সিলেটটুডে ডেস্ক

১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০১:৪৫

শিশু নির্যাতনকারী সেই গৃহকর্তা গ্রেপ্তার

চাঁদপুরের আট বছরের ছোট্ট শিশু জান্নাতুল ফেরদৌসকে নির্যাতনকারী গৃহকর্তা ওমর ফারুককে গাজীপুরের জয়দেবপুর এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর দেশীপাড়া এলাকা থেকে জয়দেবপুর থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার রেজাউল হাসান সাংবাদিকদের জানান, গাজীপুরে ওমর ফারুক-মনি বেগম দম্পতির বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতো ওই শিশুটি। ঈদে নতুন কাপড়-চোপড় চাওয়া এবং বাড়ি যেতে চাওয়ায় তাকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হয়।

এ ঘটনায় ওমর ফারুক, তার স্ত্রী মনি বেগম ও শিশুটিকে কাজ দিতে নিয়ে যাওয়া মোস্তফা সরদারকে আসামি করে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটির প্রতিবেশী হাইমচর এলাকার শাহজাহান ভূঁইয়া বাদী হয়ে মামলা করেন। শিশু নির্যাতন দমন আইনে হাইমচর থানায় মামলাটি করা হয়।

পরে বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুর মহানগরীর দেশীপাড়া থেকে ওমর ফারুককে গ্রেপ্তার করে। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ওমরের স্ত্রী গৃহকত্রী মনি বেগম পালিয়ে যান। তবে মনি বেগমকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি রেজাউল হাসান।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) শামছুন্নাহার জানান, নির্যাতনের ঘটনায় আগে গ্রেফতার শিশুটির খালু মোস্তফা সরদারকে নিয়ে সন্ধ্যায় গাজীপুরের জয়দেবপুর এলাকায় অভিযান চালায় চাঁদপুর পুলিশের একটি দল। গাজীপুর পুলিশের সহায়তায় সেখান থেকে ওমর ফারুককে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ওমরের স্ত্রী গৃহকর্ত্রী মনি বেগম পালিয়ে যান। তাকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, প্রায় এক বছর আগে গাজীপুরে ওমর ফারুক-মনি বেগম দম্পতির বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেয় জান্নাতুল ফেরদৌস। তাকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করে এই দম্পতি।

হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতর শিশু জান্নাতুল ফেরদৌস নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে বলে, 'আমাকে খাইতে দেয় না, কতায় কতায় (কথায়) তারা মারচে (মারছে)।'

জান্নাতের মা ফিরোজা বেগম জানান, এক বছর আগে আমার মেয়েকে নিয়ে গেছে। এরপর তার সঙ্গে আর কথা বলতে পারিনি। এর মধ্যে আমার মাইয়ার কী হাল কইরা দিয়া গেলো ওরা। এমনভাবে নির্যাতন করছে, পশু-পাখিরেও এভাবে মারে না মানুষ। আমি এ নির্যাতনের সঠিক বিচার চাই।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আসিবুল আহসান চৌধুরী জানান, একটি ক্ষত শুকিয়েছে তো আরেকটি দগদগে ক্ষতের যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছে সে। এছাড়া কিছুটা মানসিক সমস্যাও দেখা দিয়েছে তার। সুস্থ হতে অনেক সময় লাগবে।

এদিকে বিকালে পুলিশ সুপারের নির্দেশে নির্যাতনের শিকার শিশুকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত