে ভর্তি হন মন্ত্রী মহসিন আলী।

সেখানে তাকে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসা দেয়া হয়। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য ৫ সেপ্টেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে।

সৈয়দ মহসিন আলী ১৯৪৮ সালের ১২ ডিসেম্বর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল সড়কের ‘দর্জি মহল’ এ এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

তিনি একজন খ্যাতিমান ও অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি একইসঙ্গে সশস্ত্র যোদ্ধা ও সংগঠক। তিনি ২০১৪ খ্রিস্টাব্দের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩৭-মৌলভীবাজার-৩ আসন হতে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।

১২ জানুয়ারি, ২০১৪ সরকারের মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

১৯৭১-এ ২৩ বছর বয়সে তিনি বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি যুদ্ধকালীন সিলেট বিভাগ সি.এন.সি স্পেশাল ব্যাচের কমান্ডার হিসেবে সম্মুখযুদ্ধে নিষ্ঠার সঙ্গে নেতৃত্ব দেন।

তিনি ১৯৯৮ থেকে ২০০৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সৈয়দ মহসিন আলী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, সমাজসেবক ও জনদরদী ব্যক্তিত্ব হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। সামাজিক উন্নয়নমূলক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা ছিল। তিনি বিভিন্নভাবে তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন।