হাসান মোরশেদ

২১ মার্চ, ২০২৩ ০০:৫৭

অনিমেষ রায়ের কথাটাই আইডেন্টিটি ক্রাইসিসের সরল সমাধান

কোক স্টুডিও-বাংলার নাহুবো গানে অনিমেষ রায়। ছবি: সংগৃহীত

গায়ক অনিমেষ রায় বলেছেন—তিনি বাংলাদেশি, বাঙালি এবং সম্প্রদায়গত ভাবে হাজং। অনেকে বেচারাকে ধুয়ে দিচ্ছে—হাজং আবার বাঙালি হয় কেমনে? বা নিজেকে বাঙালি দাবি করে তিনি নিজের হাজং পরিচয়কে অস্বীকার করলেন—এমন দোষারোপও হচ্ছে।

অথচ অনিমেষ যা লিখেছেন একদম ঠিক। কতোটুকু জেনে লিখেছেন নিশ্চিত নই, কিন্তু তিনি যা লিখেছেন সেটাই আধুনিক সময়ে আইডেন্টিটি ক্রাইসিসের সরল সমাধান।

অনিমেষের কথাটা যদি আমি একটু ঘুরিয়ে বলি—আমি বাংলাদেশি। একই সাথে আমি বাঙালি এবং হাজং, আমি বাঙালি এবং গারো, আমি বাঙালি এবং সাঁওতাল, আমি বাঙালি এবং পাঠান তুর্ক পারসিয়ান। আপত্তি আছে?

বাঙালি কে? বাংলার মানুষ যে। বাঙালি কোন গোত্র বা সম্প্রদায় না। বাংলা ভূখণ্ডে নানা সময়ে আগত মানুষদের সম্মিলনে যে জনগোষ্ঠী গড়ে উঠেছে সেই বাঙালি।

আমার বাঙালিত্বে হাজং, গারো, খাসিয়া, সাঁওতাল, পাঠান, তুর্ক, পারসিয়ান নাই—এই নিশ্চয়তা ঐতিহাসিকভাবে কেউ দিতে পারবেন?

বাংলার ভাষা ও সংস্কৃতির যদি কোন শক্তি থাকে সেটা তার বহুমাত্রিকতা এবং ধারণক্ষমতা—মানতে হবে তো। এভাবেই সম্প্রদায়ের সংকীর্ণতা থেকে জাতির বৃহত্ব গড়ে উঠে। বাঙালিত্বকে সম্প্রদায়ের সংকীর্ণতায় আটকাতে গেলে বিপদ।

পরিচয় খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। কিন্তু পরিচয়ের জটিলতা যারা বুঝতে পারেনা তারা পরিচয়ের রাজনীতির জ্বালানি অথবা শিকার হয়।

  • হাসান মোরশেদ: লেখক।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত