সিলেটটুডে ডেস্ক

২৯ এপ্রিল, ২০১৭ ১৭:৫১

ধর্ষণের মেডিকেল রিপোর্ট প্রদানে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি পাহাড়ি নারী সংগঠনের

ধর্ষণের মেডিকেল পরীক্ষার রিপোর্ট প্রদানে সরকারের গোপন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে সমাবেশ করেছে খাগড়াছড়ি সদরের ৫ নারী সংগঠন।

সকল প্রকার নারী নির্যাতন ও খুনের বিচার, রমেল চাকমার খুনি সেনা কর্মকর্তাদের বিচার এবং ধর্ষণের মেডিকেল টেস্ট রিপোর্ট প্রদানে পার্বত্য চট্টগ্রামে জারিকৃত সরকারি নিষেধাজ্ঞা বাতিলের দাবিতে শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) খাগড়াছড়ি সদর ইউপিডিএফ কার্যালয়ের সামনের চৌরাস্তা মোড়ে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

পাঁচ নারী সংগঠন হলো হিল উইমেনস ফেডারেশন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, সাজেক নারী সমাজ, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি ও নারী আত্মরক্ষা কমিটি।

হিল উইমেনস ফেডারেশন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক চৈতালি চাকমার সঞ্চালনায় ও কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নিরুপা চাকমার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ইউপিডিএফ এর জেলা সংগঠক মিঠুন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জিকো ত্রিপুরা, পিসিপি কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি বিপুল চাকমা ও পার্বত্য নারী সংঘের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কাজলী ত্রিপুরা।

সমাবেশে হিল উইমেনস ফেডারেশনের সভাপতি নিরূপা চাকমা বলেন, "আজকের এই সমাবেশ ভণ্ডুল করে দেওয়ার জন্য সেনাবাহিনী বহু চেষ্টা চালিয়েছে। সাজেক, দীঘিনালা, গুইমারাতে সেনাবাহিনী বিভিন্ন কায়দা-কৌশলে বাধা প্রদান করার চেষ্টা চালিয়েছে। হুমকি দিয়েছে এবং ভয়-ভীতি দেখিয়েছে। পানছড়ি, মহালছড়ি থেকে আসা আমাদের নেতাকর্মীদের গাড়ি আটকে দেয়া হয়েছে। সকাল থেকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রেপ্তারের হুমকি দিয়ে ভয় দেখানো হয়েছে। সমাবেশ না করার জন্য চাপ দেয়া হয়েছে।"

সমাবেশ থেকে অভিযোগ করা হয়, সমতলে নারী ধর্ষণ ও হত্যার কয়েকটি বিচার ও রায় কার্যকর হতে দেখা গেলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে এ যাবত যতগুলো অপহরণ, ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটেছে, তার বিচার তো দূরে থাক, কোন সঠিক ও সুষ্ঠু তদন্ত পর্যন্ত হয়নি। সে কারণে পাহাড়ি নারীদেরকে ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যা অধিকমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু তাই নয়, সবচেয়ে বড় উদ্বেগের কারণ হলো ধর্ষণের শিকার পাহাড়ি নারীদের মেডিকেল রিপোর্ট প্রদানে সরকারের গোপন নির্দেশনা রয়েছে। উক্ত নির্দেশনার ফলে আজ পর্যন্ত কোন পাহাড়ি নারী ভিকটিম এর ক্ষেত্রে সঠিক মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।

সমাবেশ থেকে বলা হয়, খাগড়াছড়িতে কয়েকমাস আগে ইতি চাকমা নামে একজন কলেজছাত্রীকে খুন করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড সমাজে নারীদের নিরাপত্তাহীনতার কথা চোখের সামনে তুলে ধরে। এই হত্যায় যে-ই জড়িত থাকুক, তাকে বা তাদের খুঁজে বের করতে হবে এবং শাস্তি দিতে হবে। তবে এজন্য কোনো নিরপরাধী বা হত্যার সাথে জড়িত নয়, এমন কাউকে হয়রানি করা চলবে না।

সমাবেশ থেকে গোপনে জারিকৃত ধর্ষণের মেডিকেল রিপোর্ট প্রদানে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানানো হয় এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও পিসিপি নেতা রমেল চাকমা হত্যার সাথে জড়িত সেনাসদস্যের বিচারের দাবি জানানো হয়।

সমাবেশ শেষে শহরে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি সমাবেশ স্থল থেকে শুরু হয়ে জেলা পরিষদ ও রেড স্কয়ার হয়ে চেঙ্গী স্কয়ার ঘুরে পুনরায় সমাবেশস্থলে এসে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত