প্রান্ত রনি, রাঙামাটি

১৯ নভেম্বর, ২০১৬ ১৮:৩০

পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি অধিগ্রহণ করলে ৫০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে : প্রধানমন্ত্রী

পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার ভূমি অধিগ্রহণ করলে ৫০ ভাগ ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ব্যাপারে শিগগির কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী। শনিবার দুপুরে অন্যান্য জেলার সঙ্গে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত ভিডিও কনফারেন্সে রাঙামাটি জেলাবাসীর পক্ষে উত্থাপিত দাবিতে প্রধানমন্ত্রী এ আশ্বাস দিয়েছেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সমাবেশে অংশ নেন, রাঙামাটির সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, সংরক্ষিত মহিলা এমপি ফিরোজা বেগম চিনু, সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, জেলা প্রশাসক মো. মানজারুল মান্নান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান তরুণ কান্তি ঘোষ, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড.প্রদানেন্দু চাকমা, রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ টিপু সুলতান, রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক, সামাজিক নেতা, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণির মানুষ।

এ সময় রাঙামাটির বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণির মানুষের মতামত শোনেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে আগে মোবাইল টেলিফোনের নেটওয়ার্ক ছিল না। আমরা ক্ষমতায় গিয়ে তিন পার্বত্য জেলায় এর নেটওয়ার্ক চালু করেছি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে আয়োজিত সমাবেশ থেকে মৌজাপ্রধান হেডম্যানদের পক্ষে কেরোল চাকমা বলেন, বর্তমানে পার্বত্য তিনটি জেলায় সরকারের যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করা হলে তার ক্ষতিপূরণ দেয়া হয় মাত্র শতকরা ১৫ ভাগ। অথচ দেশের অন্য স্থানে এক্ষেত্রে ৫০ ভাগ ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পার্বত্য তিন জেলাতেও ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ৫০ ভাগ ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।

এ প্রসঙ্গে জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে শিগগির কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে। আশা করি এ ব্যবস্থা নিতে পরব। এছাড়া স্থানীয় জনগণের পক্ষে রাঙামাটিতে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শিক্ষক স্বল্পতার কথা তোলা হলে তাৎক্ষণিক রাঙামাটিসহ সারা দেশে বিষয়টির নিরসন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য শিক্ষামন্ত্রীকে নির্দেশ দেন প্রধান শেখ হাসিনা। এ সময় রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজেসহ খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে একটি করে কলেজ বাস দেয়ার ঘোষণাও দেন প্রধানমন্ত্রী।

কনফারেন্সে সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দীপংকর তালুকদার বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিতে উদ্বিগ্ন এ অঞ্চলের মানুষ। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি নির্মূল করা না গেলে এখানে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে না। এজন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে দ্রুত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং অস্ত্রধারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনের আওতায় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান দীপংকর। এছাড়া কাপ্তাই লেকের তিন নদী কাচালং, কর্ণফুলি ও চেঙ্গি নদীর নাব্যতা আনতে এসব নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং এবং কর্ণফুলি পেপার মিলের উন্নয়নে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক মো. মানজারুল মান্নানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে কনফারেন্সে একজন শিক্ষার্থী ও একজন কাঠমিস্ত্রীর মতামতও শোনেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে কনফারেন্সে উন্নয়ন কর্মকান্ডের সংক্ষিপ্ত তথ্য দিয়ে জানানো হয়, রাঙামাটি জেলায় মোট ৬৫ উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। এগুলোর মধ্যে ৩৮টি বাস্তবায়িত হয়েছে, ২৭টি বাস্তবায়নাধীন। আগে রাঙামাটির সবগুলো উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। ১০ উপজেলার সবকটিতেই বিদ্যুতায়নের কাজ চলছে। এছাড়া মৎস্যচাষ ও উৎপাদনে একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত