সিলেটটুডে ডেস্ক

২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ২০:৪৫

মুক্তিযুদ্ধ স্মরণে ৭১ ফুট দীর্ঘ দুর্গা প্রতিমা

মুক্তিযুদ্ধ স্মরণে ৭১ ফুট দীর্ঘ দুর্গা প্রতিমা নির্মাণ করছেন বিজয়া সর্বজনীন দুর্গা মন্দির। নোয়াখালীর চৌমুহনীতে ধর্মীয় আবেগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।
 
চমক জাগানো প্রতিমা দর্শনে প্রতি বছর সারাদেশ থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এখানে আসেন।  তার প্রমাণ বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র চৌমুহনী বাজার। শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীরা আসেন অন্য ধর্মের দর্শনার্থীরাও।
 
বিজয়া সর্বজনীন দুর্গা মন্দির ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দেশের সর্ববৃহৎ এই দুর্গা প্রতিমা নির্মাণের কাজ চলছে। প্রতিমার উচ্চতা হচ্ছে ৭১ ফুট। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ স্মরণে প্রতিমার এই উচ্চতা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান আয়োজক কমিটি। পাশাপাশি ভক্ত ও দর্শনার্থীদের চমক দিতেই পূজা উদযাপন কমিটির এবারের এ আয়োজন।
 
বিশাল এই প্রতিমার খবর বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে দেশ-বিদেশে। এর আয়তন ইতিমধ্যে সবার মাঝে কৌতূহল সৃষ্টি করেছে।

পূজা উপলক্ষে চৌমুহনী কলেজ রোডের রামেন্দ্র সাহার বাড়ির সামনে তৈরি করা হয়েছে বিশাল মণ্ডপ।

এখানে পূজা দেয়া নিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মাঝেও সাড়া পড়ে গেছে। যে কারণে পূজার সময় মহামিলন ঘটবে দর্শনার্থীদের- এমনটাই প্রত্যাশা আয়োজক কমিটির।

এই দীর্ঘ প্রতিমা নির্মাণ করছেন শরীয়তপুর জেলা থেকে আসা প্রতিমা কারিগর অমল কৃষ্ণ পাল। গত ৪০ বছর ধরে তিনি প্রতিমা তৈরির কাজ করলেও এবারই প্রথম তিনি এই বিশাল আকারের প্রতিমা তৈরি করছেন বলে জানান।
 
অমল কৃষ্ণ পাল আরো জানান, ১৯৭৪ সালে ছাত্রজীবন থেকে তিনি প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করলেও এটি তার জীবনের সবচেয়ে বড় ও শ্রেষ্ঠ প্রতিমা। এর আগে বাংলাদেশের কোথাও এতো বড় দুর্গা প্রতিমা তৈরি করা হয়নি। ১২ জন সহযোগী ও কারিগর নিয়ে গত আড়াই মাস ধরে তিনি এ কাজ করছেন।
 
বিজয়া সর্বজনীন দুর্গা মন্দির কোষাধ্যক্ষ রনি সাহা বলেন, গত বছর পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কে ৮৭ ফুট দীর্ঘ প্রতিমা তৈরি করা হয়। আমরাও বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সম্মান রেখে এই প্রথম ৭১ ফুট দীর্ঘ প্রতিমা তৈরি করছি।
 
তিনি আরো বলেন, ‍মুক্তিযুদ্ধকে স্মরণের পাশাপাশি বিশাল এই প্রতিমা তৈরি করার মধ্যে দিয়ে বিশ্ববাসীকে আমরা জানাতে চাই, বাংলাদেশ সম্প্রীতির দেশ। এ ছাড়াও প্রতি বছর বিজয়া সর্বজনীন দুর্গা মন্দিরের পক্ষ থেকে ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা থাকে বলে জানান তিনি।
 
মন্দিরের সিনিয়র সহ-সভাপতি শ্রী শান্তনু সাহা জানান, ৭১ ফুট দীর্ঘ প্রতিমা তৈরিতে বাজেট ধরা হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। প্রতিমা তৈরি থেকে শুরু করে মণ্ডপ এবং লাইটিংসহ খরচ অর্ধ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
 
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি তপন চন্দ্র মজুমদার আশা প্রকাশ করে বলেন, দুর্গোৎসব উপলক্ষে আমাদের এই বিশাল আয়োজন শুধু নোয়াখালীতে নয় সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক মানুষ এটি দেখার জন্য আসবেন।

তিনি পূজার শেষ দিন পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তায় প্রশাসনের একান্ত সহযোগিতা কামনা করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত