এস এম নাদিম মাহমুদ

২৬ ফেব্রুয়ারি , ২০২১ ১২:৩৭

মুশতাকের মৃত্যু স্বাভাবিক হলেও রাষ্ট্রের অনুতপ্ত হওয়া উচিত

মুশতাক আহমেদ

ভদ্রলোকের নাম মুশতাক আহমেদ। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় কাঁধে নিয়ে জেলে মারা গেছেন। আপনার হাতে যদি কিছু সময় থাকে, তাহলে তার ফেসবুক আইডি থেকে ঘুরে আসুন। ২০১৯ থেকে ২০২০ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত নিজের ছবি ব্যতিত তার কোনে পোস্টেই লাইকের সংখ্যা ৪০ পার হয়নি। অধিকাংশ পোস্টই অন্যের ওয়াল থেকে শেয়ার করা।

আমি জানি না, তার ফেসবুকে কতজন ইনগেইজড। কিন্তু ফেসবুকে এমন লেখালেখির কারণে তার কাঁধে ডিএসএ ঝুলিয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগ সত্যি বেদনাদায়ক। তার এই মৃত্যুর দায় সরকার কখনোই এড়াতে পারে না। বরং মুশতাকদের চেয়ে শত শত পেইজ থেকে প্রতিদিন গুজব ছড়াচ্ছে। ভ্যাকসিনের সূত্র দিচ্ছে, দাঁড়ি গোঁফ গজিয়ে ফেলছে। মাইকে গুজব ছড়িয়ে পিটিয়ে মানুষ মারছে। বরং পত্রিকাগুলোর ফেসবুক পেইজগুলোতে গিয়ে দেখেন কী ধরনের মন্তব্য ছুড়ছে।

মুশতাকের মৃত্যু যদি স্বাভাবিকও হয়, এরপরও রাষ্ট্র এই মৃত্যুতে অনুতপ্ত হওয়া উচিত। ডিজিটাল আইনের অপব্যবহার শুরু থেকে হয়ে আসছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত। গণতান্ত্রিক সরকারকে সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতা থাকা বাঞ্ছনীয়। সব পথ বন্ধ করলে গণতন্ত্রের শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হবে এটাই স্বাভাবিক।

সবাই সরকারের ম্যান নয়, কিছু কিছু মানুষ কেবল বাংলাদেশের ম্যান। তাদেরকে কথা বলার সুযোগ করে না দিলে, সমালোচনা করার সুযোগ না দিলে নিজেদের ভুল-ভ্রান্তি বুঝা যায় না। সংশোধনের সুযোগ থাকে না। কথা বলতে দিন, সমালোচনা সহ্য করুন, প্রয়োজন হলে নিজেরা সেইসব সমালোচনার জবাব দিন কাজে।

ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আমরা যদি না হতে পারি, তাহলে কখনোই আমি অন্তত নিজেকে সভ্য নাগরিক মনে করি না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত