সিলেটটুডে ডেস্ক

২৮ নভেম্বর, ২০১৮ ২৩:২১

বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ২৫

মনোনয়নপত্র দাখিল নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীতে।

বুধবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা সদর বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষে দুই পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১৫ বিএনপি নেতাকর্মীকে আটক করেছে। মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী মিজানুর রহমান সিনহা উপজেলা পরিষদে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী আব্দুস সালাম আজাদের সমর্থকদের সঙ্গে এ সংঘর্ষ বাধে।

এদিকে, বরিশাল-৫ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে সাবেক ছাত্রদল নেতারা মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। এ ছাড়া পটুয়াখালী-১ আসনের বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তার বিরুদ্ধে শহরে ঝাড়ুমিছিল ও কুশপুতুল দাহ করেছে এলাকাবাসী।

পুলিশ ও স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, মঙ্গলবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সিনহা ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদকে মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়। মনোনয়নবঞ্চিত জেলা বিএনপির সহ সভাপতি আলী আজগর রিপন মল্লিক আব্দুস সালাম আজাদকে সমর্থন দেন। বুধবার সকাল ১১টার দিকে আব্দুস সালাম আজাদের পক্ষে টঙ্গিবাড়ী সদর বাজারে অবস্থান করছিল তার সমর্থকরা। দুপুর ১২টার দিকে দলের অপর সম্ভাব্য প্রার্থী মিজানুর রহমান সিনহা মনোনয়নপত্র দাখিল করতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেলে তার গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে আজাদের সমর্থকরা। এতে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বেধে যায়। দুই পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হয়। ঘটনাস্থলে কয়েকটি ককটেলও বিস্ম্ফোরিত হয়। এ সময় ল্যান্ড ক্রুজার মডেলের একটি গাড়ি ভাংচুর করা হয়। পরে পুলিশ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আক্তার মোল্লা, বেতকা ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রিগ্যান সিকদারসহ দলের ১৫ নেতাকর্মীকে আটক করে।

টঙ্গিবাড়ী থানার ওসি শাহ আওলাদ হোসেন জানান, হামলার ঘটনায় বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম আজাদের পক্ষে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আটক শাহাদাত, আমির হোসেন, বিপ্লব, জনি, এরশাদ, মিজানুর, শহীদসহ ১৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এদিকে, বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সাবেক ছাত্রদল নেতাদের মধ্যে দুই দফায় মারামারি হয়। জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাইদ খোকন জানান, বরিশাল-৫ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ারের মনোনয়নপত্র জমা দিতে অন্যদের সঙ্গে তিনিও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান। কার্যালয়ের দোতলায় প্রথমে জেলা যুবদল সম্পাদক মাসুদ হাসান মামুনের নেতৃত্বে তার ওপর হামলা হয়। মনোনয়নপত্র জমা শেষে মজিবর রহমান সরোয়ার গাড়িতে ওঠার সময় মামুনের নেতৃত্বে দ্বিতীয় দফা হামলা চালানো হয়।

এ ঘটনায় তিনি জেলা যুবদলের সম্পাদক মাসুদ হাসান মামুনসহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।

বিএনপি প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা : বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল আলম রাজু অভিযোগ করেছেন, বরিশাল-৪ আসনে বিএনপি প্রার্থী মেজবাউদ্দিন ফরহাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে তারা মেহেন্দিগঞ্জের ইউএনও ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে বিকেলে উপজেলার পাতারহাট পুলপাড় ও লঞ্চঘাটে তাদের ওপর হামলা চালায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে ফরহাদের ভাই কাজি জহিরউদ্দিন নিশাত, ছাত্রদল নেতা মাকসুদুর রহমান, মুরাদ খান, সাদ্দাম হোসেনসহ সাতজন আহত হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খোরশেদ আলম ভুলু এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে নিজেরা মারামারি করেছে।

জাপা মহাসচিব ও পটুয়াখালী-১ আসনের বর্তমান এমপি এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে শহরে ঝাড়ূমিছিল ও তার কুশপুতুল দাহ করেছে কয়েক হাজার নারী-পুরুষ।

বুধবার সকাল ১১টার দিকে শহরের থানাপাড়া সড়ক থেকে সাধারণ জনগণের ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে লঞ্চঘাট চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় মিছিলকারীরা রুহুল আমিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেয়। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল দলের নেতাকর্মীরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত