বড়লেখা প্রতিনিধি

০৫ জানুয়ারি, ২০২০ ২২:০৪

বড়লেখায় ইউএনও’র উদ্যোগে পোড়া ভিটায় উঠল নতুন ঘর

টিনের চালে রোদ পড়ে ঝলমল করছিল। নতুন ঘর। সেই ঘরটি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করছিলেন গৃহকর্ত্রী। সপ্তাহ দুই আগে আগুনে পুড়ে যায় তাদের পুরোনো ঘরটি। প্রশাসনের উদ্যোগে বানিয়ে দেওয়া হয়েছে নতুন ঘর। নতুন ঘর পেয়ে পোড়া ঘরের বেদনা কিছুটা হলেও তারা ভুলতে পেরেছেন।

ঘর পুড়ে গেলে তারা নিরাশ্রিত হয়ে পড়েন। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরানের উদ্যোগে নির্মিত নতুন ঘরটিতে তারা পেয়েছেন বসবাসের ঠাঁই। গত ১ জানুয়ারি বিকেলে উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে গেলে নাছির উদ্দিনের পরিবারের মধ্যে নতুন ঘর পাওয়ার প্রাণচাঞ্চল্য দেখা গেছে। এদিনই বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিবারের হাতে নতুন ঘরের চাবি তুলে দিয়েছেন।

নতুন ঘর পেয়ে আনন্দিত নছির উদ্দিন বলেন, ‘আগুনে সব হারিয়ে তীব্র শীতে মা-স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। অর্থ সংকটে ঘর তৈরি করা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। ইউএনও স্যার প্রথমদিন খবর পেয়ে নগদ টাকা ও কম্বল দিয়ে গেছেন। এরপর দ্রুত সময়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে ঘরটি তৈরী করার ব্যবস্থা করেন। আমার কৃতজ্ঞ।’

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার গোপালপুর গ্রামের একটি বসতঘরে আগুন লেগে আশ্রয় হারায় নছির উদ্দিনের পরিবার। পরদিন মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে তাৎক্ষণিক পরিবারটির পাশে দাঁড়ান বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরান। এসময় পরিবারটির হাতে নগদ পাঁচ হাজার টাকা ও দশটি কম্বল তুলে দেন। এরপর তাঁদের নতুন ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দু’সপ্তাহের মাথায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের “আশ্রয়ণ-২” প্রকল্পের আওতায় ‘যার জমি আছে ঘর নাই-তার নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ কর্মসূচী থেকে সেমি-পাকা ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। এরপর বুধবার (১ জানুয়ারী) বছরের প্রথমদিন পরিবারটির হাতে নতুন ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন ইউএনও মো. শামীম আল ইমরান। এসময় বড়লেখা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. উবায়েদ উল্লাহ খান, তালিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস, উপজেলা প্রাথমকি শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিজ মিঞা, একাডেমিক সুপারভাইজার মো. শাখাওয়াৎ হোসেন, সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মীর আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শামীম আল ইমরান বলেন, ‘ঘর পুড়ে নছির উদ্দিনের পরিবার আশ্রয় হারায়। পরিবারের নিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নেন নছির উদ্দিন। শীতের সময়। খুব কষ্ট হচ্ছিল তাঁদের। তাই ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প থেকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপি মহোদয়ের নির্দেশনায় উনাকে দ্রুত ঘর নির্মান করে দেওয়া হয়।’
 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত