সিলেটটুডে ডেস্ক

৩০ মে, ২০২০ ২৩:৪২

৬১ লাশ দাফনকারী কাউন্সিলর খোরশেদ করোনা আক্রান্ত

করোনা সংক্রমণের সময়ে ৬১ লাশ দাফনকারী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। শনিবার তার করোনা পজিটিভ আসে। এর আগে থেকেই তার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে রয়েছেন।

কাউন্সিলর খোরশেদ জানান, আমার দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। আমি করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ৬১টি লাশ দাফন করেছি। এখন নিজ বাড়িতেই আইসোলেশনে চলে গেছি। আমি নিজেই চিকিৎসা নেব বাড়িতে থেকে। সবার কাছে আমার সুস্থতার জন্য দোয়া চাইছি।

তিনি জানান, আমি আক্রান্ত হলেও আমার সব কার্যক্রম চলবে। আমার টিম সক্রিয় থাকবে, আমার ফোন চালু থাকবে। আমি যতদিন বেঁচে আছি এক বিন্দুও নড়ব না।

বিজ্ঞাপন

গত ৮ এপ্রিল শহরের জামতলা এলাকায় এমন নাম আফতাবউদ্দিন (৬০) নামে বৃদ্ধের লাশ পড়েছিল বাড়িতে। মৃত্যুর পর লাশ ফেলে পরিবারের লোকজন অন্যত্র চলে যায়। খবর পেয়ে ছুটে আসেন একজন। এই ওয়ার্ডেরই কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। মৃত্যুভয়কে তুচ্ছ করে মৃতের লাশ তুলে নেন কাঁধে। মকাসদাইর কবরস্থানে নিয়ে গোসল দেওয়ার পর তিন সহযোগীকে নিয়ে জানাজা পড়েন। এরপর নিজেরাই কবর খুঁড়ে দাফন করেন।

শুধু আফতাবউদ্দিন নয়, নিজ ওয়ার্ডে এবং নগরীর বিভিন্ন এলাকায় করোনায় আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া এমন ৬১ জনকে দাফন করেছেন তিনি। সনাতন ধর্মের মারা যাওয়া কয়েকজনের মুখাগ্নিও করেছেন নিজহাতে।

করোনার সংক্রমণের শুরু থেকেই মানুষকে শুধু সচেতন করতে কাজ শুরু করেন তিনি। নিজ উদ্যোগে স্ত্রী-সন্তান, স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে রাতের পর রাত জেগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করেছেন, বিলি করেছেন এবং এর কৌশল অন্যদের শিখিয়েছেন। নিজ ওয়ার্ডের অনেক জায়গায় মানুষের জন্য হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেছেন। খাবার নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে।

এরই মধ্যে ওয়ার্ডবাসীকে কমমূল্যে খাদ্যদ্রব্য বিতরণ, সরকারি ও নিজস্ব সহায়তার পাশাপাশি করোনায় সুস্থ হওয়াদের প্লাজমা সংগ্রহেও কাজ করছিলেন তিনি। এ ছাড়া তার মেডিকেল টিমও ওয়ার্ডবাসীকে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আসছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত