সিলেটটুডে ডেস্ক

১৫ নভেম্বর, ২০১৬ ১৪:১৭

চট্টগ্রামে গণপরিবহনের শৃংখলা আনতে প্রশাসনের নিরবতায় ক্যাব এর ক্ষোভ

চট্টগ্রামে গণপরিবহনের শৃংখলা আনতে প্রশাসনের রহস্যজনক নিরবতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থসংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটি। 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা উল্লেখ করেন, গণ পরিবহন বিশেষ করে সিএনজি অটো রিক্সায় মিটারে যাত্রী পরিবহন, লক্কর যক্ক্র বাসের পরিবর্তে আধুনিক গণপরিবহন, ভাড়া নৈরাজ্যর দূরীকরনে বিগত ১৭ সেপ্টেম্বর মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, চট্টগ্রামের মেয়র, সড়ক পরিবহন মন্ত্রনালয়, পুলিশ, বিআরটিএ প্রতিনিধি এবং পরবর্তীতে ২২ তারিখে সিটি মেয়রের নেতৃত্বে ২টি সভা অনুষ্ঠিত হলেও সিএনজি মালিক, চালক, বাস মালিক ও শ্রমিকদের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য ও সমিতির নামে চাঁদা আদায়ের বানিজ্যে হুমকির কারনে কোন সিদ্ধান্ত গৃহিত হতে পারেনি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আরো বলা হয়, মন্ত্রীর উপস্থিতিতে একে অপরের উপর দোষ চাপিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহনে প্রশাসনকে বিঢম্বনা ফেলে দেবার মতো ঘটনা করে দীর্ঘ ২ মাসের মতো সময় অতিক্রান্ত হতে চললেও অদ্যবদি কোন সুনিদিষ্ঠ ঘোষনা না আসায় চট্টগ্রামে সিএনজি গুলির মিটারে না চলা, ভাড়া নিয়ে চরম নৈরাজ্য এবং লক্ক্র যক্ক্র বাসগুলি ভাড়া নৈরাজ্যসহ আধুনিক বাস নামাতে বাস মালিকদের বিরোধীতাসহ যাত্রীদের জিম্মি করে গণপরিবহনে চরম বিশৃংখলা থাকায় পুরো নগর যেন যানজট ও স্থবির নগরজীবন হলেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বিশেষ করে ট্রাফিক বিভাগ, সিটিকর্পোরেশন, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআরটিএর রহস্যজনক ভুমিকায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ অবিলম্বে গণপরিবহনে নৈরাজ্য সৃষ্ঠিকারীদের বিরুদ্ধে কঠিন ও দৃষ্ঠান্তমুলক শাস্তির পাশাপাশি আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থায় আশু উদ্যোগ গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থসংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটি।

চট্টগ্রামে গণপরিবহনে বেহাল দশা, পুরো নগরী যানজটে আক্রান্ত ও ভাড়া নিয়ে চরম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে এক বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনের নিরবতার কারনে ১৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সড়ক পরিবহন মন্ত্রীর উপস্থিতিতে এক গ্রুপ অন্য গ্রুপকে আক্রমন করে বক্তব্য প্রদান, প্রবীন শ্রমিক নেতা মৃণাল চৌধুরীর উপর আক্রমনাত্মক বক্তব্য প্রদান করে সভায় বিশৃংখলা সৃষ্ঠিকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় গণপরিবহনের সাথে যুক্তরা আরো বেপরোয়া হয়ে আছে। তারা সরকারের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে মন্ত্রীকে পর্যন্ত সমীহ করতে চাচ্ছে না। গণপরিবহনের মালিক ও শ্রমিকরা পরম্পর বিরোধী দোষারুপ ও একগ্রুপ অন্যগ্রুপকে গায়েল করে বক্তব্য প্রদান করে জনগনকে জিম্মি করে জনগনের পকেট কাটছে। ফলে রাস্তায় বের হওয়া অনেকটা অস্বস্তিদায়ক, অনিরাপদ ও প্রচুর শ্রমঘন ঘন্টা রাস্তায় নষ্ঠ হচ্ছে। যানজটে পুরো জনজীবন অচল। গণপরিহন গুলি লক্ক্র যক্কর বলে ব্যক্তিগত গাড়ীর সংখ্যাও দিনদিন বাড়ছে।

বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন যানজট ও দুঘর্টনার কারন শুধুমাত্র ফিটনেসবিহীন গাড়ী নয়, লাইসেন্সবিহীন চালক ও ট্রাফিক বিভাগের অব্যবস্থাপনা এবং এখাতে মালিক ও শ্রমিকদের দৌরাত্ত্য ও চাঁদাবাজি। ট্রাফিক ও বিআরটিএ এর গাফলতি, অনিয়ম, হয়রানি ও চাঁদাবাজির কারনে পরিবহন সেক্টরের সাথে জড়িত মালিক ও শ্রমিকরা বেপরোয়া হয়ে আছে। তারা কোন আইন-নিয়ম কানুন মানতে চায় না। যার কারনে দুর্ঘটনা ঘটলেও মোটরযান আইন সংশোধন করতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ঠি করছে এ খাতের লোকজন। মিটারে চলা, যাত্রীদের ইচ্ছামতো স্থানে না যাওয়ার, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে ট্রাফিক বিভাগ বা বিআরটিএ এ পর্যন্ত কোন আইনই বাস্তবায়ন করতে পারে নি।

নেতৃব্ন্দৃ আরো বলেন ভোক্তাদের জাতীয় প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে ক্যাব যাত্রী ও ভোক্তা স্বার্থ সংস্লিষ্ঠ সকল মন্ত্রনালয় ও বিভাগে প্রতিনিধিত্ব করলেও আঞ্চলিক পরিবহন কমিটিতে এর কোন অস্থিত্বও নেই। অন্যদিকে বিআরটিএ, ট্রাফিক কর্তৃপক্ষকে বারংবার তাগাদা দেবার পরও তারা যাত্রী/ভোক্তাদের ভোগান্তি, হয়রানি ও অনিয়মের কথা শুনার সময় পাচ্ছে না। যার কারনে বিআরটিএ গাড়ী চালক, মালিক ও ভোক্তাদের কাছে কাংখিত সেবা নিশ্চিত পৌঁছাতে পারেনি। তাই অবিলম্বে বিআরটিএ ও ট্রাফিক বিভাগে হয়রানি, ভোগান্তি ও অনিয়ম রোধে তাক্ষনিক প্রতিকারের ডিজিটেল গ্রাহক সেবা কেন্দ্র, বিআরটিএ এর অভ্যন্তরে লাইসেন্স ও ফিটনেস প্রদানে অনিয়ম, জটিলতা বন্ধে কার্যকর নজরদারী প্রতিষ্ঠা, লাইসেন্স প্রদান প্রক্রিয়া সহজলভ্য করা, গ্রাহক সেবার অনিয়ম রোধে তাৎক্ষনিক গ্রাহক সেবা কেন্দ্র/হেলপ লাইন চালু, হয়রানি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন, সিদ্ধান্ত প্রদানে সক্ষম ও যোগ্য প্রতিনিধিকে নিয়ে অন্তত মাসে ১দিন গণশুনানীর আয়োজন করে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহন, বিআরটিএ ও ট্রাফিক বিভাগের কার্যক্রম জনসমক্ষে প্রকাশ এবং আঞ্চলিক পরিবহন কমিটিকে সত্যিকার অর্থে একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিনত করার জন্য সত্যিকারের যাত্রী/ভোক্তা প্রতিনিধ অর্ন্তভ্ক্তু করা, সড়ক পরিবহন সেবা ও ব্যবস্থাপনায় নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে ভোক্তা প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবী জানান।

বিবৃতিতে যারা স্বাক্ষর করেন তারা হলেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসসিন সুলতানা পারু, সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত